রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত
রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধি: রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। জরাজীর্ণ ভবন, ডাক্তারের অভাব, নষ্ট ও অকেজো চিকিৎসা যন্ত্রপাতি সহ নানা অব্যবস্থাপনা ও অবহেলায় স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত হওয়ায় ন্যায্য সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে সাধারন মানুষ। হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীদের আবাসিক ভবনগুলোও জরাজীর্ণ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব রয়েছে বলে জানা গেছে।
মহিলা রোগী রোখসানা আক্তার বলেন, চরমভাবে অবহেলিত হয়ে পড়েছে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। পয়ঃনিস্কাসন ও বিশুদ্ধ পানির সংকট সহ বিভিন্ন সমস্যা বিরাজমান। এক কথায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রতিদিন শতশত রোগী আসে বর্হিবিভাগে চিকিৎসার জন্য। রোগী মোহাম্মদ মিজান বলেন, ডাক্তার স্বল্পতার কারণে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ডাক্তারের সাক্ষাৎ মিললেও নামমাত্র চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ফিরতে হয়। অনেক সময় ব্যবস্থাপত্র মিললেও ঔষধ মিলেনা। চিকিৎসা নিতে আসা ইসলামপুর গ্রামের কৃষক মো. জাফর বলেন, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পর্যাপ্ত আসবাবপত্রও নেই। জরুরী বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় একমাত্র জেনারেটরটি দীর্ঘদিন ধরে অচল অবস্থায় রয়েছে। হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্সটি প্রায়ই সময় বিকল থাকে।
কয়েকজন রোগী জানায়, স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নিজেই অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা রোগীরা উল্টো চরম দূর্ভোভ পোহাচ্ছেন। হাসপাতালের জরাজীর্ণ ছাদের আস্তর প্রায় সময় মানুষের উপর খসে পড়ছে। আস্তর সহকারে বৈদ্যুতিক পাখা ছাদ থেকে খসে পড়েছে। ঝুঁকিমুক্ত করতে সম্প্রতি কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের সবকটি পাখা খুলে ফেলেন। সামান্য বৃষ্টি হলে হাসপাতালের ভিতরে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। মারাত্মক ঝুঁকিপুর্ন অবস্থায় ইনডোরে রোগীদের থাকতে হয়।
জান যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫০ শয্যার মধ্যে মহিলা রোগীদের জন্য ৩০ আসন এবং পুরুষদের জন্য ২০টি আসন রয়েছে। যন্ত্রপাতির অভাবে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটর ১৪ বছরেও চালু করা যায়নি। অপারেশন থিয়েটরে সার্জারী এবং এনেস্তেশিয়া কনসালটেন্ট নাই। এনেস্তেশিয়া মেশিন থাকলেও প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য্য গ্যাস ব্যবস্থা নাই। অপারেশন কক্ষে জীবানু মুক্তকরন অটোগ্ল্যাব মেশিন নাই। যার কারনে ওপারেশন চিকিৎসা হাসপাতালে চালু করা যায়নি। টেকনিশিয়ান না থাকায় হাসপাতালের এক্সরে মেশিন বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালে ৮ জন ডাক্তারের স্থলে মাত্র ৪ জন আছেন। তাও ২ জনকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সপ্তাহের বেশীরভাগ দিন কাজ করতে হয়। ১৩ জন মেডিক্যাল অফিসারের স্থলে আছেন মাত্র ৫ জন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার ইফতেখার হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছাড়াও ডাক্তার নার্স এবং কর্মচারীগনের আবাসিক ভবনগুলোও খুবই জরাজীর্ন এবং ঝুঁকিপুর্ন হয়ে উঠেছে। এখানে থাকার উপযুক্ত পরিবেশ নেই। পানি বিদ্যুৎ সংকটসহ নানা দুরাবস্থায় কর্মচারীদের বসবাস করতে হয়। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মোমিনুর রহমান জানান, হাসপাতালটি বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। জরাজীর্ন পুরাতন ভবন ধসে পড়ার আশংকা করা হচ্ছে। ভবনের পুনঃনির্মান এবং সংস্কার করা জরুরী। এ ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।