৩৫ বছরেও এমপিও ভূক্ত হয়নি চন্দ্রঘোনা কেআরসি উচ্চ বিদ্যালয়
শান্তি রঞ্জন চাকমা: প্রতিষ্ঠার ৩৫ বছরেও এমপিও ভুক্ত হয়নি চন্দ্রঘোনা কেআরসি উচ্চ বিদ্যালয়। ৩৫৪ শিক্ষার্থী শিক্ষা ভবিষৎত কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পথে। শিক্ষার্থীদের থেকে প্রদত্ত সামান্য টিউশন ফি দিয়ে শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয়। শিক্ষকদের বেতনের হার খুবই কম, যা দিয়ে শিক্ষকের পরিবারতো দূরের কথা নিজের আনুযাঙ্গিক খরচও মিটেনা।
জানা যায়, কাপ্তাই উপজেলার শিল্প এলাকা হিসাবে সুপরিচিত চন্দ্রঘোনা কেপিআরসি এলাকা। ১৯৫৩ সালের কর্নফুলী পেপার মিলস লিমিটেড (কেপিএম) এবং পরবর্তীতে ১৯৬৭ সালে কর্নফুলী রেয়ন মিলস (কেআরসি) প্রতিষ্ঠার পর এই দুই শিল্প কারখানায় কর্মরত কর্মকর্তা, শ্রমিক কর্মচারীদের সন্তানদের পড়ালেখার জন্য গড়ে উঠে ঐতিহ্যবাহী কেপিএম স্কুল এবং কেআরসি স্কুল। বাংলাদেশ কেমিক্যালস ইন্ড্রাষ্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসির) নিয়ন্ত্রনে দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগ, বেতন ভাতা সহ যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হতো। কেআরসি সূত্র জানায়, কেপিএম স্কুলের কার্যক্রম স্বাভাবিক ভাবে চললেও ২০০২ সালের ১৫ ডিসেম্বর কর্নফুলী রেয়ন মিলস (কেআরসি) মিল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিসিআইসি কর্তৃক প্রতি মাসে দেয়া স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা বন্ধ হয়ে যায়।
স্কুল শিক্ষকরা জানান, ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত কেআরসি উচ্চ বিদ্যালয় জেলার মধ্যে ফলাফলের দিক দিয়ে ৩ বার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্জন করে। বর্তমানে কোন রকমে পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। সংকটের কারনে ২০০২ সালের পর থেকে অনেক শিক্ষক চাকরি ছেড়ে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করছেন। কেআরসি স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল আলম বলেন, ৬ জন মহিলা শিক্ষক, ৪ জন পুরষ শিক্ষক ৬ষ্ট শ্রেনী হতে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদেরকে পাঠদান করান। অতি দ্রুত কেআরসি স্কুলকে এমপিও ভূক্ত করার জন্য সরকারের নিকট আবেদন জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।
কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মফিজুল হক বলেন, স্কুলের পরিচালনা কমিটিতে দীর্ঘদিন যাবত জড়িত আছি। কেআরসি উচ্চ বিদ্যালয় এমপিও ভূক্ত হওয়া খুবই জরুরী, না হলে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রাঙ্গামাটি থেকে নির্বাচিত সাংসদ সাবেক মন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এই স্কুলের অবকাঠামোগত উন্নয়নে অনুদান দিয়েছেন। এছাড়া তিনি তাঁর তহবিল হতে নগদ অনুদান দিয়েছেন সাময়িক ভাবে স্কুল যাতে পাঠদান ব্যাহত না হয়, কিন্তু এটা সাময়িক সমাধান, তাই এই স্কুলটি বাঁচানোর জন্য তিনি দ্রুত এমপিও ভুক্ত করার জোর দাবি জানান। কাপ্তাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাদির আহমেদ বলেন, অনেকটা স্বেচ্ছাশ্রমে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি হতে যৎ সামান্য বেতন নিয়ে শিক্ষকরা শিক্ষকতা করছেন। কিন্তু এই বেতন দিয়ে একজন শিক্ষকের পরিবার চালানো বর্তমান সময়ে অসম্ভব। তাই তিনি এই স্কুলটি দ্রুত এমপিও ভূক্ত হওয়া জরুরী বলে মনে করেন।