খাগড়াছড়িতে সম্ভাবনাময় সূর্যমুখীর
বিশেষ প্রতিবেদক: পাহাড়ি অঞ্চলে যখন বাড়ছে তামাকের আগ্রাসন, দিনের পর দিন কমছে খাদ্য-শস্য উৎপাদন তখন সূর্যমুখীর চাষ নতুন সম্ভাবনা হিসেবে হাতছানি দিচ্ছে এ জনপদে। এক সময়কার প্রাচুর্যতায় ভরা পাহাড়ি জনপদের কৃষকরা অধিক মুনাফার লোভে তামাকচাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। কিন্তু সরকারের প্রণোদনা ও প্রচারণার কারণে কৃষকরা তামাক চাষ থেকে মুখ ফেরাতে সক্ষম হয়েছেন। ইতোমধ্যে খাগড়াছড়িতে বেড়েছে ইক্ষু, তুলাসহ নানা অর্থকারী ফসলের চাষাবাদ। এছাড়াও তৃণমূল পর্যায়ের অনেক কৃষক তামাকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন।
নতুন ফসল উৎপাদনে চাষিদের উৎসাহিত করতে নিজেই বিকল্প শস্য আবাদে মনোনিবেশ করেছেন দীঘিনালার তৃণমূল কৃষক আব্দুল খালেক। পার্বত্য খাগড়াছড়ির দীঘিনালার জামতলী এলাকায় নিজের বসতবাড়ির আঙিনায় গড়ে তোলেন সূর্যমুখীর বাগান। প্রায় ১৪ শতক জমিতে করেছেন তার এ সূর্যমুখী চাষ।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির পাশেই পতিত জমিতে সূর্যমুখীর বাগান পরিচর্যা করছেন কৃষক আব্দুল খালেক। বাগানজুড়ে হলদে সূর্যমুখীর হাসি। প্রতিটি গাছেই ফুল এসেছে। পুরো বাগান জুড়েই হলুদ-সবুজের সমারোহ। বরগুনা থেকে ৪শ টাকায় ২শ ৫০ গ্রাম সূর্যমুখীর বীজ সংগ্রহ করেই গড়ে তোলেন সূর্যমুখীর বাগান। জানালেন কৃষক মো. আব্দুল খালেক। তিনি বলেন, পারিবারিক কাজে বরিশাল গিয়ে সূর্যমুখীর চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হই। সেই থেকেই সূর্যমুখী বাগান করার পরিকল্পনা এবং বীজ সংগ্রহ করা। তিন মাস বয়সী বাগানের প্রতিটি গাছেই ফুল এসেছে। ফুলের দানাগুলো পরিপক্ক হলেই গাছগুলো শুকিয়ে যাবে। এরপর দানা সংগ্রহ করে তা ঘানিতে ভাঙিয়ে সংগ্রহ করা হবে তেল। ১৪ শতক জমির সূর্যমুখী বাগান থেকে পারিবারিক চাহিদা পূরণ করেও বাড়তি তেল বিক্রি করা যাবে উল্লেখ করে চাষি আব্দুল খালেক বলেন, সূর্যমুখী অনেক লাভজনক শস্য। ফসল মাড়াইয়ের পর তা রোদে শুকিয়ে স্থানীয় মাড়াই কলে ভাঙিয়ে তেল পাওয়া যাবে। প্রায় ৪ কেজি দানা ভাঙিয়ে দুই কেজি তেল পাওয়া যায় বলে জানান তিনি।
খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কৃষি কর্মকর্তা মো. রিয়াজুর রহমান বলেন, সূর্যমুখী দেশে চাষ উপযোগী। তবে পহাড়ে এর আবাদ তেমন হয় না। পাহাড়ের সমতল ভূমি সূর্যমুখী চাষের জন্য বেশ সম্ভাবনাময়। তবে স্থানীয়ভাবে এর বাজার ব্যবস্থাপনা থাকলে কৃষক এটি উৎপাদন করে লাভবান হতে পারবে।