• November 23, 2024

রাঙ্গুনিয়ার গয়াল খামার করে সফলতা পেয়েছেন এরশাদ মাহমুুদ

শান্তি রঞ্জন চাকমা, রাঙ্গুনিয়া: বিলুপ্ত গয়াল খামার করে সফলতা পেয়েছেন রাঙ্গুনিয়া পদুয়া গ্রামের শিক্ষিত যুবক মো. এরশাদ মাহমুদ। উপজেলার শেষ সীমান্তে পদুয়া ইউনিয়নের দূগর্ম সুখবিলাস শাকিলা পাহাড় এলাকায় বিশাল গয়াল খামার গড়ে তুলেছেন। নিয়মিত পরিচর্যা ও সঠিক ব্যবস্থাপনায় গয়াল দ্রুত বেড়ে উঠছে। গয়াল খামারে সফলতা পাওয়ায় বেকার যুবকরা উৎসাহিত হচ্ছে।

স্নাতক পাশ করা শিক্ষিত যুবক মো. এরশাদ মাহমুদ মেধা ও কঠোর পরিশ্রমে গয়াল খামার প্রতিষ্টা করেছেন। ইচ্ছাশক্তি ও অদম্য সাহস নিয়ে ২০০৮ সালে রাঙামাটি জেলার গহিন বনের এক উপজাতীয় পরিবার থেকে এরশাদ মাহমুদ তিনটি গয়াল ক্রয় করেন। এর মধ্যে একটি বাচ্চা ও একটি মাদি গয়াল ছিল। পর্যায়ক্রমে গয়ালের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এখন তাঁর খামারে রয়েছে ৫৬টি গয়াল।

এরশাদ মাহমুদ ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন দেখতেন পুকুরভরা মাছ, সবুজ বনায়নে সারি সারি বৃক্ষ। খামার ভরা পশু। এসব এখন আর এরশাদ মাহমুদের স্বপ্ন নয়। সুখবিলাস ফিশারিজ এন্ড প্ল্যানটেশনের প্রতিষ্ঠান ‘গয়াল খামার প্রজনন কেন্দ্র’ গড়ে তুলে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সফল খামারী এরশাদ মাহমুদ। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মাছ চাষের পাশাপাশি বর্তমানে বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণী গয়ালের খামার দেখতে প্রতিদিন ইচ্ছুক জনতার ভীড় বেড়েছে। একজন সফল খামারী হিসেবে এরশাদ মাহমুদ ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে জাতীয় পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ মৎস্য খামারির পুরস্কার নেন তিনি।

সাবেক জেলা পিপি ও রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া ইউনিয়নের সুখবিলাস গ্রামের মরহুম অ্যাডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদারের ছেলে মো. এরশাদ মাহমুদ। সাবেক পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপির ছোটভাই তিনি। ১৯৮৮ সাল থেকে মাছচাষ শুরু করেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলের অনাবাদি জমি কিনে অথবা লিজ নিয়ে সেখানে মৎস প্রকল্প গড়ে তুলছেন। প্রায় দেড় শত একর জমির উপর অর্ধশতাধিক মৎস্য চাষ করছেন তিনি। তার দেখাদেখিতে অনেকে মৎস চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছে।

সুখবিলাস ফিশারিজ এন্ড প্ল্যানটেশনের প্রতিষ্ঠান ‘গয়াল খামার প্রজনন কেন্দ্র’ এর ম্যানেজার টিটু কুমার বড়ুয়া বলেন, খামারে ৫ জন শ্রমিক গয়ালের দেখভাল করছে। গয়ালের খাদ্য হিসেবে ভুষি, লবণ, খুরা কাঁচা ঘাস ও শুকনো খড় দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি গয়ালের গড় ওজন ৫০০-৭০০ কেজি হয়। গত বছর তিনটি মাঝারি গয়াল বিক্রি হয় ৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা। চলতি বছরের আগষ্ট মাসে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় একটি গয়াল বিক্রি হয় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। কম চর্বিযুক্ত মাংসের কারণে দেশীয় গরুর চেয়ে দ্বিগুণ ওজনের প্রতিটি গয়াল সর্বোচ্চ ২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। বাজারে বিক্রি হওয়া গরু-মহিষের তুলনায় গয়ালের দাম একটু বেশি। একেকটি গয়াল ওজন ভেদে বিক্রি হচ্ছে। গরু-মহিষের চেয়ে বেশি মাংস পাওয়া যাওয়ায় গয়ালের চাহিদা বাড়ছে বলে ম্যানেজার জানান। সফল খামারি এরশাদ মাহমুদ বলেন, পাহাড়ের কোলে সবুজ বনায়নের পাশে গয়াল খামার প্রতিষ্ঠা করে হয়েছে। গয়ালের খামারের পাশে গোবর থেকে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট তৈরি করা হয়েছে। বায়োগ্যাসের উচ্ছিষ্ট গোবর মাছের খাবার হিসেবে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মৎস্য প্রজেক্টে দেওয়া হচ্ছে। গয়াল পালনে মাংসের চাহিদা পুরনের পাশাপাশি বনের পশু গয়াল বিলুপ্ত থেকে রক্ষা পাচ্ছে।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post