• November 21, 2024

করোনাকুণ্ডে পরিণত হবে না তো প্রিয় খাগড়াছড়ি?

।। এ এইচ এম ফারুক ।।

হনুমানের লেজের আগুনে রাজ্যময় করোনাকুণ্ডে পরিণত করবেন না খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মহোদয়। দ্বিমুখিতা করবেন না প্লিজ। আইনকে যথাযথ ভাবে প্রয়োগ করুন। সঠিক একটা গাইড লাইনের মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দিন।

বর্ডার অতিক্রমের আশায় প্রতিদিন সকাল থেকে আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ির সন্তান-ভাই-বোন-বন্ধুরা এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন/থাকছেন। হ্যাঁ, বর্ডারই। এখন দেশের প্রত্যেকটা উপজেলা থেকে অন্য উপজেলাও বর্ডারসম। কিন্তু রোদ-বৃষ্টিতে এভাবে তাদের অবস্থান নেয়ার মুখোমুখী পরিস্থিতিতে দাঁড় করালো কে? আমাদের রাষ্ট্র-জেলা প্রশাসন?

আপনারা এদের খাগড়াছড়ির প্রবেশমুখ রামগড় ও মানিকছড়িতে আটকে দিচ্ছেন। আটকানোর বিরোধিতা করছি না। এতোদিন দেদারছে ঢুকিয়েছেন, সেটারও বিরোধীতা করিনি। কিন্তু সঠিত গাইড লাইন নেই কেনো? খাগড়াছড়ির প্রবেশ পথে আসতে পাশের জেলা চট্টগ্রাম থেকে অন্তত অর্ধশত কিলোমিটার পাড়ি দিতে হয়। কিন্তু এই দীর্ধ পথে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ-জেলা পুলিশ কী করছেন? তারা কী করে ছাড়লো। নাকী এখানেও ঘুষ লেনদেন হচ্ছে?

আজ সেখানে পুলিশ তাদের (অধিকাংশ শ্রমিক) বেদড়ক পিটিয়ে আহত করেছে। আপনারা কেন বুঝার চেষ্টা করছেন না! মাত্র কয়দিন আগে আমেরিকার-জাপানসহ অনেক দেশ তাদের নাগরিকদেরকে বিশেষ বিমান ভাড়া করে নিজ দেশে নিয়ে গেছেন। পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হয়েছে আমাদের সরকারকে।
এইতো কদিন আগে (বুধবার) সৌদি আরব থেকে দুইশ ৩৪ জনকে বিশেষ বিমানে করে দেশে আনা হয়েছে।

এমন দুর্দিনে মা-বাবা-পরিবার চায় সন্তানদের কাছে পেতে আর সন্তানরাও চাইবে মা-বাবা-পরিবারের কাছে যেতে। এটা স্বাভাবিক নয় কী?

এছাড়া এমন দুর্দিনে বেতন-চাকরি কোনোটাই নেই, তারা খাবে কী? বাসা ভাড়া দেবে কোথা থেকে। আপনারা-রাষ্ট্র কি তাদের খাবারের সংস্থান করেছেন? বাসা ভাড়ার ব্যবস্থা করেছেন? তো?

প্লিজ শুধু অর্ডার দিয়ে দায়িত্ব শেষ করবেন না খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মহোদয়। আপনি পাশের জেলার প্রশাসনের সঙ্গে, অপনার অধীন উপজেলাগুলোর সঙ্গে কার্যকর সমন্বয় করুন। ঢাকা-চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ-গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাদের খাগড়াছড়ির বর্ডার পর্যন্ত আসা বন্ধ করুন। যারা অনেক কষ্ট স্বীকার করে ঘাটে ঘাটে ঘুষ দিয়েও জেলার বর্ডারে আসছেন তাদের স্বস্ব এলাকায় পৌঁছানোর পদক্ষেপ নিন। তাদের এলাকায় প্রতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টাইনের বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করুন।

আপনি দায় এড়াতে পারেন না জেলা প্রশাসক মহোদয়। কারণ, এসব আপনার দায়িত্বের বাইরে নয়।

মনে রাখবেন, আপনার প্রশাসন এদের খাগড়াছড়ির প্রবেশ মুখে আটকে দিচ্ছেন ঠিকই। এরা কিন্তু মেইন রোড ছাড়াও গ্রামের রাস্তা, পাহাড়ি ঝিড়ি-ছড়ার পথ চিনে। না চিনলেও চিনে নিয়ে ৩/৪ দিন লাগিয়ে হলেও বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাড়ি পৌঁছাবে ঠিকই। কিন্তু ততক্ষণে হনুমানের লেজের আগুনে রাজ্যময় (জেলাময়) করোনাকুণ্ডে পরিণত হয়ে যাবে।

লেখক: সংবাদকর্মী।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post