পাহাড়ে বৈসাবি উৎসব: ‘করোনা’ আতংকে শহর ছেড়ে গ্রামে
রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা,রামগড়: যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পরও বৈসাবি (বৈসু, সাংগ্রাই, বিজু ও বাংলা নববর্ষ)কে সামনে রেখে পার্বত্য জেলা সমুহে বিভিন্ন শহর হতে ঘরে আসছে বিভিন্ন এলাকার মানুষ। প্রশাসনের নজরদারি ও গনপরিবহন বন্ধ থাকা সত্বেও আগত জনসাধারণকে ঠেকাতে লোকাল প্রশাসন হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
গত ৭ এপ্রিল মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস গণপরিবহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। শুধুমাত্র জরুরী সেবা দানকারী পরিবহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকলেও প্রতিদিন নানা কৌশলে খাগড়াছড়িতে প্রবেশ করছে শতাধিক মানুষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে- ঢাকা-নারায়নগঞ্জ, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা এলাকার লোকজন প্রায় প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ জন করে বাড়ি আসছে। অপর এক জরিপে দেখা যায়, মাইক্রোবাস,অ্যাম্বুলেন্স,ট্রাক, মালবাহী গাড়ী যোগে খাগড়াছড়ি সদর,পানছড়ি, দিঘীনালা, মাটিরাঙা, রামগড় উপজেলায় গত তিনদিনে প্রায় ৩ শতাধিক লোক প্রবেশ করেছে বলে জানাগেছে।
প্রশাসন কর্তৃক আটকে রাখা ঢাকা-নারায়নগঞ্জ থেকে আসা সাধারণ যাত্রীদের অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকার পরও কর্মস্থল বন্ধসহ একদিকে করোনার আতংক , অপরদিকে বৈসাবি (বৈসু,সাংগ্রাই, বিজু ও বাংলা নববর্ষ) কে কেন্দ্র করে তাদের বাড়ি আসার লক্ষ্য বলে জানান।
প্রশাসনিক দায়িত্বরতদের পাশাপাশি করোনা সচেতনতা ও প্রতিরোধ কমিটিসহ যুব রেড ক্রিসেন্ট এর সেচ্ছাসেবকগন স্ব-উদ্যোগে সকল যানবাহন শহরের আনাচে কানাচে প্রতিদিন জীবানু নাশক স্প্রে করণ এবং ত্রাণ সহায়তা প্রদানসহ স্থানীয় কৃষকদের কথা বিবেচনা করে বিশেষ হাঁটবাজার চালু রাখতে সহযোগিতা করছে। ১১এপ্রিল রাতে ঢাকা,নারায়নগঞ্জ,কুমিল্লা, ফেনী হতে মাইক্রোবাস,ট্রাক, রিজার্ভ করে আসা নারী-পুরুষ আগত যাত্রীদের আটকেদেয় প্রশাসন।
এদিকে রবিবার(১২ এপ্রিল) আটকেদেয়া ২৪ জন যাত্রীকে নিজনিজ উপজেলার চেয়ারম্যান ও ইউএনও’র সাথে যোগাযোগের পর রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ,ন,ম বদরুদ্দোজা’র নির্দেশনায় রামগড় স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় স্ব-স্ব বাড়িতে হোম কোয়ারাইন্টানে থাকার পরামর্শ দিয়ে নিজ নিজ গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে ইউএনও আ,ন,ম বদরুদ্দোজা এপ্রতিনিধিকে বলেন- করোনা ভাইরাস রোদে গনপরিবহনসহ জনসাধারন সমাগম বন্ধ থাকলেও প্রতিদিন নানা কৌশলে মানুষ শহরের প্রবেশ মূখ রামগড় হয়ে খাগড়াছড়ি- রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলার গ্রাম গঞ্জে প্রবেশ করছে ।
ঘরমুখি মানুষদের সাময়িক কষ্ট হলেও সকলের মঙ্গলের জন্য যাত্রীদের ঠেকাতে এধরনের ব্যবস্থা করতে হয়েছে বলে জানান। রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ সামসুজ্জামান এ প্রতিনিদিকে বলেন- করোনা ভাইরাস রোধে রামগড় সোনাইপুল শহরের প্রবেশমূখে বসানো হয়েছে বিশেষ চেক পোষ্ট। এদিকে করোনা সচেতনতা ও প্রতিরোধে প্রশাসন, সেনা বাহিনী, পুলিশ বিভাগ, জনপ্রতিনিধি’র পাশাপাশি স্থানীয় সংবাদকর্মীরা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন।