হিজাব কান্ডে শিক্ষার্থীর সংবাদ সম্মেলন
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ি মাটিরাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজে হিজাব পরার কারণে এক শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভূক্তভোগী উম্মে আনজুমানয়ারা। মঙ্গলবার সকালে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে তিনি ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন এবং পর্দানশীন নারীদের জন্য রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানান।
উম্মে আনজুমানয়ারা, যিনি মাটিরাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজের বাউবি ২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী, ১৩ ডিসেম্বর সমাজতত্ত্ব পরীক্ষার সময় ‘নেকাব’ পরার কারণে শিক্ষক কর্তৃক অপমানিত হন। তিনি জানান, এ ঘটনাটি জানার পর সারা দেশে প্রতিবাদ শুরু হয় এবং পরিস্থিতি শান্ত করতে মাটিরাঙ্গা জোন কমান্ডার কার্যালয়ে একটি মিটিং ডাকা হয়। সেখানে তিনি পাঁচটি দাবী পেশ করেন, যার মধ্যে ছিলো দায়ী শিক্ষকদের স্থায়ী বহিষ্কার, নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা, নিরাপত্তার নিশ্চয়তা এবং তার পরীক্ষায় অটো পাশ বা পুনরায় পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ।
এছাড়াও উম্মে আনজুমানয়ারা দাবি করেন, “যে পরীক্ষায় আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সেই পরীক্ষায় আমি অটো পাশ বা পুনরায় পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ চাই, কারণ শিক্ষকরা আমার অধিকার লঙ্ঘন করেছেন।” তিনি আরও বলেন, “যেভাবে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরীক্ষা ব্যবস্থা করা হয়, তেমনি একজন মুসলিম শিক্ষার্থীর ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি সম্মান জানিয়ে তার জন্যও আলাদা পরীক্ষা ব্যবস্থা করা উচিত।”
শিক্ষার্থীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করার দাবি তুলে ধরেন। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, ২০২২ সালে উচ্চ আদালত হিজাব পরাকে সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং এই অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
উম্মে আনজুমানয়ারা আরও জানান, সাংবাদিকদের মাধ্যমে তিনি এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে পর্দানশীন নারীদের অধিকার সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “কোনো পর্দানশীন নারীকেই যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের হেনস্তার শিকার হতে না হয়।”
এছাড়া, তিনি দুটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরেন: প্রথমত, দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং পরীক্ষার হলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সনাক্তকরণের ব্যবস্থা চালু করা উচিত, যাতে অপরাধ ও দুর্নীতি রোধ করা যায়। দ্বিতীয়ত, কোনো নারীর চেহারা দেখানোর প্রয়োজন হলে, তার সহযোগিতা নারী কর্মকর্তাদের দ্বারা করা উচিত।
উম্মে আনজুমানয়ারা তার বক্তব্যে সরকারের কাছে নারীদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ ও ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।