নানা আতংক আর শংকা’য় বৈসাবি উৎসব চলছে গুইমারায়
স্টাফ রিপোর্টার: বৈসাবি পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম প্রাণের উৎসব হিসেবে ইতিমধ্যে দেশে বিদেশে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জণ করলেও গত কয়েকদিন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিশেষ করে রাঙ্গামাটি’র নানিয়ারচর ও খাগড়াছড়ি’র পানছড়িতে আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে গোলাগুলি ও ভাতৃঘাতি সংঘাত ও সংঘর্ষে হতাহত ও গুইমারাতে গত ১১এপ্রিল গভীর রাতে উপজেলার সাংগুলিপাড়া এলাকা থেকে সিব্রাম ত্রিপুরার ছেলে নকুল কুমার ত্রিপুরা(৪২) অপহরণের ঘটনায় নানা উৎকন্ঠা ও ভয়-ভীতির মধ্য দিয়ে বৈসাবি পালন করছে গুইমারাবাসী।
জানা যায়, ১১এপ্রিল রাতে উপজেলার বরইতলী মৌজাস্থ সাইংগুলিপাড়া এলাকা থেকে নিজ ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় ৪ সন্তানের জনক নকুল ত্রিপুরাকে কয়েকজন দুবৃর্ত্ত ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায় বলে জানান তার বাবা সিব্রাম ত্রিপুরা। এখনও তার কোন কোন খোঁজ পায়নি স্বজনেরা। গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান বিষয়টি তিনি শুনেছেন কিন্তু এব্যাপারে কেউ থানায় কোন লিখিত অভিযোগ বা মৌখিক অভিযোগ করেনি। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান চাইথোয়াই চৌধুরী নকুল কুমার ত্রিপুরাকে উদ্ধারের বিষয়ে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানান।
এদিকে বৈসাবির শুরুতে বিভিন্ন দলের মধ্যে পারস্পারিক দন্ধ, খুন, অপহরণ, বন্দুকযুদ্ধে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পাহাড়। গুইমারাতে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় ঘরে দেখা যায়, অন্যান্য বছর উপজেলার বিভিন্ন পাড়া মহল্লা ভিত্তিক ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাদের যে সব ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে এবার নানা শংকায় তা দায়সারা ভাবে সীমিত করা হয়েছে। চেয়ারম্যানটিলা সাংগ্রাইং উদযাপন কমিটির সভাপতি উগ্যজাই চৌধুরী জানান, এবারের অনুষ্ঠান নামমাত্র ভাবে করা হচ্ছে। একই অবস্থা গুইমারা’র দেওয়ানপাড়া, আমতলীপাড়া সহ সর্বত্রই দেখা গেছে। গুইমারা দেওয়ানপাড়া এলাকার বাসিন্দা থোয়াইঅংগ্য মারমার সাংগ্রাইং র্যালিতে অংশগ্রহণ করতে আসলেও অজানা শংকার চাপ তার চোখে মুখে ষ্পষ্ট।
গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি দুইটি উপজেলায় বিচ্ছিন্ন ঘটনার কারণে এবারের বৈসাবিতে কিছুটা প্রভাব পড়লেও গুইমারা’র সার্বিক আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি ভাল। তবে যাতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরী না হয় সে ব্যাপারে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তবে যাই হোক পাহাড়ে শুরু হওয়া প্রাণের উৎসব বৈসাবি অনুষ্ঠানে নিরাপত্তা ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা প্রশাসনের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে।