জনদুর্ভোগ লাঘবে লক্ষ্মীছড়ি-বর্মাছড়ি সড়ক নির্মাণে এলাকাবাসীর সহযোগিতা চাইলেন জেলা প্রশাসক

শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার: ২২০বর্গ কি: মি: এলাকা নিয়ে বিস্তৃত খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা। ৩টি ইউনিয়নে মৌজা রয়েছে ১৬টি। কিন্তু এর বিশাল একটি অংশ বর্মাছড়ি ইউনিয়ন। ২০/২৫ কি: মি: পাড়ি দিয়ে এখানকার মানুষ অফিস-আদালত, হাঁট-বাজারসহ নানা কাজে পাঁয়ে হেটে আসে লক্ষ্মীছড়ি সদরে। বর্ষা হলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়ে এখানকার বসবাসরত শত শত মানুষ। লক্ষ্মীছড়ি-বর্মাছড়ি যোগাযোগ মাধ্যম একমাত্র সড়কটি এখনো কাঁচা রয়ে গেছে। বহুকাল ধরেই প্রাণের দাবি এ সড়কটি পাকা করা। কিন্তু অদৃশ্য কারণে এ দাবি পূরণ না হওয়ায় ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে না উপজাতীয় অধ্যুষিত বর্মাছড়ি ইউনিয়নবাসীর। বিগত ২০০১সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি সরকারের আমলে তৎকালীন সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান ওয়াদুদ ভ‚ইয়া পিঁছিয়ে পড়া লক্ষ্মীছড়ি উপজেলাকে এগিয়ে নিতে বর্মাছড়ি সড়কে উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে একাধীক ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। এর পর থেকে উক্ত সড়কে আর কোনো উন্নয়ন কাজ হয় নি।
বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার এলাকাবাসীর দাবি এবং জনদূর্ভোগের কথা চিন্তা করে লক্ষ্মীছড়ি-বর্মাছড়ি সড়ক নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করতে আবারো উদ্যোগ নিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতা এমনটাই জানালেন, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার।

গত ২২সেপ্টেম্বর সোমবার লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সম্প্রীতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে লক্ষ্মীছড়ি-বর্মাছড়ি সড়কের প্রসঙ্গটি ওঠে আসলে উপস্থিত জনতা জেলা প্রশাসকের মুখে এমন সু সংবাদ শোনার সাথে সাথে উপস্থিত শত শত মানুষ হাস্যেজ্জল ভঙ্গিতে কড়তালি দিয়ে অভিভাদন জানান। কিন্তু এই কড়তালির বিপরীতে তিনি এই সড়ক নির্মাণে এলাকাবাসীরই সহযোগিতা চাইলেন। এসময় তিনি বলেন, এই সড়ক নির্মাণে আপনাদের ( এলাকাবাসী) সহযোগিতা ছাড়া বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। একটি অদৃশ্য শক্তির বাঁধা রয়েছে, সেটা আপনারা চাইলে সমাধান করতে পারবেন। সবাই মিলে যদি সহযোগিতা করেন তাহলে আপনাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের পাশাপাশি এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন হবে. এতটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারি। তিনি আরো বলেন, ল²ীছড়ির যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে খারাপ নয়- ঢাকা কিংবা বিভাগীয় শহরে দ্রুত এখানকার মানুষ যাতায়াত করতে পারে। চিন্তার বিকাশ ও মানুষিক পরিবর্তন আনতে হবে। তবে অবকাঠামো উন্নয়ন করা জরুরি উল্লেখ করে বলেন, কিছু সু-খবর আছে, হাসপাতালে ১৫জন নার্স ইতিমধ্যেই পোষ্টিং দেয়া হয়েছে লক্ষ্মীছড়িতে। আপনাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিত রেষ্ট হাউসের ভবন নির্মাণ কাজ খুব শিগ্রই চালু হবে। খাদ্য গুদামসহ আরো বেশ কিছু অপকাঠামো নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন হবে বলে তিনি আশ্বস্থ্য করেন।

জেলা প্রশাসক লক্ষ্মীছড়ি আইন-শ্খৃলা পরিস্থিতি অনেক ভালো আছে উল্লেখ করে বলেন, আমরা লক্ষ্মীছড়ি নিয়ে খুব একটা চিন্তিত থাকি না। এলাকা ভালো রাখার দায়িত্ব আপনাদের উপর ছেড়ে দিলাম। শান্ত পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। শান্তি ও সম্প্রীতি থাকলে অবশ্যই এলাকার উন্নয়ন হবে লক্ষ্মীছড়ি অনেক এগিয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে সকল সম্প্রদায়ের মানুষের একে অপরের আন্তরিকতার মধ্য দিয়ে সমাজে শান্তি, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল। সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেটু কুমার বড়ুয়া। সভায় স্থানীয় রাজনৈতিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তি, সকল সম্প্রদায়ের ধর্মীয় গুরু, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।