খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: অশুভ শক্তিকে দূরে রাখতে শঙ্খ আর উলুধ্বনি পঞ্চ প্রদীপে ত্রিনয়নীর শেষ আরাধনায় মত্ত ভক্তরা। ঢাক আর বাদ্যের তালে তালে মত্ত ভক্তরা।
সকালে থেকে ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে দুর্গা দেবীর দশমী পূজার ফুল বেলপাতা দিয়ে এবছরের মতো দেবীকে শেষ অঞ্জলি প্রদান করা হয়েছিলো।
বাজছে এবছরের মতো শেষ বিধায়ের সুর। দুর্গা মাকে শেষ বিধায় জানানতে ভক্তরা রঙিন শাড়িতে কপাল ছুড়ায় রক্তিম সিদুরের আভা। একে অপরকে সিঁদুরের রঙে রাঙিয়ে নারী জাগ্রত হয় তার স্নেহময়ী মাতৃ ও শক্তি রূপে।
দেবীর চরণে সিঁদুর ছুঁয়ে সেই সিদুরের টুকটুকে লালে নারী জাগ্রত করে নিজ আত্ম রক্ষার শক্তি। সিঁদুরেই যেন তার সক্ষমতার অস্ত্র। দশমীতে সেই অস্ত্রের সজ্জিতা নারী।
দর্পণ বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে এক বছরের জন্য পার্বতী ছেড়ে যাবেন মর্ত্যলোকে। তাই মন্ডগুলো মুখরিত ভক্তদের ভালোবাসা ও প্রার্থনায়।
খাগড়াছড়ি জেলা সদরে পূজা মন্ডপের প্রতিমা গুলো বৃহস্পতিবার (০২ অক্টোবর) বিকেলে খাগড়াছড়ি চেঙ্গী নদীতে নিরঞ্জন দেওয়ার জন্য গাড়িতে করে পৌর শহরের পূজা মন্ডপের দুর্গা দেবীর প্রতিমা গুলোকে পৌর শহরের গঞ্জপাড়া এলাকার ব্রিজের নিচে ধর্মীয়র আচার রীতিনীতি অনুযায়ী নিরঞ্জন দেওয়া হয়। এর আগে প্রত্যেকটি পূজা মন্ডপের প্রতিমা নিয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করা হয়।
ঢাকঢোল পিটিয়ে ব্যাপক জাঁকজমকপূর্ণভাবে প্রতিমার নিরঞ্জন কার্যক্রম চলে। এ সময় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল। শ্রী শ্রী লক্ষ্মীনারায়ন মন্দির, জগন্নাথ মন্দির, শান্তি নগর গীতাশ্রম মন্দির, খাগড়াপুর, ঠাকুরছড়া গঞ্জ পাড়া মন্দিরে প্রতিমা গুলো একসাথে চেঙ্গি নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়েছে।
ধর্মপ্রাণ ভক্তরা জানান, মা দুর্গা সকল প্রকার অশুভ শক্তিকে বিনাশ করে আগামীতে সুখের বার্তা নিয়ে আসার প্রত্যাশা ভক্তদের।
খাগড়াছড়ি পৌর শান্তিনগর মন্দিরে সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল দে বলেন, ধর্মীয় রীতিতে এবছর আমাদের পূজোর আনন্দ উৎসব বিসর্জন এর মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিসর্জন পর্যন্ত সহযোগিতা পেয়েছি। সেই জন্য তিনি প্রসাশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেন। এবং আসছে বছর দেবী দুর্গা আবারও মর্তে ফিরবেন শান্তির কোনো বার্তা নিয়ে। সেই কামনায় মর্ত হতে কৈলাসে বিদায় জানাতে আমরা সবাই চেঙ্গী নদীর পাড়ে সমাবেত হয়েছি বলে জানান তিনি।
এবছর দেবী মর্তে এসেছিলেন গজে (হাতি) তে করে আর কৈইলাসে ফিরে যাচ্ছেন দোলায় করে।