সাড়ে ৪শ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন: ব্লক স্থাপনে পাল্টে গেছে রাঙ্গুনিয়ার নদী পাড়ের চিত্র
শান্তি রঞ্জন চাকমা, রাঙ্গুনিয়া: নদীভাঙ্গন রোধে রাঙ্গুনিয়ায় চলতি অর্থবছর প্রায় সাড়ে ৪শ কোটি টাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ডাম্পিং ও সিসি ব্লক স্থাপনে পাল্টে গেছে নদী পাড়ের সার্বিক চিত্র। প্রকল্প বাস্তবায়ন এলাকায় শতশত মানুষ ছুঁটে যাচ্ছেন। ব্লকের উপর বসে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করছে বিনোদনপ্রেমীরা। ব্লক স্থাপনে নদীপাড়ের হাজার হাজার মানুষ উল্লাস প্রকাশ করছেন।
সরেজমিন পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চন্দ্রঘোনা, বেতাগী, সরফভাটা, পোমরা, পৌরসভা, মরিয়মনগর, কোদালা ইউনিয়নসহ রাঙ্গুনিয়ার সংসদীয় এলাকা বোয়ালখালী উপজেলার আংশিক এলাকায় ডাম্পিং ও সিসিব্লক স্থাপন কার্যক্রম চলছে। কর্ণফুলী নদীর বিভিন্ন স্পটে ভাঙন প্রতিরোধে ৪৫৮ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দে ‘গোলাম রাব্বানী কনস্ট্রাকশন’ প্রতিষ্টানটি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
পোমরা ইউনিয়নের জেলে জলদাশ বলেন, কর্ণফুলী নদী ভাঙনে শত শত পরিবার বাপ-দাদার পৈত্রিক ভিটামাটি হারিয়ে পথে বসেছে। নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ ভাঙনের মুখে পড়ে নিঃস্ব হয়ে সহায়-সম্বল হারিয়েছেন অনেকেই। ধারাবাহিক ভাবে কর্ণফুলী নদীর ভাঙন অব্যাহত ছিল। রাক্ষুসে কর্ণফুলী নদীর গর্ভে শতশত বাড়িঘর বিলীন হয়ে গেছে। চন্দ্রঘোনা ফেরীঘাট আমতলী গ্রামবাসী জানায়, স্থানীয় সাংসদ, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়ায় নদীপাড়ের মানুষের ভাগ্য বদলে গেছে। যেখানে মানুষের ভিটেমাটি হারানো হাহাকার ছিল প্রতিনিয়ত, সেই নদীর পাড় এখন মানুষের অবকাশ যাপনের উত্তম স্থানে পরিণত হয়েছে।
মরিয়মনগর গ্রামের মো. নুরুল ইসলাম বলেন, চন্দ্রঘোনা, কোদালা থেকে শুরু করে রাঙ্গুনিয়ার শেষ সীমান্ত বেতাগী পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর দুই পাড় যেন এক অপরূপ প্রাকৃতিক পর্যটন স্পট। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক খুলতেই দেখা মেলে নদীপাড়ে সাধারণ মানুষের সময় কাটানোর চিত্র। যেই নদীর পাড়ে একসময় ভয় আর উৎকণ্ঠা নিয়ে মানুষ দিন কাটাতেন, সেখানে এখন মানুষ নিশ্চিন্তে দিন কাটাচ্ছেন। পাল্টে গেছে নদীপাড়ের মানুষের ভাগ্য।
এদিকে সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হওয়ায় তথ্যমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নদী ভাঙনকবলিত এলাকার হাজার হাজার মানুষ। মানুষের দাবির চাইতেও বেশি প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে উল্ল্যেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুসসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন এসব এলাকার মানুষ। এরই মধ্যে অধিকাংশ স্থানে ব্লক স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। ব্লক স্থাপনের পর পাল্টে গেছে নদী পাড়ের সাধারন মানুষের ভাগ্য।
কর্ণফুলীর স্বচ্ছ জলরাশির সাথে নদীপাড়ের গভীর সখ্যতা এখন চোখে পড়ার মতো। ব্লক স্থাপনের আওতায় আসা প্রতিটি এলাকা রূপ নিচ্ছে একেকটি পর্যটন এলাকা হিসেবে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্লকের ওপর বসে বিভিন্ন দূর-দূরান্তের মানুষ নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসতে দেখা যাচ্ছে।