মাইজভাণ্ডারী মানবতাবাদী দর্শন প্রচারে আজীবন উৎসর্গীত ছিলেন সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (ক.)
পাহাড়ের আলো: মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের আধ্যাত্মিক মনীষী আওলাদে রাসূল (দ.) শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানীর (ক.) ৮৩তম খোশরোজ শরীফ দূর দূরান্ত থেকে আসা লাখো ভক্ত জনতার অংশগ্রহণে দেশ ও বিশ্ববাসীর শান্তি-সমৃদ্ধি-কল্যাণ কামনায় আখেরি মুনাজাতের মধ্য দিয়ে আজ ১০ ফেব্র“য়ারি, সোমবার, মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে শেষ হয়েছে।
খোশরোজ শরীফ উপলক্ষে আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া ও হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারীসহ বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচির মধ্যে ছিল সেমিনার, ফ্রী চিকিৎসা ক্যাম্প, ডায়াবেটিস পরীক্ষা, মইনীয়া সাইফীয়া ব্লাড ব্যাংকের উদ্যোগে রক্তের গ্র“প নির্ণয়, মাদকের বিরুদ্ধে গণ স্বাক্ষর, খতমে কোরআন শরীফ, খতমে বোখারী শরীফ, খতমে গাউছিয়া, হুজুর কেবলার দেশ-বিদেশের দুর্লভ চিত্র প্রদর্শনী, জীবনী আলোচেনা, মাইজভাণ্ডার রহমানিয়া মইনীয়া দরসে নেজামী মাদ্রাসা হেফজখানা ও এতিমখানার বার্ষিক সভা, কোরআন হেফজকৃত ছাত্রদের দস্তারবন্দী, ওয়াজ-মিলাদ, আখেরী মুনাজাত ও তবরুক বিতরণ।
ওয়াজ মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন ও মুন্তাজেম, হুজুর কেবলার স্থলাভিষিক্ত আওলাদ, রাহবারে শরীয়ত ও ত্বরীক্বত হযরত শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (মা.জি.আ.) বলেছেন, নবী-ওলী মনীষীদের দেখানো পথই হচ্ছে সঠিক পথ তথা সিরাতুল মুস্তাকিম। যারা এ সহজ সরল সোজা পথে প্রতিষ্ঠিত থেকে সার্বিক জীবন পরিচালনা করবে তারাই পাবে মুক্তির দিশা। ইহজাগতিক কল্যাণ এবং পরকালীন অনন্ত জীবনে মুক্তির দিশা পেতে নবী-ওলী-মনীষীদের দেখানো পথে চলতে হবে। তিনি বলেন, মাইজভাণ্ডারী দর্শন হচ্ছে ঐশী প্রেমবাদ ও মানবতাবাদী দর্শন। এদর্শনে রয়েছে সবার উপরে মানুষ।
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে যাওয়াই মাইজভাণ্ডারী মহাত্মাদের জীবন সাধনার মূল লক্ষ্য। আর মাইজভাণ্ডারী সূফিতাত্ত্বিক মানবতাবাদী দর্শন দেশ ও বহির্বিশ্বে সর্বোত্তমভাবে প্রচারে আজীবন উৎসর্গীত ছিলেন শাহ্সূফী আল্লামা সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (ক.)। দ্বীন, সুন্নিয়ত ও মাইজভাণ্ডারী দর্শন প্রচারে অসাধারণ অবদান রাখেন তিনি। যা আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। খোশরোজ শরীফে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাহ্জাদা সৈয়দ মেহবুব-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী (মা.জি.আ.), শাহ্জাদা সৈয়দ মাশুক-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী (মা.জি.আ.), শাহ্জাদা সৈয়দ হাসনাইন-এ-মইনুদ্দীন আল্-হাসানী (মা.জি.আ.)।
মাহফিলে অতিথি ও আলোচক ছিলেন হযরত সৈয়দ মইনুদ্দীন আহমদ মাইজভাণ্ডারী ট্রাস্টের মহাসচিব আল্হাজ্ব অ্যাডভোকেট কাজী মহসনী চৌধুরী, আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়ার কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অ্যাডভোকেট ওয়াজ উদ্দিন মিয়া, সাধারন সম্পাদক খলিফা আলমগীর খাঁরন মাইজভাণ্ডারী, হযরত মাওলানা ড. গোলাম মোস্তফা মো: নূরুন্নবী আল্-কাদেরী, হযরত মাওলানা হাফেজ সোলাইমান আনসারী, হযরত মাওলানা ড. মুফতী মঈন্দ্দুীন আল-কাদেরী, হযরত মাওলানা মুফতী হাসান আজহারী, হযরত মাওলানা ইসমাইল হোসেন সিরাজী, হযরত মাওলানা আব্দুছ ছাত্তার ছিদ্দিকী, হযরত মাওলানা শেখ আব্দুল্লাহ সাদকপুরী, হযরত মাওলানা বাকের আনসারী, হযরত মাওলানা নঈম উদ্দীন প্রমুখ। মিলাদ ক্বিয়াম শেষে বিশ্বশান্তি, নিপীড়িত মানবতার মুক্তি এবং দেশবাসীর ওপর আল্লাহর রহমত কামনায় মুনাজাত পরিচালনা করেন শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (মা.জি.আ.)। পরে সবার মাঝে তবরুক পরিবেশিত হয়।