‘সাহিত্যের আলোয় বহু সংস্কৃতি’ প্রতিপাদ্যে বৈচিত্র্যের মিলনমেলা

শেয়ার করুন

খোকন বিকাশ ত্রিপুরা জ্যাক:‘সাহিত্যের আলোয় বহু সংস্কৃতি : সৃজনে উৎসবে বৈচিত্র্যের ঐকতান’, এই প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে উৎসবমুখর ও বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে খাগড়াছড়ি জেলা সাহিত্য পরিষদ দিনব্যাপী সাহিত্য উৎসব উদযাপন করেছে। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা সদরের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের অডিটোরিয়ামে সভাপতি প্রফেসর বোধিসত্ত্ব দেওয়ানের সভাপতিত্বে শুরু হয় এই মহোৎসব।

প্রধান অতিথি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা ঐতিহ্যবাহী প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন,
“খাগড়াছড়ি বহু জাতির, বহু ভাষার, বহু রঙের এক সুন্দর মিলনভূমি। সাহিত্য সে বৈচিত্র্যকে একসূত্রে গাঁথে। আজকের প্রজন্মকে মানবিক, উদার ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ করে তুলতে সাহিত্য উৎসব অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি—সবাই মিলে আমরা চাই এই পাহাড়ে শান্তি, শিল্প আর সাহিত্যের আলো আরও ছড়িয়ে পড়ুক।”

উদ্বোধনের পর ‘গিরিধারা’ সাময়িকীর তৃতীয় সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এরপর অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও গবেষক হাফিজ রশিদ খান। তিনি বলেন,
“সাহিত্য শুধু অনুভূতির প্রকাশ নয়—এটি সমাজের বিবেক। এখানে সংস্কৃতির দেয়াল ভেঙে মানুষ মানুষের কাছে আসে। পাহাড়ের বহুসংস্কৃতির জীবনকে সাহিত্যই আরও মানবিক ও শক্তিশালী করে তুলতে পারে।”

বক্তারা বলেন, “বৈচিত্র্যময় এই পাহাড়ে সাহিত্য চর্চাই পারে বিভেদ ভুলিয়ে ঐক্য ও সৃজনশীলতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে।
আলোচনা পর্ব শেষে ৫ জন কবি-সাহিত্যিককে দেওয়া হয় গিরিধারা সাহিত্য পুরস্কার। প্রতিনিধিত্বশীল সাহিত্যচর্চা, সৃজনশীলতা ও স্থানীয় সংস্কৃতিতে অনন্য ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন, জেলা পরিষদের সদস্য প্রশান্ত কুমার ত্রিপুরা, শহিদুল ইসলাম সুমন, জয়া ত্রিপুরা, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক দীনময় রোয়াজা এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক ঞ্যো হ্লা মং।

সার্বিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আদনান। সারাদিনব্যাপী আবৃত্তি, আলোচনা, মুক্তমঞ্চ পাঠ, সম্মাননা প্রদান ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় উৎসবটি পরিণত হয় সাহিত্যপ্রেমীদের এক প্রাণবন্ত মিলনমেলায়।