খাগড়াছড়িতে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে পালিত হচ্ছে বুদ্ধ পূর্ণিমা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যদিয়ে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে খাগড়াছড়িতে নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পালিত হচ্ছে বৌদ্ধধর্মালম্বীদের পবিত্রতম উৎসব ‘ শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা’। খাগড়াছড়ি জেলা সদরসহ খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলায় বৌদ্ধ বিহারগুলােতে প্রস্তুতি নিয়েছে বৌদ্ধ ধর্মীলম্বীরা।

১৮ মে শনিবার সকাল থেকে খাগড়াছড়ির বৌদ্ধ বিহারগুলোর সামনে ছিল সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের নিরাপত্তা বলয়। বৌদ্ধ বিহারগুলােতে পুণ্যার্থীরা পুজা দেওয়ার উদ্দ্যেশ্য সমবেত হয়।দেশ ,জাতি ও মানুষের কল্যাণ কামনায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে। এছাড়া ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ভিক্ষু সংঘকে ভক্তরা পিন্ড দান করেন। এসময় বৌদ্ধ উপাসক উপাসিকরা পঞ্চশীল ও অষ্টশীল গ্রহণ করে। বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে ধর্মীয় আলােচনা সভার আয়ােজন করা হয়েছে।

বৌদ্ধ ধর্মের প্রচারক গৌতম বুদ্ধের জন্ম, মৃত্যু ও বুদ্ধত্ব লাভের স্মৃতিবিজড়িত তিথি হিসেবে বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ উপলক্ষে সকাল থেকে বিহারে বিহারে ফুল পূজা, অষ্ট পরিস্কার দান, বুদ্ধ মূর্তি দান, শীলগ্রহণসহ নানা ধর্মীয় আচার রীতি পালন করছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা ও সন্ধ্যায় আকাশ প্রদীপ প্রজ্জলনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনব্যাপী আনুষ্ঠানিকতা। বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন কোন প্রকার নাশকতা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সারাদেশের ন্যায় খাগড়াছড়ির প্রশাসনও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। খাগড়াছড়ির প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে পুলিশ ও আনসার সদস্যের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহলে রয়েছে।

জেলা শহরের আর্য বন বিহার পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তা উচিৎময় চাকমা বলেন, কল্যাণপুর মৈত্রী বৌদ্ধ বিহারের সাধারণ সম্পাদক জীতেন বড়ুয়া বলেন, সরকার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উৎসব নিরাপদে ও শঙ্কামুক্ত করতে যে উদ্যোগ নিয়েছে এতে আমরা খুশি। খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এমএম সালাহউদ্দিন বলেন, খাগড়াছড়ির ৯ উপজেলায় ৪ শতাধিক বৌদ্ধ বিহারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি অতিরিক্ত ফোর্স ও তল্লাশী চৌকি বসানো হয়েছে। মাঠপর্যায়ে গোয়ান্দা নজরদারীও রয়েছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ম্রাসাথোয়াই মারমা জানান, ধর্মীয় আচার অনুযায়ী দিনব্যাপি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল থেকে বৌদ্ধ পুণ্যার্থীরা মন্দিরে এসে পুজা দিচ্ছেন। এছাড়া বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় বিকেলে জেলাশহরের শতবর্ষী ‘য়ংড বৌদ্ধ বিহার’ থেকে বর্ণিল শোভাযাত্রা বের করা হব। এবং দিনব্যাপি এই আয়োজনে নিরাপত্তা বাহিনী নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

জেলা শহরে ৪ শতাধিক অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া জেলার শতাধিক বিহার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তোষ করেছেন পুণ্যার্থীরা। সন্ধ্যায় প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে প্রজ্জলিত হবে অসংখ্য মাঙ্গলিক প্রদীপ। উড়ানো হয় আকাশ প্রদীপ বা ফানুস বাতি।

Read Previous

মাহে রমজানের সওগাত-১২

Read Next

লক্ষ্মীছড়ি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম চলছে