মানিকছড়ির ১৪ কমিউনিটি ক্লিনিকে ‘করোনা’ ঝুঁকি নিয়েই স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে সিএইচসিপি কর্মীরা
মো. ইসমাইল হোসেন: চিকিৎসা মানুষের একটি মৌলিক অধিকার। এটি মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম। অসুস্থ্য ব্যক্তির সুস্থ্যতার জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এক কথায় জীবনকে বিপন্ন হওয়া থেকে বাঁচাতে এবং শারীরিক ও মানসিক ভাবে পূর্বের ন্যায় স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে দেয়াই হলো চিকিৎসার মুল উদ্দেশ্য। আর প্রাথমিক ভাবে প্রত্যন্তঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে যারা কাজ করে যাচ্ছেন তারা হলেন, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডার (সিএইচসিপি) কর্মীরা। তারা নিড়লসভাবে গ্রামাঞ্চলের খেঁটে খাওয়া অসহায় মানুষ গুলোর প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে আসছেন। তবে বর্তমানে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে ভীতি ও অনিশ্চয়তা। তাছাড়া কোভিড-১৯ প্রতিরোধে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলছে লগডাউন। বর্তমানে মানুষের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। তবে অত্যান্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, তারা মাক্স ও তাদের ইউনিফর্ম পড়েই প্রতিনিয়ত অর্ধশতাধিক রোগী সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত কোন করোনা ভাইরাস মোকাবিলা করার মত (পিপিই) পোশাক বা সরঞ্জামই পাননি তারা। এতে করে গ্রামাঞ্চলের রোগীদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে তাদের মাঝে আতংক কাজ করছে। তাছাড়া বর্তমানে রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ গ্রামে চলে আসায় রোগীর চাপ দিন দিন বেরেই চলেছে। কমিউনিটি ক্লিনিকে করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণ যত্র না থাকায় শহরাঞ্চল থেকে আগতদের কেউ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তাও বুঝতে পারছেন না সিএইচসিপি কর্মীরা। এমন অনিশ্চয়তার মধ্যেই করোনার ঝুঁকি নিয়েই তাদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে।
বর্তমান করোনা ভাইরাস মোকাবিলার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ছুদুরখীল কমিউনিটি ক্লিনিকেটর সিএইচসিপি মো. মনির হোসেন ও কালাপানী কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি কর্মী রুইলা মারমা এই প্রতিবেদনক জানান, বর্তমানে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বিশ্ব ব্যাপী ছড়িয়ে পড়ায় জনমনে আতংক বিরাজ করছে। তবে আমরা যেহেতু প্রত্যন্তঞ্চলের মানুষদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছি। তাছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক জনগণের দোড়ঘোড়ায় হওয়া সাধারণ সর্দি, কাশি কিংবা জ্বর হলেও তারা আমাদের কাছে ছুটে আসে। তাই বর্তমানে আমরা বেশ ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও গ্লাভস, হ্যান্ড স্যানিটেশন ও করোনা ভাইরাস মোকাবিলা করার মত (পিপিই) পোশাক বা সরঞ্জামই পাইনি আমরা। এ ব্যাপারে আমাদের উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি যাতে করে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম (পিপিই) ব্যবস্থা করেন। তাহলে আমরা নিরাপদে গ্রামাঞ্চলের অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে তাদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে পারব।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায় যে, মানিকছড়ি উপজেলায় ১৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও বর্তমানে ১৪টি ক্লিনিকের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, গচ্ছাবিল,বাটনাতলী, ডাইনছড়ি, ছুদুরখীল,ডলু, যোগ্যাছোলা, গাড়ীটানা, চেংগুছড়া, কুমারী, গবামারা, মলঙ্গীপাড়া, রাঙ্গাপানী, বড়ইতলী একসত্যাপাড়া কমিউিনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দক্ষিণ সাপমারা রোয়াজাপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক ও মলঙ্গীপাড়া কমিউনিটি ্িক্লনিক এর কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বলেন, পিপিই পর্যাপ্ত না থাকায় এ মুহুর্তে সিএইচসিপি কর্মীদের মাঝে তা সরবরাহ করতে পারছিনা। তবে উচ্চ পর্যায়ের পরবর্তি নির্দেশনা ও পর্যাপ্ত পিপিই এর ব্যবস্থা হলেই তাদের মাঝে সরবরাহ করা হবে।