পিস্তলসহ আটক সাধন চাকমা দীঘিনালায় মঞ্জু হত্যাকারী
দীঘিনালা প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ির দীঘীনালায় উপজাতীয় সন্ত্রাসী কর্তৃক বাঙালী যুবক মঞ্জুরুল আলম হত্যা মামলার অন্যতম আসামী সাধন চাকমাকে বিদেশী অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে যৌথ বাহিনীর অভিযানে । বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২ টায় উপজেলার বাবুছড়া এলাকার কার্বারী টিলা নামক স্থানে অপারেশন চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বাড়ি একই উপজেলার বরাদম এলাকায়। সাম্প্রতিক বিভিন্ন আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যে আধিপত্যের জের ধরে ক্রমাগত সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা, চাঁদাবাজী বন্ধ ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি’র সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনী গতমাসের শেষ সপ্তাহ থেকে চিরুনী অভিযান শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল আরও একটি সফল অভিযান পরিচালনা করে যৌথবাহিনী। নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দীঘিনালা উপজেলার বাবুছড়া এলাকার কার্বারীটিলা নামক স্থানে রাত ২ টায় ইউপিডিএফ প্রসীত বাহিনীর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে উক্ত অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযান দল কর্তৃক সাধন চাকমা(৪০), পিতা- দয়াল চাকমাকে আমেরিকার তৈরী একটি অত্যাধুনিক পিস্তল এবং ৫ রাউন্ড গুলিসহ আটক করা হয়। এছাড়াও উক্ত স্থানে অবস্থানরত বালু চাকমা(৪৫) নামক অপর একজন চাঁদাবাজ যৌথবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। এসময় অভিযান দল কর্তৃক তাকে উদ্দেশ্য করে ফায়ার করা হয়। তবে গভীর রাত ও জঙ্গল এলাকা হওয়ার কারণে উক্ত দুষ্কৃতিকারী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত পিয়াস ওরফে সাধন চাকমা ইউপিডিএফ (মূল) এর সশস্ত্র গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য এবং বাবুছড়া এলাকা থেকে চাঁদা আদায় করত বলে জানা যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাম্প্রতিককালে সংঘটিত বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডসহ বেশ কিছু নাশকতার সাথে তার জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়।
আটককৃত ব্যক্তি বর্তমানে দীঘিনালা থানা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে এবং উদ্ঘাটিত তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী অভিযান পরিচালনা করা হবে মর্মে নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়। উল্লেখ্য, গত ৭ আগস্ট দীঘিনালায় সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে মঞ্জুরুল আলম (৩৭) নমে এক বাঙালী যুবক নিহত হয়। সে উপজেলার বাবুছড়া গুচ্ছগ্রামের মৃত মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে। বর্তমানে সে উপজেলার পোমাং পাড়া গ্রামের বসবাস করে আসছিলেন। জানা যায়, ঘটনার রাতে পোমাংপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কয়েক বন্ধু মিলে গল্প করার সময় সন্ত্রাসীদের এলোপাতাড়ি ব্রাশফায়ারে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ৩১টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। নিহত মঞ্জুরুল আলমের শরীরে ২৩ টি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়। নিহত মঞ্জুরুল আলম প্রায় দশ বছর পূর্বে পাহাড়ী এক চাকমা মেয়েকে বিবাহ করে। ওই সংসারে দুই ছেলে রয়েছে। আটককৃত সাধন চাকমা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাঙালী যুবক মঞ্জুরুল হত্যাকান্ড তার সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।