কাঠ পাচার থেমে নেই রাঙ্গুনিয়া পোমরা বনবিটে, বৃক্ষ শুন্য হচ্ছে

শান্তি রঞ্জন চাকমা, রাঙ্গুনিয়া: চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের পোমরা বিটের বন উজার করে কাঠ পাচারের মহোৎসব চলছে। সামাজিক বনায়ন ও সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অবৈধভাবে শতশত কাঠুরিয়া মূল্যবান গাছ কেটে অবৈধ গড়ে উঠা স্থানীয় করাতকল (স’মিল) মজুদ করছে। বনায়নের অপরিপক্ক কচি গাছ বিভিন্ন ইটভাটায় পাচার করা হচ্ছে। রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে গোল, রদ্দা ও ছিড়াই কাঠ পোমরা বিট সড়ক হয়ে বিভিন্ন পরিবহনে ওপেন সিক্রেট পাচার হচ্ছে।

রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের পোমরা বিটে বিশাল এলাকা জুড়ে সেগুন, গামারী, আকাশমনি, গর্জন, চাপালিশ সহ বিভিন্ন প্রজাতির লক্ষ লক্ষ গাছ রোপন করা হয়। পোমরা বনবিভাগের অনিয়ম, দূর্নীতি ও অবহেলার কারনে গত কয়েকবছরে মূল্যবান বনাঞ্চল উজার শুরু হয়। বনদর্স্যুদের বেপরোয়া কাঠ পাচারের কারনে বনাঞ্চল বৃক্ষ শুন্য হয়ে পড়ছে। বনাঞ্চলে কাঠচোরদের উৎপাত দিনদিন বৃদ্ধি পেয়েছে।

পোমরা মাল্যেরহাট এলাকার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বনাঞ্চল উজার করার পর প্রভাবশালীরা বন বিভাগের জায়গা দখলে নেয়। নদীভাঙ্গা মানুষ ও রোহিঙ্গাদের কাছে চড়া মূল্যে এসব জায়গা বিক্রি করছে চক্রটি। স্থানীয় এক মেম্বারের নেতৃত্বে একাধিক সিন্ডিকেট পোমরা বিটকে ম্যানেজ করে শতশত একর সরকারী জমি ক্রয়-বিক্রয় করছে। বেপরোয়া বন উজারের কারনে পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে।

পোমরা শান্তিরহাটের ওসমান গণি বলেন, রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন চোরাই কাঠের আড়ত থেকে কর্ণফুলী নদীপথে এনে বেতাগী সড়ক, শান্তিরহাট-মাল্যেরহাট সড়ক, গোচরা সড়ক, ভবানি সড়ক ও কাপ্তাই-চট্টগ্রাম হয়ে বিভিন্ন যানবাহনে চোরাইকাঠ চট্টগ্রামে পাচার হচ্ছে। বনবিভাগকে ম্যানেজ করে এসব চোরাই কাঠ বিনাবাধাঁয় রাজস্ব ছাড়া পাচার হয়ে যাচ্ছে। এতে বনবিভাগের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবৈধ আয় বাড়লেও সরকার প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।

ট্রাক চালক মোহাম্মদ করিম বলেন, শতশত কাঠুরিয়া বিভিন্ন বনাঞ্চলে কাঠ আহরন শুরু করেছেন। এসব আহরিত কাঠ ইটভাটায় সরবরাহ হচ্ছে। রাঙ্গুনিয়ার ইটভাটার মালিকরা ইতোমধ্যে কাঠ সংগ্রহ শুরু করছেন। প্রতি মৌসুমে একটি ইটভাটায় হাজার হাজার ঘনফুট জ¦ালানি কাঠ পুঁড়ানো হয়। সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও সামাজিক বনায়ন উজার করে প্রতিরাতে এসব কাঠ পাচার হচ্ছে। স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, চোরাইকাঠ পাচারের সাথে পোমরা বনবিভাগের কর্মচারী কথিত ক্যাশিয়ার সাইফুল ইসলাম জড়িত থাকায় কাঠ পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না। পোমরা বিটের বন প্রহরী (এফজি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন চোরাই পয়েন্টে কাঠ পাচার চলছে। অফিস খরচ ও উর্দ্ধতন মহলকে ঘুষ দিতে হয় বলে চোরাইকাঠ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থনৈতিক সুবিধা নেয়া হয়।

Read Previous

লামায় বজ্রপাতে একই পরিবারের একজন নিহত, আহত ২

Read Next

স্বপ্ন, সম্ভাবনা ও উন্নয়নের আরেক নাম শেখ হাসিনা -কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা