পানছড়িতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ
ইসমাইল বিন ইউসুফ, পানছড়ি: খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার এক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ উঠে এসেছে। এ নিয়ে এলাকার চায়ের আসরে মুখরোচক আলাপচারিতার পাশাপাশি চলছে আলোচনা ও সমালাচনার ঝড়। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম মো: সাদেক আলী। তিনি উপজেলার ১নং লোগাং ইউপির ফাতেমানগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
জানা যায়, গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টি আর) কর্মসূচীর আওতায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য দুই লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। উক্ত প্রকল্পে প্রধান শিক্ষক মো: সাদেক আলী নিজেই প্রকল্প কমিটির সভাপতি হয়ে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি উপজেলা প্রকল্প বান্ধবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেন। যেখানে নিজের স্বাক্ষরটা ছাড়া বাকী ৪টি স্বাক্ষরই তিনি জালিয়াতি করেছেন। প্রকল্প কমিটির ২নং সদস্য বাবু মারমা, ৩নং সদস্য সৈয়দ এম এ বাশার ও ৫নং সদস্য আশা চাকমা জানান, আমরা কিছুই জানিনা। আমাদের স্বাক্ষর জাল করে প্রধান শিক্ষক প্রতারণা করেছে এটা শতভাগ সত্য।
কমিটির ৩নং সদস্য সৈয়দ এম এ বাশার আরো জানান, আমি অত্র প্রতিষ্ঠানের ভূমিদাতা। দুই লক্ষ টাকার প্রকল্প যখন বাস্তবায়ন হয় আমি তখন বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলাম। আমার সাথে কোন ধরণের আলাপ-আলোচনা দুরের কথা জিজ্ঞাসা বা পরামর্শ পর্যন্ত কারে নাই। তাছাড়া কেরিটন মারমা নামের একজনকে প্রকল্পের ৪নং সদস্য সদস্য বানানো হয়েছে। ঠিকানামতে এ নামের কোন লোক এলাকায় নাই বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একখানা অভিযোগ করেছেন ৩নং সদস্য সৈয়দ এম এ বাশার। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌমিতা দাশ জানান, প্রকল্পটি মূলত: সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সময়ে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তারপরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ফাতেমানগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাজ সম্পূর্ন হ-য-ব-র-ল। হিসাব-নিকাশের খাতাটি দেখতে পেলাম অঘচালো
বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দকৃত টাকা নয়-ছয় করার লক্ষেই কাউকে না জানিয়ে প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষর জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে এলাকার অনেকেই। বিদ্যালয পরিচালনা কমিটির সদস্য মো: ইছহাক ও ছোবহান জানান বিদ্যালয় সংস্কারের কি কাজ হচ্ছে তা নিয়ে প্রধান শিক্ষক এলাকার কারো সাথে আলাপ-আলোচনা কিছুই করেননি।
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মো: সাদেক আলী জানান, পিআইও অফিসের পূর্ণ আমাকে প্রকল্প কমিটি জমা দিতে বলেছে। আমি শুধুমাত্র আমায় স্বাক্ষর দিয়ে কমিটি জমা দিয়েছি। বাকীটা আমি কিছুই জানিনা।
পিআইও অফিসের পূর্ণ চাকমা জানান, প্রগল্প কমিটির খালি ফরমটি প্রধান শিক্ষক সাদেক আলীর হাতে দেয়া হয়েছিল। প্রধান শিক্ষক্ত পরবর্তীতে ফরম পূরণ করে অফিসে জমা দিয়েছেন। প্রকল্প কমিটির সভাপতি কমিটিতে কাকে কাকে রেখেছেন সেটাতে আমাদের জানার বিষয় না। সভাপতির নামে বিল হয়েছে দুই কিঞ্চিতে দুই লক্ষ টাকা তিনি হাতে হাতে নিয়েছেন।
প্রকল্প কমিটির সদস্যদের দাবী স্বাক্ষর জাল করা বড় ধরণের জালিয়াতি। একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজেই কি করে এতোবড় জালিয়াতি করতে পারে। এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তদন্ত পূর্বক প্রধান শিক্ষককে বিচারের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান