লামায় আওয়ামীলীগ-বিএনপির পাল্টা পাল্টি হামলার অভিযোগ
লামা(বান্দরবান) প্রতিনিধি: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবানের লামায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে পাল্টা পাল্টি হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দাবি, রোববার দিবাগত রাতে উপজেলার ফাইতং, আজিজনগর ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে প্রচারের সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা করেছেন। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, নিজেরা নিজেদের গাড়ী ভাংচুর ও মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন। তবে পৃথক তিন হামলার ঘটনার মধ্যে ফাইতং ইউনিয়নের ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। এ মামলায় দু’জনকে পুলিশ আটক করেছেন।
ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হোসেন মামুন অভিযোগ করে বলেন, হায়দারনাশী হিন্দু পাড়া কালী মন্দিরের সামনে উঠান বৈঠকের জন্য টমটম করে মাইকিং করছিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৮নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন (৪৫) ও কেশিয়ার আব্দু শুক্কুর (৪২)সহ ৩-৪ জন। মাইকিং করে তারা অংশাঝিরি এলাকায় গেলে হায়দারনাশীর কবির আহমদের ছেলে খোরশেদের নেতৃত্বে বিএনপির ৭-৮জন সংঘবদ্ধ হয়ে নেতাকর্মীর ওপর আতর্কিতভাবে হামলা করে। এতে তারা আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। হামলাকারীরা টমটম গাড়ি, মাইক, মাইকের সরঞ্জাম ভাংচুর ও নৌকা মার্কার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। ফাইতং ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি থোয়াইচানু মার্মা বলেন, দলীয় প্রচারণা শেষে বাড়ি ফেরার পথে ইউনিয়নের বুড়ি চিকনঘোনা এলাকায় ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের আহবায়ক মো. শাহেদ (৩৫) ও সদস্য সচিব আব্দুর রশিদের (৪৫) ওপর আলী হায়দার মানিকের নেতৃত্বে অতর্কিত হামলায় চালায় বিএনপির ১৫-২০ জন নেতাকর্মী। এসময় শাহেদ ও রশিদকে মারধর করা হয় এবং শাহেদের মোটর সাইকেলটি আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয় হামলাকারীরা। আজিজনগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দীন বলেন, জীপযোগে নৌকার সমর্থনে প্রচারণা চালানোর সময় আজিজ নগরের ৮ নং ওয়ার্ডের বাছুরি পাড়া এলাকায় তাদের গাড়ি লক্ষ্যে করে ইটপাটকেল ছুড়ে সন্ত্রাসীরা। এতে গাড়ির আয়না ভেঙ্গে ও প্রচার মাইক নষ্ট হয়ে যায়। এ সময় আমিসহ গাড়ীতে থাকা প্রচার কর্মি যুবলীগ নেতা মোস্তাক আহামদ, যুবলীগ নেতা রুবেল,আজিজনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক কবির আহামদ খোকন আহত হন।
পৃথক হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, নৌকা মার্কার গণজোয়ার দেখে বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন হামলার পথ বেছে নিয়েছে। এদিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আমির হোসেন জানান, অল্প সময়ের ব্যবধানে পরিকল্পিত ও রহস্যজনকভাবে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন নিজেরা ভাংচুর ও মোটর সাইকেল পুড়িয়ে এবং মাইক ভেঙ্গে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করে হয়রানি করেছে। হামলার ঘটনায় বিএনপির কোন নেতাকর্মী কিংবা সমর্থক জড়িত নয়। বরং আওয়ামী লীগের পরিকল্পিত এসব ঘটনার কারণে নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাহী অফিসারকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অন্যের বিরুদ্ধে পাল্টা পাল্টি অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, এ বিষয়টি পুলিশ দেখছেন। পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. লেয়াকত আলী বলেন, ফাইতং ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রচারনায় হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। অপর দুই হামলার ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।