মাইজভান্ডারী ত্বরিকা ইসলামের আদর্শ ও সংস্কৃতির মেল বন্ধনের চূড়ান্ত আধ্যাত্মিক রূপ
ফটিকছড়ি প্রতিনিধি: দেশ-বিদেশের লাখো ভক্তের উপস্থিতিতে আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে মাইজভান্ডার দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী হযরত মওলানা শাহ ছুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক.) প্রকাশ হযরত কেবলার ১১৩তম ওরশ শরীফ। বুধবার রাতে আখেরী মোনাজাতে গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন হযরত মওলানা শাহ ছুফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারী (ম.)। মোনাজাতে দেশ ও জাতির কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারী (ম.)।
এসময় তিনি বলেন, ‘অলিগণ রাসূলের প্রতিনিধি। তাদের কারণে ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলাম প্রচার ও প্রসার লাভ করেছে। ইসলামের ক্রাান্তিলগ্নে সবসময় ছুফী সাধকরাই ধর্মের আধ্যাত্মিক ও শরীয়তের অবকাঠামোর রক্ষকের ভূমিকায় অবর্তীর্ণ করেছেন এবং ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসারের পাশাপাশি ইসলামের মৌলিক আদর্শ ও বিশ্বাসের সাাথে সমাজ সংস্কৃতির নৈতিক সংস্কারে আধ্যাত্মিক পূর্ণতা লাভের কারিগর হিসেবে কাজ করে আসছেন।’
সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারী বলেন, ‘গাউছুল আজম মাইজভা-ারী শাহ ছুফী সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক.) মাইজভান্ডারী ত্বরিকা প্রবর্তন করেছেন। মাইজভা-ারী ত্বরিকা ইসলামের মৌলিক আদর্শ ও আঞ্চলিক সংস্কৃতির মেল বন্ধনের চূড়ান্ত আধ্যাত্মিক রূপ। এ ত্বরিকার অনুসারীরা ঐশি প্রেম নির্ভর শিক্ষা ও ইসলামী শরীয়ত ভিত্তিক চর্চায় কার্যকর ভূমিকা রাখছে।’
আখেরী মুনাজাতে উপস্থিত ছিলেন গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের নায়েব সাজ্জাদানশীন ও মাইজভা-ারী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভা-ারী (ম.), সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, খান এগ্রো প্রোডাক্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দুল হক খান, মাইজভান্ডারী ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন সৈয়দ সোহেল হাসনাত, কো-চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম চৌধুরী। আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভান্ডারী (শাহ এমদাদীয়া) কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের সচিব শেখ মুহাম্মদ আলমগীরের পরিচালনায় ওরশে মিলাদ পরিচালনা করেন দারুততায়ালীম প্রধান শিক্ষক মওলানা জয়নাল আবেদীন ছিদ্দিকী।
গাউছিয়া আহমদিয়া মঞ্জিলের সাজ্জাদানশীন শাহ ছুফী সৈয়দ এমদাদুল হক মাইজভান্ডারী (ম.)’র আয়োজন ও ব্যবস্থাপনায় ভক্তরা মাজারের আশপাশ ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী ক্যাম্পে অবস্থান নেন। তাঁরা মাজার জেয়ারত, বিশেষ মোনাজাত, জিকির, জিকিরে ছেমাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সময় করেন। বাংলাদেশ ছাড়াও এ বছর ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও ওমানসহ নানা দেশ থেকে অসংখ্য ভক্ত-অনুরক্ত অংশ নিয়েছেন। এছাড়া ওরশ উপলক্ষে রক্তদান কর্মসূচি, শিক্ষামেলা, বৃত্তিপ্রদান, গ্রিন ও ক্লিন মাইজভান্ডার, সুধী সমাবেশ ও তাসাউফ সংলাপসহ ১০ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আঞ্জুমানে মোত্তাবেয়ীনে গাউছে মাইজভান্ডারী (শাহ এমদাদীয়া), মাইজভান্ডারী ফাউন্ডেশন, মাইজভান্ডারী শাহ এমদাদীয়া ব্লাড ডোনার্স গ্রুপ, মাইজভান্ডারী শাহ এমদাদীয়া সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কমিটি। গাউছুল আজম মাইজভান্ডারীর ওরশ উপলক্ষে পৃথক বাণী প্রদান করেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে সুষ্ঠুভাবে ওরশ সমাপ্ত করতে সহযোগিতা করায় ফটিকছড়ি উপজেলা প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, স্বেচ্ছাসেবকেেদর ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান সৈয়দ ইরফানুল হক মাইজভান্ডারী (ম.)।