বৈসাবিন উৎসবে ভাসলো খাগড়াছড়ির সকল সম্প্রদায়ের মানুষ
স্টাফ রিপোর্ট া: এই অঞ্চলে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু, মারমা সম্প্রদায়ে সাংগ্রাই আর চাকমা সম্প্রদায়ের বিজু এবং বাঙালি জনগোষ্ঠীর বাংলা নববর্ষ (বৈ-সা-বি-ন)কে ঘিরে পুরো খাগড়াছড়ি জেলার প্রতিটি জনপদ আনন্দের রং ছড়িয়ে পড়েছে। ঘরে ঘরে চলছে নানা খানা-পিনা, নাচ-গান। সে সাথে চলছে পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী নানা খেলাধুলা।
মারমা সম্প্রদায়ের তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব। মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসবকে ঘিরে খাগড়াছড়ি জেলা শহর নানা রং-এ রঙ্গিন হয়ে উঠেছে। এ উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল মারমা জনগোষ্ঠীর বর্ণাঢ্য সাংগ্রাই র্যালি ও জলকেলি বা জলোৎসব। বৃহস্পতিবার সকালে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে ক্যং ফুল পূঁজার মধ্য দিয়ে সাংগ্রাই উৎসবের সূচনা হয়। সাংগ্রই উৎসব উপভোগ করতে খাগড়াছড়িতে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের সমাগম ঘটে।
ঐতিহ্যবাহী জলকেলি বা জলোৎসবে তরুণ-তরুণীরা একে অপরের দিকে পানি নিক্ষেপ করে উল্লাস প্রকাশ করে মারমা সম্প্রদায়ের মানুষ। মার্মা জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস এই পানি উৎসবের মধ্য দিয়ে অতীতের সকল দু:খ-গ্লানি ও পাপ ধুয়ে-মুছে যাবে। সে সাথে তরুণ-তরুণীরা একে অপরকে পানি ছিটিয়ে বেঁছে নেবে তাদের জীবন সঙ্গীকে। সাংগ্রাইং উৎসব উপভোগ করতে খাগড়াছড়ি এসেছেন অনেক পর্যটকও। এছাড়াও উৎসব উপলক্ষে নানা খেলা-ধুলা,পিঠা উৎসব,মারমাদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও ওপেন কনসার্টের আয়োজন করা হয়।
অপর দিকে চাকমা সম্প্রদায় বৃস্প্রতিবার পালন করছে পহেলা বৈশাখ বা গজ্জাপয্যা। একই সাথে বুধবার থেকে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের হারিবৈসু,বিযুমা, বিচিকাতাল। ফুল বিজু, মূলবিজু ও বিচিকাতাল নামে নিজস্ব বৈশিষ্টতায় এ উৎসবে আনন্দের আমেজ ছড়ায়। ত্রিপুরা ভাষায় এ উৎসবকে বৈসু, মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাইং আর চাকমা ভাষায় বিজু বলা হয়।
এদিকে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বর্ষবরণ উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। ত্রিপুরা, মারমা, চাকমা ও বাংলা সম্প্রদায়ের এই চার সম্প্রদায়ের উৎসবের নাম একত্র করে বৈসাবিন শব্দটির উৎপত্তি।
বৈসাবি এক সময় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য হলেও বৈসাবিন সম্পৃক্ত হওয়ায় এখন সার্বজমিন ও জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবের মধ্যে পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি আরো সু-দৃঢ় হোক এ প্রত্যাশা জনপ্রতিনিধিসহ সকলের।