খাগড়াছড়িতে ৫ শিক্ষার্থী অপহরণের সপ্তাহ, উদ্ধার অভিযান অব্যাহত

পাহাড়ের আলো: খাগড়াছড়ি শহরের সদর উপজেলার গিরিফুল এলাকা থেকে অপহৃত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা যায় নি ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও। তবে উদ্ধারে যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরিমধ্যে অপহৃত শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে পরিচালিত অভিযানে ইউপিডিএফ (প্রসীত গ্রুপ)-এর জেলা সংগঠক অংগ্য মারমার গোপন অস্তানার সন্ধান পায় যৌথ বাহিনী। এ সময় বিপুল পরিমাণ প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম, গুলি ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দলিল উদ্ধার করা হয়েছে। গত সোমবার ভোর ৫টার দিকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের পূর্ণ চন্দ্র কার্বারী পাড়ায় এই অভিযান চালানো হয়।
গত ১৮ এপ্রিল শুক্রবার ভোর থেকে মধুপুর, পানখাইয়া পাড়া, চাবাই সড়ক ও নোয়াপাড়া এলাকায় টহল ও তল্লাশি কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, অপহৃতদের উদ্ধারে আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি-ঢাকা ও খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে।
আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর একাধিক সূত্র জানায়, তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে অপহৃতদের উদ্ধারে অভিযান চলছে। দুর্বৃত্তরা অপহৃতদের যেসব স্থানে রাখতে পারে এমন সম্ভাব্য স্থান গুলোতে অভিযানের অংশ হিসেবে তল্লাশি করা হচ্ছে। অভিযানে খাগড়াছড়ি রিজিয়নের আওতাধীন সেনাবাহিনীর একাধিক জোন ও জেলা পুলিশের সদস্যরা অংশ নিয়েছেন।
অপহৃতরা হলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য রিশন চাকমা এবং তার চার বন্ধু চারুকলা বিভাগের মৈত্রীময় চাকমা ও অলড্রিন ত্রিপুরা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো। তাঁরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, “ঘটনার পর এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি।
অপহরণের জন্য ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-কে দায়ী করেছে জেএসএস সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপুন ত্রিপুরা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউপিডিএফের জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা। অপহৃত শিক্ষার্থীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছে জনসংহতি সমিতি সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাহাড়ি শিক্ষার্থী ও তাঁদের স্বজনেরা।
উল্লেখ্য,গত ১৬ এপ্রিল বুধবার চাকমা সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় সামাজিক বিঝু উৎসব শেষে খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রামে ফেরার পথে খাগড়াছড়ি গিরিফুল এলাকা থেকে ৫ শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক তুলে নেয়া হয়।