বিনোদনের নতুন মাত্রা যোগ করলো খাগড়াছড়ি আলুটিলার পর্যটন স্পট ”খাস্রাং রেস্টুরেন্ট”
বিশেষ প্রতিবেদক: খাগড়াছড়ি জেলায় পর্যটন স্থানগুলোর তালিকায় যোগ হলো আরেকটি পর্যটন স্পট ‘খাস্রাং রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট’। আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের পাশে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার অপেক্ষায় আছে নতুন পর্যটন ”খাস্রাং রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট’। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে ”খাস্রাং ’।
পর্যটন স্পটটির দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন কার্তিক ত্রিপুরা। তিনি জানান, স্থানীয় সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা তার আলুটিলাস্থ ১০ একর জায়গার উপরে গড়ে তুলেছেন পর্যটন স্পটটি। তিনি জানান, ”খাস্রাং’ ত্রিপুরা শব্দ, যার বাংলা আবিধানিক অর্থ ‘প্রশান্তি’। পর্যটকেরা ”খাস্রাং’ ভ্রমণে আসলে তাদের ক্লান্তি দুর হবার পাশাপাশি তারা নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশ, পাহাড়, পাহাড়ে বুকে পাথর, সবুজ পাহাড়ে রয়েছে পাখির কলকাকলী উপভোগ করতে পারবে।
”খাস্রাং রিসোর্টে গোলঘর করা হয়েছে ৬টি। প্রতিটিতে গড়ে ৮/১০জন বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়া ১টি হলরুম নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে ১০০জনের অংশ গ্রহণে সভা-সেমিনার আয়োজন করতে পারবেন। খাবার নিশ্চিত করার জন্য একটি রেস্টুরেন্ট তৈরি করা হয়েছে, যেখানে সকল ধরনের খাবার পাওয়া যাবে। ফাষ্ট ফুড’র ব্যবস্থাও থাকবে রেস্টুরেন্টটিতে। রেস্টুরেন্টে একসাথে ৬৬জন খাবার খেতে পারবে। পর্যটকগণ রাতে থাকার ব্যবস্থাও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পর্যটকগণ রাতে থাকার পাশাপাশি চাঁদের আলো, জোনাকী পোকার উড়ে চলার দৃশ্য, পুরো শহর অবলোকন, সর্পিল নদীর চলার দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন।
”খাস্রাং রিসোর্টে এই এলাকার পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক রাখা হবে। পর্যটকগণ ভাড়ায় এসব পোশাক পরিধান করে ছবি তুলতে পারবেন এবং পাহাড়ি জনজীবনের সাথে পরিচিত হতে পারবেন।
সাংবাদিক রানা ভট্রাচার্য্য বলেন, ”খাস্রাং রিসোর্ট পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে। আশাকরি আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের পাশাপাশি পর্যটকগণ ”খাস্রাং রিসোর্টে আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন। আলুটিলা সংলগ্ন হওয়ায় পর্যটকদের যাতায়াতে কোন অসুবিধা হবেনা।
”খাস্রাং স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে তিনি আরো জানান, এখন পর্যন্ত গড়ে ১৫/২০জন দৈনিক মুজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ আছে উল্লেখ করে আরো জানান পর্যটক আসা শুরু করলে এই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। ”খাস্রাং নির্মাণের কারণে স্থানীয়দের বেকারত্ব ঘুছবে বলেও মনে করেন তিনি।
মাটিরাঙা থেকে আসা স্থানীয় পর্যটক সুভাস চাকমা বলেন, প্রথমবার এসে তিনি মুগ্ধ হয়েছেন। বিভিন্ন স্থাপনা ও ফুলের বাগানের পাশাপাশি প্রাকৃতিক পাহাড়, ঝির-ঝির বাতাস, পাখির কলতান, গাছ-গাছালী দেখে মুগ্ধ হয়েছেন।
স্থানীয় আরেক পর্যটক রুজেল হোসেন বলেন, ”খাস্রাং সত্যিই প্রশান্তির জায়গা। ”খাস্রাং থেকে দিনের বেলায় নদী-পাহাড়-শহর, বাহারি ফুল, পাখির কলতান, ঝিরঝির বাতাস, শহরের দৃশ্য দেখার পাশাপাশি রাতে বিভিন্ন রঙ-বেরং এর আলো, সীমান্ত এলাকার দৃশ্য চোখে পড়ে। রাতে ভ্রমণকারী পর্যটকগণ চাঁদের রাত উপভোগ করতে পারেন।
চট্টগ্রাম থেকে আগত পর্যটক আক্তার হোসেন বলেন,”খাস্রাং রিসোর্ট একটি চমৎকার জায়গা। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়ক সংলগ্ন আলুটিলা এলাকায়। রাস্তার পাশে হওয়ায় যাতায়াত ও নিরাপত্তাজনিত সুবিধা অনেক ভালো।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মোঃ আহমারউজ্জামান বলেন, ”খাস্রাং পর্যটন সেক্টরে নতুন মাত্রা যোগ করবে। পর্যটকগণ আনন্দ ও বিনোদনের মাধ্যমে তাদের ক্লান্তি দূর করতে সক্ষম হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক ভালো উল্লেখ করে বলেন, পর্যটকদের জন্য এখন টুরিষ্ট পুলিশ রয়েছে। যে কোন সমস্যা সমাধান করতে ট্যুরিষ্ট পুলিশের সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ”খাস্রাং শিশুদের জন্য নতুন মাত্রা যোগ করবে। কারণ শিশুদের বিনোদনের জন্য শিশু বান্ধব বিভিন্ন স্থাপনা করা হচ্ছে। শিশুরা বিকেলে খেলতে পারবে।
”খাস্রাং এর মালিক ও সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, পর্যটকদের বিনোদন নিশ্চিত করা এবং পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি অন্যান্য বিনোদন স্পটগুলোর পাশাপাশি ”খাস্রাং রিসোর্ট বিনোদনের আলাদা মাত্রা যোগ করবে। তিনি সকল ধরণের পর্যটকদের ”খাস্রাং রিসোর্ট এন্ড রেস্টুরেন্ট’ এ ভ্রমণের আহবান জানান।