শান্তিপূর্ণ ও স্বত:স্ফুর্ত সড়ক অবরোধ পালিত, দাবি ৩ সংগঠনের
ডেস্ক রিপোর্ট: গত ১৮ আগস্ট খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভর বাজার ও পেরাছাড়ায় সংস্কারবাদী জেএসএস ও নব্য মুখোশ বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্তৃক সশস্ত্র হামলা চালিয়ে পিসিপি-যুব ফোরামের তিন নেতাসহ ৭জনকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে ও হামলাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবিতে আজ সোমবার (২০ আগস্ট ২০১৮) খাগড়াছড়ি জেলায় আধাবেলা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম(ডিওয়াইএফ) ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন(এইচডব্লিউএফ) খাগড়াছড়ি জেলা শাখা। সড়ক অবরোধ সফল করতে পিকেটাররা সকাল থেকে জেলার বিভিন্নস্থানে সড়কে টায়ার জ¦ালিয়ে পিকেটিং করে। অবরোধ চলাকালে দূরপাল্লার কোন যান চলাচল করেনি। উপজেলাগুলোর অভ্যন্তরীণ সড়কেও যান চলাচল বন্ধ ছিল।
গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সভাপতি বরুণ চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক চৈতালি চাকমা এক বিবৃতিতে সড়ক অবরোধ সফল করতে সহযোগিতা প্রদানের জন্য জেলার সকল যানবাহন মালিক-শ্রমিক সমিতি ও জেলার সর্বস্তরের জনসাধারণের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ সংস্কারবাদী জেএসএস ও নব্য মুখোশবাহিনী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এলাকায় এলাকায় গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। প্রকাশ্যে দিবালোকে পুলিশের নাকের ডগায় হত্যাকান্ডের ঘটনা সংঘটিত হওয়ার পরও তিন দিনেও হামলাকারী সন্ত্রাসীরা গ্রেফতার না হওয়ায় নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা অবিলম্বে স্বনির্ভরে ৬ জনকে হত্যা ও পেরাছড়ায় জনতার মিছিলে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে এক বৃদ্ধকে হত্যার ঘটনায় সুষ্ঠু নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্তপূর্বক ঘটনায় জড়িত সংস্কারবাদী জেএসএস ও নব্য মুখোশ বাহিনী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত শনিবার সকাল ৮টার দিকে সংস্কারবাদী জেএসএস ও নব্য মুখোশ বাহিনীর একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী খাগড়াছড়ি শহরের স্বনির্ভর বাজারে হানা দিয়ে অতর্কিতে বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে পিসিিিপ’র খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তপন চাকমা, সহ সাধারণ সম্পাদক এল্টন চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহসভাপতি পলাশ চাকমাসহ ৬ জনকে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে অন্যরা হলেন, উত্তর খবংপুজ্জে গ্রামের বাসিন্দা ও মহালছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী জিতায়ন চাকমা (৫৩), একই গ্রামের যুবক রুপম চাকমা (২০) ও পানছড়ির উগলছড়ি গ্রামের বাসিন্দা প্রকৌশরী ধীরাজ চাকমা। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়।
এদিকে এ ঘটনার ঘন্টা-দুয়েক পর পেরাছড়া ও ভাইবোন ছড়া ইউনিয়নের বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মিছিল সহকারে স্বনির্ভর আসার পথে পেরাছড়া ব্রিজের কাছে সন্ত্রাসীরা ফের সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধ সন কুমার চাকমাসহ ৪জন আহত হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় সন কুমার চাকমাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান।