• December 5, 2024

হিজড়ার সাথে চারজনের অনৈতিক কর্মকান্ড দেখে ফেলায় কিশোর রাহাতকে হত্যা

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: ফটিকছড়ির দাঁতমারায় কিশোর রাহাত হত্যার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। এক হিজড়ার সাথে চারজনের অনৈতিক কর্মকান্ড দেখে ফেলায় হত্যা করা হয় কিশোর রাহাত কে। গত ১৯ জানুয়ারী এ ঘটনার সাথে জড়িত হিজড়া জামাল ওরফে গোলাপ ওরফে রুমানা এবং আবু তালেব প্রকাশ হাছি কে গ্রেফতারের পর ঘটনার রহস্য উম্মোচিত হয়।হত্যাকান্ডের দুই মাসের মাথায় এ ঘটনার রহস্য উম্মোচনে সফল হলেন পুলিশ।
ইতিমেধ্য গ্রেফতারকৃত আবু তালেব হাঁছি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবাবন্দি দিয়েছেন। গত ২৬ জানুয়ারী চট্টগ্রামের সিনিয়র জ্যুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হেলাল উদ্দিনের নিকট স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন হাঁছি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভুজপুর থানার উপ পুলিশপরিদর্শক (এস আই) মো. শাহাদাৎ হোসেন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে আবু তালেব হাঁছি উল্লেখ করেন হিজড়া
জামাল ওরফে গোলাপ ওরফে রুমানার সাথে তাদের চারজনের অসামাজিক কার্যকলাপ
দেখে ফেলায় লোকজনকে জানিয়ে দেয়ার ভয়ে চারজনে মিলে শ^াসরোধ করে হত্যা করেরাহাতকে। দীর্ঘ জবানবন্দিতে আবু তালেব হাঁছি বলেন, জাহেদ,রাসেদ, বালুখালি এলাকার মৃত কবির আহমদের ছেলে দৌলতসহ  অসামাজিক কাজের জন্য চারজনে মিলে ১২ হাজার টাকায় ভাড়া করে হিজড়া জামাল ওরফে গোলাপ ওরফে রুমানাকে। ঘটনার দিন ২২ নভেম্বর দিবাগত রাতে দাঁতমারা বাজর সংলগ্ন গ্রামীণ টাওয়ারের উত্তর পাশের্^ আকাশমনি গাছ বাগানে হাঁছিসহ চারজনের সিন্ডিকেট হিজড়া রুমানার
সাথে অসামাজিক কার্যকলাপ শুরু করে। এসময় প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে সেখানে
যায় কিশোর রাহাত। বাগানের ভিতর প্রবেশ করার পর রাহাত তাদের এ অপকর্ম দেখে
ফেলে।
এসময় অসামাজিক কাজে লিপ্ত চারজনই রাহাতকে এ ঘটনা কাউকে না জানাতে নিষেধ
করে। কিন্তু কিশোর রাহাত নাছোড় বান্দা। সে বাজারের সবাইকে ঘটনা জানিয়ে দেবে বলে তার সিদ্ধান্তে য়খন অটল তখনই এ চারজনে মিলে শ^াসরোধ করে হত্যা করে রাহাতকে। এর পর তার মরদেহ একটি গাছের নীচে ফেলে চলে যায়।পর দিন ২৩ নভেম্বর সকালে গ্রামীণ টাওয়ারের উত্তর  পাশ থেকে দাঁতমারা ইউপির বালুখালি এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে রাহাতের  লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২২ জানুয়ারী  রাত ৮ টা পর্যন্ত বাবার সাথে  চায়ের দোকানে কাজ করেছিল রাহাত ।
এ দিকে রাহাতের মরদেহ উদ্ধারের পর মোবাইল ফোনের সুত্র ধরে পুলিশ গ্রেফতার করে অপর চা দোকানি কিশোর মিজানকে। নিহত রাহাতের ভাই রাসেদুল আলম বাদী হয়ে মিজানকে এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামী করেভুজপুর থানায় একটি হত্যা মামলা নং-৫(১১)/১৮ দায়ের করে। যা পরবর্তীতে ৩২৩/৩৪ ধারায় জিআর ১২৪/১৮ মুলে গত ২৫ নভেম্বর /১৮ আদালতে ফাইল হয়। এদিকে দীর্ঘ তদন্ত শেষে গত ১৯ জানুয়ারী এ ঘটনার সাথে জড়িত হিজড়া রুমানা এবং আবু তালেব হাঁছিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করে মামলার রহস্য উদঘাটনের স্বার্থে দুজনকে ৫দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে শুনানী শেষে আদালত একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা এ ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা এবং রাহাতকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে আসামী হাঁছির দেখানো মতে ঘটনাস্থলটিও সনাক্ত করে পুলিশ।
এ মামলায় গ্রেফতারকৃত হিজড়া জামাল ওরফে গোলাপ ওরফে রুমানা কক্সবাজার জেলার চকরিয়া ডা. কামালের বাড়ীর মসিহ উদ্দিনের সন্তান। এ ছাড়া আবু তালেব দাঁতমারা ইউপি’র একতাপুর গ্রামের মৃত নুরুল আলমের পুত্র। এদিকে এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত অপর তিন আসামী দৌলত, জাহেদ এবং রাসেদ এখনো পলাতক রয়েছে। তবে তাদেরকে গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মো. শাহাদাৎ হোসেন। স্থানীয় একাধিক সুত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এ ঘটনার সাথে জড়িত দৌলতকে বাঁচাতে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল জোর তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে মুল আসামী দৌলতের স্থলে অন্য দৌলতকে জড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করছে বলে সুত্রটি দাবী করে। এ নিয়ে উক্ত প্রভাবশালী মহলটি দু দফায় গোপন বৈঠকও করেছে বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post