শান্তিচুক্তির ফলেই পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে- মাটিরাঙ্গা জোন কমান্ডার
অন্তর মাহমুদ, মাটিরাঙ্গা: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক রক্তের বিনিময়ে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে মন্তব্য করে মাটিরাঙ্গা জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল নওরোজ নিকোশিয়ার বলেন, চুক্তির ২১ বছর পরেও পাহাড়ের সাধারণ মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানোর মাধ্যমে একটি বিশেষ মহল পার্বত্যাঞ্চলকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র করছে। সবাইকে যড়যন্ত্রকারীদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানিয়ে তাদের সকল ধরনের ষড়যন্ত্র নশ্বাৎ করে শক্ত হাতে মোকাবেলা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
পার্বত্য শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালে সম্পাদিত হওয়া ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ফলেই পাহাড়ে সকল জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সম্প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করছে। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২১ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। মাটিরাঙ্গা জোন ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদ এর যৌথ আয়োজনে দিবসটি উপলক্ষ্যে রোববার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে মাটিরাঙ্গা সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা আরম্ভ হয়ে মাটিরাঙ্গার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে মাটিরাঙ্গা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে ২১ বছর পূর্তি উদযাপনের উদ্বোধন করেন মাটিরাঙ্গা জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল নওরজ নিকোশিয়ার পিএসসি।
এরপর মাটিরাঙ্গা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় মাটিরাঙ্গা জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল নওরজ নিকোশিয়ার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিভীষণ কান্তি দাশ, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মো. শামসুল হক ও সহকারী পুলিশ সুপার মো. খোরশেদ আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। পার্বত্য শান্তি চুক্তিকে ঐতিহাসিক অর্জন উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, শান্তি চুক্তির ফলে পাহাড়ে নিরাপত্তা,শান্তি ও সম্প্রীতির বন্ধন সৃস্টি হয়েছে। এখানকার বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠির মাঝে ভাতৃত্ববোধ সৃস্টি হয়েছে। পাহাড়ের মানুষ শান্তিতে বসবাস করার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলেই পাহাড়ের নানামুখী উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। আলোচনা সভা শেষে পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২১ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দরা।
বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ মো. জাকির হোসেন পিপিএম, মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সুবাস চাকমা, মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাসিনা বেগম, মাটিরাঙ্গা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হিরন জয় ত্রিপুরা, মাটিরাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. আলাউদ্দিন লিটন, মাটিরাঙ্গা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম এম জাহাঙ্গীর আলমসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও হেডম্যান-কার্বারীসহ শান্তিকামী বিভিন্ন স্তরের জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।