মানিকছড়ির গহীণ অরণ্যে অভিযান চলাকালে সন্ত্রাসীদের গুলিতে সেনা অফিসার আহত, অস্ত্রসহ আটক ১
পাহাড়ের আলো ডেস্ক: খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার গহীণ অরণ্যে লক্ষ্মীছড়ি জোনের সেনাবাহিনী ও উপজাতীয় সন্ত্রাসীদের সাথে গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। ইউপিডিএফ’র আস্তানায় সেনাবাহিনী এ অভিযান চালালে সন্ত্রাসীরা উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি বর্ষণ করলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
২৫ সেপ্টেম্বর বিকালে কুমারী, বটটিলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। লক্ষ্মীছড়ি জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. আনিসুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে মানিকছড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। ঘটনাস্থল থেকে এক উপজাতীয় সন্ত্রাসীর গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এসময় একটি এসএমজি, বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারদ উদ্ধার করা হয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে। আটক ব্যক্তির নাম হলো জনপ্রিয় চাকমা(৪৫)। পিতার নাম ধীরেন চন্দ্র চাকমা। বাড়ি দীঘিনালা উপজেলায়।
জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরে অবস্থান নিশ্চিত হলে লক্ষ্মীছড়ি জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর আনিস ও ক্যাপ্টেন নাসির এর নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এলাকাটি ঘিরে ফেলে। সন্ত্রাসীরা সেনাবাহিনীর উপস্থিত টের পেয়ে এলোপাতারি গুলি বর্ষন করে সেনাবাহিনীর উপর। সন্ত্রাসীদের গুলিতে লক্ষ্মীছড়ি জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর আনিস আহত হয়। তাঁর ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। মানিকছড়ি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত চট্টগ্রাম সিএমএইচএ পাঠানো হয়েছে। পরে সেনাবাহিনীও পাল্টা গুলি চালায়। ঘটনাস্থল থেকে উপজাতীয় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জনপ্রিয় চাকমা(৪৫)কে আটক করে। পরে তাকেও চট্টগ্রাম পাঠানো হয়। এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে একটি এসএমজি, গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মানিকছড়ি থানার অফিসার(তদন্ত) মো. মাসুদ করীম ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলেন, এ ঘটনায় একজন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মানিকছড়ি হাসপাতালে আনা হয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মো. মহিউদ্দীন আহত সেনা কর্মকর্তার চিকিৎসা দেন। এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ থেমে গেলেও ঘটনাস্থলে সেনা অভিযান চলছে। তবে এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর পক্ষ হতে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
ইউপিডিএফ জড়িত নয়: খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার কুমারী এলাকায় আজ বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বিকেলের দিকে সংঘটিত বন্ধুকযুদ্ধের ঘটনার সাথে ইউপিডিএফকে জড়িয়ে কতিপয় সংবাদ মাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা আদৌ সত্য নয় বলে জানিয়েছেন ইউপিডিএফ খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা। গতকাল মঙ্গলবার থেকে একটি চিহ্নিত সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলের কিছু সদস্য অবস্থান করছিল, যার তথ্য গ্রামবাসীরা সেনাদের কাছে সরবরাহ করেছিল বলে জানা যায়। উপিডিএফ’র প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ নিরন চাকমা স্বাক্ষরিত এক প্রেসবার্তায় এ দাবি করা হয়।
উল্লেখ্য যে, এর আগে গত ১৮ আগস্ট রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলায় সেনাটহলের উপর ইউপিডিএফ’র সন্ত্রাসীরা গুলি বর্ষণ করলে মো: নাসির উদ্দিন নামে এক তরুন সৈনিক নিহত হয়। একদিন তল্লাসী চলাকালনি সময়ে সন্ত্রাসীদের পুতে রাখা মাইন্ড বিষ্ফোরণে ২ক্যাপ্টেন মেহেদী ও সৈনিক মহসিন গুরুতর আহত হয়। এর পর ২৬ আগস্ট খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় সেনাবাহিনীর টহলের উপর হামলা চালালে পাল্টা হামলায় ৩সন্ত্রাসী নিহত হয়।