• September 19, 2024

মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে মহালছড়ির মৎস্য চাষীদের ভাগ্য বদলে গেছে

 মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে মহালছড়ির মৎস্য চাষীদের ভাগ্য বদলে গেছে
মহালছড়ি (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি: পার্বত্য অঞ্চলে মৎস্য চাষীদের  জীবন মান উন্নয়নে  মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলায় মৎস্যচাষীদের ভাগ্য বদলে গেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ক্রিক নির্মাণ ও সংষ্কার , বাঁধ ও ড্রেন নির্মাণ, মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপন, চাষীদের মৎস্য চাষ বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদানসহ বিভিন্ন উপকরণ পাওয়ার মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে জেলেরা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে নিজেরা যেমন স্বাবলম্বী হচ্ছেন, তেমনি দেশের মৎস্য সম্পদ উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছে উপজেলার মৎস্যচাষীরা।
প্রকল্পটির কারনে এই অঞ্চলে বেড়েছে মাছের উৎপাদন, হচ্ছে মৎস্য সম্পদের উন্নয়ন, বেড়েছে খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও দারিদ্র্য বিমোচন, হচ্ছে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি।
মহালছড়ি উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে পাওয়া তথ্য মতে জানা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর পর্যন্ত মহালছড়ির ৪ টি ইউনিয়নে মৎস্য বাঁধ ক্রিক প্রকল্পে বাস্তবায়ন হয়েছে ৬ টি, সংষ্কার হয়েছে ১ টি, প্রদর্শনী খামার হয়েছে ৪ টি, দক্ষতা উন্নয়নে মৎস্য চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষণ পেয়েছে ২৮০ জন, কর্মশালা হয়েছে ১ টি, উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে ৬৫ জনের মাঝে। উপজেলায় উক্ত প্রকল্পে সুফলভোগীর সংখ্যা প্রায় দুই শতাদিক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার চৌংড়াছড়ির মৎস্য বাঁধ ক্রিক, রামেন্দ্র প্রসাদ মৎস্য বাঁধ ক্রিক, শ্যামল কান্তি মৎস্য বাধ ক্রিক, বিপুল চাকমা মৎস্য বাঁধ ক্রিক, সুমি রঞ্জন চাকমার মৎস্য বাঁধ ক্রিক ও  আনন্দ কুমার মৎস্য বাঁধ ক্রিক -এ পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে সঠিক পরামর্শ ও প্রশিক্ষণসহ চাষের উপকরণ সামগ্রী পেয়ে তারা মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও নিজেরা স্বাবলম্বী হতে পেরেছেন বলে জানিয়েছে চাষীরা।
মৎস্য চাষী বিপুল চাকমা বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২.৫ একর আয়তনের মৎস্য বাঁধ ক্রিকে মাছ চাষ করে তিনি বছরে প্রায় ২.১০ লক্ষ টাকার মাছ বিক্রি করে থাকেন। তার সাথে আরো সুবিধা পাচ্ছেন ৭ জন সুফলভোগী। তার সফলতা দেখে মৎস্য চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অনেকেই। তার সফলতার জন্য তিনি মহালছড়ি মৎস্য অফিস সহ প্রকল্পের সাথে জড়িত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।
পার্বত্য অঞ্চলে মৎস্য চাষ উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল হাসান বলেন, তিন পার্বত্য জেলার ২৬ টি উপজেলায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মূল স্রোতে নিয়ে আসা ও ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে মৌলিক অধিকার থেকে এ অঞ্চলের মানুষ যেন বঞ্চিত না হয়, সে বিষয়কে মাথায় রেখে সরকারের এই উদ্যোগকে বাস্তবায়নের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা।
মহালছড়ি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.  আশিকুর রহমান  বলেন, দুর্গম এই অঞ্চলে মৎস্য চাষ কখনো সহজ ছিলনা। এ অঞ্চলের মানুষের আগ্রহও তেমন ছিলনা মৎস্য চাষে। তবে প্রকল্পের নানাবিধ সহায়তার ফলে মৎস্য চাষের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে এ অঞ্চলের মানুষের এবং ভাগ্য বদল হয়েছে। ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মানের যে অঙ্গীকার সেই দায়বদ্ধতা থেকে উপজেলা মৎস্য দপ্তর মহালছড়ি কাজ করে যাচ্ছে নিরলসভাবে। উপজেলার মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে যা যা করার দরকার আমরা তা করে যাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও করে যাবো।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post