মানিকছড়ি-লক্ষ্মীছড়ি সড়কে ব্রিজ নির্মাণ কাজ চলছে ধীরগতিতে, জনভোগান্তি বাড়ছে

মোবারক হোসেন: খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি-মানিকছড়ি সড়কে প্রায় ৬৮কোটি টাকা ব্যায়ে ৬টি সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হলেও বন্ধ রয়েছে কয়েকটি সেতুর কাজ। ধীরগতিতে চলছে বাকি ব্রিজ নির্মাণ কাজ। জানা যায়, ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরে ৭ নাম্বার প্যাকেজে খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সেতু নির্মাণের কুমিল্লার কচুয়া উপজেলার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রানা বিল্ডার্স কনষ্ট্রাকশন লি: কে কার্যাদেশ দেয়। মেসার্স রানা বিল্ডার্স স্বত্বাধীকারী মেসার্স জাকির এন্টারপ্রাইজ ২০১৭সালের এপ্রিল মাসে সেতুুগুলো নির্মাণ কাজ শুরু করেন। কিন্তু দীর্ঘ ২বছর অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত এবটি সেতুর কাজও শতভাগ সম্পন্ন করতে পারে নি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জাকির এন্টাপ্রাইজ। ফলে উক্ত সড়কে রড,সিমেন্টের ভাড়ি যানবাহন চলাচলের কারণে পুরো রাস্তাটি অকেঁজো হয়ে পরেছে। সম্প্রতি প্রবল বর্ষণে রাস্তার বেশ কয়েক স্থানে ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে খানা-খন্দকের। দ্রুত ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ করা না হলে পুরো রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরবে।

জেলার দীঘিনালা ও মহালছড়ি সড়কে একই প্যাকেজে আরো কয়েকটি সেতু নির্মিত হচ্ছে বলে জানান খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগ(সওজ) এর উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো: দিদারুল ইসলাম। লক্ষ্মীছড়ি-মানিকছড়ি সড়কে বাস্তবায়নাধীন বক্স কার্লভাটসহ ৬টি সেতুর কাজ চলছে। প্রতিটি সেতুর প্রস্থ ধরা হয়েছে ১২.৫০মিটার। লক্ষ্মীছড়ি থানা সংলগ্ন ধুরুং এর উপর নির্মাণাধীন সেতুটিই সবচেয়ে বড় যার দৈঘ্য হলো ১০০ মিটার। বাকি ব্রিজগুলো ৩০ মিটার থেকে ৬০ মিটারের মধ্যে। উক্ত ব্রিজগুলোর বাস্তবায়নের সময়কাল ধরা হয়েছে ১৮মাস থেকে ২৭ মাস। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অবহেলা ও গাফিলতির কারণে তা শেষ হচ্ছে না। চলতি বছর জুুন মাসে চুড়ান্ত বাস্তায়ন কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কাজের অবস্থা দৃষ্টে খুব সহসাই কাজ শেষ হচ্ছে না। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল চৌধুরী বলেন, দ্রুত ব্রিজগুলো নির্মাণ না হলে জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে। একমাত্র সড়ক যোগাযোগ লক্ষ্মীছড়ি মানিকছড়ি সড়কে ৬টি ব্রিজ দ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ করার দাবি জানান। অভিযোগ রয়েছে সঠিক তদারকি নেই, রাতের বেলায় নির্মাণ কাজ করা হয় এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের তদারকি কর্মকর্তার অনুপস্থিতিতে ঢালাই কাজ চলে। ব্রিজে নিন্ম মানের রড, বালু ও অন্যান নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে এমন অভিযোগ থাকলে এ বিষয়ে ঠিকাদেরর নিজস্ব প্রকৌশলী তন্ময় আহমেদ অস্বিকার করে বলেন, ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শক্রমেই নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন। খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো: দিদারুল ইসলাম বলেন, নিয়ম মেনে কাজ করা হচ্ছে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না-দাবি করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ হবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ ইকবাল বলেন, কাজের অগ্রগতি যে স্লো তা পরিলক্ষিত হয়েছে। ব্রিজের কাজ দ্রুত সম্পন্ন না হলে লক্ষ্মীছড়ি-মানিকছড়ি সড়কে যাাত্রীদের আরো দুর্ভোগ বাড়বে বলেও তিনি মনে করেন।

আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নত জীবন যাত্রার মান বাড়াতে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা অন্যতম। পিছিয়ে পরা অনুন্নত, পশ্চাদপদ লক্ষ্মীছড়ি উপজেলাকে এগিয়ে নিতে ব্রিজগুলো নির্মাণ করা জরুরী। আর এ যোগাযোগ ব্যাবস্থা উন্নত হলে পাল্টে যাবে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বর্তমান দৃশ্যপট। তাই সুষ্ঠু তদারকি ও দ্রুত ব্রিজগুলো নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করার দাবি জানিয়েছেন এলাবাসী।

Read Previous

মানবকল্যাণ ও আর্তমানবতার সেবায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে

Read Next

লামায় স্রোতে ভেসে গিয়ে এক কন্যা শিশুর মৃত্যু