নানা অনিয়মের অভিযোগে মানিকছড়ি নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মিছিল-সমাবেশ

মানিকছড়ি প্রতিনিধি: জেলার মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাচন কমকর্তা মো. আরাফাত আল হোসাইনী’র বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষজনকে ভোটার হালনাগাদ, স্থানান্তর ও সংশোধনে হয়রানী ও জনপ্রতিনিধি’র সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে নির্বাচন অফিস ঘেরাও সমাবেশ করেছে বিক্ষোব্ধ জনতা। ১২ নভেম্বর উপজেলা সদরে এ বিক্ষোভ মিছিল করে স্থানীয় ভুক্তভোগী জনসাধারণ। পরে উপজেলা প্রশাসন ও অভিযোগ তদন্তে আসা উর্ধ্বতন নির্বাচনী কর্মকর্তার আশ্বাসে বিক্ষোভ সমাবেশ সাময়িক স্থগিত করেন ভোক্তভোগী জনতা।

সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আরাফাত আল হোসাইনী চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে উপজেলা নির্ভাচন কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করার পর হতে নতুন ভোটার হালনাগাদ, ভোটার স্থানান্তর ও ভূল-ত্রুটি সংশোধনে সাধারণ মানুষজনকে নানা ধরণের হয়রানী করার অভিযোগ উঠে।

মানুষজনের এসব অভিযোগ জানতে আসলে জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের সাথেও তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন বলে অভিযোগ এনে গত ৮ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর লিখিত আবেদন করেন উপজেলার ৮ জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষক নেতা। যার ফলে ১২ নভেম্বর সকাল ১০টায় বান্দরবান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম সরজমিনে তদন্তে আসেন।

এদিকে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্তে আসার খবর পেয়ে ভোক্তভোগী সহস্রাধিক জনতা সকাল সাড়ে ১০টায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে অফিস চত্বরে আসেন সাধারণ ভোক্তভোগীরা। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা নির্বাচন ঘেরাও করতে চাইলে পুলিশ ব্যারিকেট সৃষ্টি করেন। খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ,সহকারী কমিশনার(ভূমি) রিফাত আসমা, অফিসার ইনচার্জ আমির হোসেন ছুঁটে আসেন। পরে অভিযুক্ত নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আরাফাত আল হোসাইনী ও অভিযোগ তদন্তে আসা বান্দরবান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসে দীর্ঘ দুই ঘন্টা ব্যাপি শ্বাসরুদ্ধকর বৈঠক করেন। যদিও বৈঠকে অভিযুক্ত নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আরাফাত আল হোসাইনী তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ভোটার হালনাগাদ, স্থানান্তর ও সংশোধনে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আরোপিত নিয়ম-নীতি বর্হিভূত কোন শর্ত বা অজুহাত দিয়ে কাউকে হয়রানী করার অভিযোগ ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট। বৈঠক চলাকালে ইউএনও অফিসের সামনে থেকে থেমে নানা শ্লোগানে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখছিল ছাত্রলীগ সভাপতি মো. জামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক চহ্লাপ্রু মারমা নিলয়, যুবলীগ সভাপতি মো. সামায়উন ফরাজী সামু, আওয়ামীলীগ নেতা এস.এস. রবিউল ফারুক ও আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাঈন উদ্দীন।

বৈঠক শেষে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. জয়নাল আবেদীন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না মাহমুদ বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা সরজমিনে এসে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাদীগণের বক্তব্য গ্রহন ও সর্বশেষ সরজমিনের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছেন। আর বিষয়টি যেহেতু এখনো তদন্তাধীন। তাই এ বিষয়ে দ্রুত সময়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিবেন।

আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. মাঈন উদ্দীন বলেন, প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আজ বিক্ষোভ কর্মসূচী স্থগিত করা হলো। আগামী ৩ কার্য দিবসের মধ্যে অভিযুক্ত নির্বাচন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা না হলে আরো কঠিন কর্মসূচী ঘোষণা করে জনগণের হয়রানীরোধ করতে যা করণীয় তাই করা হবে।

অভিযুক্ত নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আরাফাত আল হোসাইনী তার বিরুেদ্ধ আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,এখানাকার লোকজন নির্বাচন কমিশনের আরোপিত নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে তাদের মতো করে সব কিছু আদায় করতে চায়। যা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আইন বিরোধী। আমি এসব অন্যায় আবদার রাখতে না পারার কারণেই কিছু স্বার্থান্বেষী মহল অন্যায়ভাবে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ও পরবর্তী ঘটনার জন্ম দিয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post