পাহাড়ে তামাকের বিকল্প হতে পারে গম চাষ, প্রথম চাষ হলেও ফলন ভালো
মোবারক হোসেন: গম আমাদের দেশে যেমন পুষ্টিকর তেমনী ও অর্থকরী ফসল। গম সাধারণত মানুষের রুটি ও শিশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া গমের কুঁড়া গো-খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে এদেশে অধিক আবাদকৃত গম জাতের মধ্যে কাঞ্চন, আকবর, অঘ্রাণী ও প্রতিভা রয়েছে। তাছাড়া সৌরভ (বারি গম-৩০) ও গৌরব (বারি গম-২০) নামে ২টি উচ্চ ফলনশীল নতুন জাত অনুমোদিত হয়েছে। খাগড়াছড়িতে ১ হেক্টর জমিতে বারি-৩০ এর গম চাষ হয়েছে। প্রথমবারের মত হলেও ফলন অনেক এমনটাই জানিয়েছে খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
এ প্রসঙ্গে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম ভূইয়া জানান, চলতি অর্থবছরে পরীক্ষামূলক প্রথমবারের মত বারি- ৩০ গমের জাত নিয়ে এক একর জায়গায় ৫জন কৃষককে ৫টি প্রদর্শনী করে প্রতিজনকে ১০ কেজি হারে প্রণোদনা হিসেবে গমের বীজ দেয়া হয়। প্রথমবার সেই হিসেবে ফলন অনেকটাই ভালো হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। পাহাড়ের মাটি গম চাষের জন্য উপযোগী। রবি মৌসুমে শীতকালীন সময়ে এ গমের চাষ করতে হয়। বপনের ৩মাসের মধ্যেই ফলন হয়। এটা তাপসহনশীল জাত। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে জমি তৈরী সেচ ব্যবস্থা থাকলে আগামীতে এ গম চাষ পাহাড়ে বাম্পার ফলনের আশা করা যায়।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প¯্রারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গম হতে যে আটা হয় তার প্রতি ১০০ গ্রাম আটায় আমিষ ১২.১ গ্রাম, শর্করা ৬৯.৪ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪৮ মিলিগ্রাম, লৌহ ১১.৫ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ২৯ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি-১ ০.৪৯ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-২ ০.২৯ মিলিগ্রাম, আাঁশ ১.৯ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ২.৭ গ্রাম এবং জলীয় অংশ থাকে ১২.২ গ্রাম।
বারি গম ৩০। গম গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত বারি গম ৩০ একটি উচ্চ ফলনশীল তাপ সহিষ্ণু গমের জাত। জাতটি ২০১৪ সালে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক দেশের সকল অঞ্চলে চাষাবাদের জন্য অবমুক্ত করা হয়। বি এ ডব্লিউ ৬৭৭ এবং বিজয় গম জাতের মধ্যে শংকারয়নের মাধ্যমে এ জাতটি উদ্ভাবন করা হয়।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো: মর্ত্তুজ আলী এ প্রতিনিধিকে বলেন, পুরো জেলার ৯টি উপজেলায় প্রথমবারের মত পরীক্ষামূলক বারি-৩০ গম চাষে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ১০০বিঘা প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে এ গম চাষ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ না থকলেও যে ফলন হয়েছে প্রথমবারের মত এটাই আমাদেও লক্ষ্যমাত্রা আগামীতে এ গম চাষ তামাকের বিকল্প চাষ হতে পাওে বলে মনে করেন তিনি।