মানিকছড়ি সরকারি কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: সদ্য সরকারি হওয়া মানিকছড়ি গিরিমৈত্রী সরকারি ডিগ্রী কলেজ এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দায়িত্বগ্রহণে জ্যেষ্ঠতা লংঘন ও নিয়মবর্হিভূত ভাতা গ্রহণ, জি.ও জারির পর মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে কলেজ ফান্ড থেকে ভূয়া বিল ভাউচারে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন করা, অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ ও স্বেচ্ছাচারিতার নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইতোমধ্যে একাধিক শিক্ষক লাঞ্চনার শিকার হয়েছেন। সরকারি বেতনে অধ্যক্ষ স্বাক্ষর না করায় প্রতিষ্ঠানে নেমে এসছে স্থবিরতা। ব্যাহত হওয়ার আশংকা পাঠদান।

অভিযোগে প্রকাশ, উপজেলার একমাত্র মানিকছড়ি গিরিমৈত্রী ডিগ্রী কলেজটির সাবেক অধ্যক্ষ মো. এনামুল হক অবসরে যাওয়ার পর ১৯ জানুয়ারী ২০১৬ সালে কলেজের ৬ জন সিনিয়র সহকারি অধ্যাপকের জ্যেষ্ঠতা লংঘন করে মংচাইঞো মারমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ করেন তৎকালীন গর্ভনিং কমিটি। নিয়োগের পর হতে সরকারি (এম.পি.ও)বেতন-ভাতার পাশাপাশি কলেজ ফান্ড থেকে প্রতি মাসে ২১ হাজার টাকা সন্মানি গ্রহণকরছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মংচাইঞো মারমা। এছাড়া শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফি, উপবৃত্তির টাকা আত্মাসাৎ করার অভিযোগে তদন্তে (ইউ.এন.ও অফিস স্মারক নং ০৫.৪২.৪৬৬৭.০০০.০৪.০২২.১৭.৭১৩ তাং ০১.০৮.২০১৭ ইং মূলে) সাড়া না দিয়ে অধ্যক্ষ দিব্যি কলেজে একনায়কতন্ত্র চালিয়ে আসছে।

২০১৮সালের ৮ আগস্ট তারিখে কলেজটি সরকারিকরণের জি.ও জারি হয় এবং ২৭ আগস্ট সরকারি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে পূর্বের গর্ভনিং কমিটি বাতিল ও সমস্ত আর্থিকসহ অন্যান্য কার্যাবলী সম্পাদনে উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও’কে দায়িত্ব প্রদান করে চিঠি ইস্যু করেন শিক্ষা মন্ত্রনালয়। কিন্তু কলেজ অধ্যক্ষ ওইসব নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে মাউশি অধিদপ্তরের স্মারক নং-৭এ/০৯/সি-২/২০১৩/৫৬৩৯(ক)/৫ তাং- ৩০.৬.২০১৬ ইং মূলে কলেজ জাতীয়করণের লক্ষ্যে নিয়োগ,স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর ও অর্থ ব্যয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও কলেজ অধ্যক্ষ ওই নির্দেশনা অমান্য করে খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ, বেতন-ভাতা বৃদ্ধি,উন্নয়নের নামে অর্থ হরিলুট এবং অর্থ কমিটির স্বাক্ষর বিহীন গত ১ অক্টোবর বিলুপ্ত কমিটির স্বাক্ষরে ৪ লক্ষ ৪০হাজার ৩ শত ৫৮ টাকা কলেজ হিসাব নং ১২২৫ বি.কে.বি মানিকছড়ি শাখা থেকে উত্তালন করেন কলেজ অধ্যক্ষ মংচাইঞো মারমা! কলেজ অধ্যক্ষের ধারাবাহিক অপকর্ম,অন্যায়,দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ৯ অক্টোবর কলেজ প্রর্দশক নাহিদা আক্তার ও প্রশান্ত বিশ্বাস অশোভণ আচরণ,গালমন্দের শিকার হয়েছেন। ফলে এ ঘটনা প্রতিবাদ, কলেজ অধ্যক্ষের অপকর্ম,অনিয়ম,দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা বিচার চেয়ে গত ১০ অক্টোবর জেলা প্রশাসক এবং দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন কলেজ শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

এদিকে গত ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত কলেজ শিক্ষক/শিক্ষিকা ও কর্মচারীদের সেপ্টেম্বর মাসের সরকারি (এম.পি.ও)বেতন-বিলে স্বাক্ষর করেননি অধ্যক্ষ মংচাইঞো মারমা। ৯ অক্টোবর ছিল বেতন উত্তোলনের শেষ তারিখ।

এ প্রসঙ্গে জানতে কলেজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মংচাইঞো মারমার মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাঁর সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

কলেজ গর্ভনিং কমিটির বর্তমান সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে পূর্বের ইউএনও’দের রির্পোট সংযুক্ত করে বর্তমান অভিযোগটি জেলা প্রশাসক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হলে বিধি অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post