রামগড়ে ধর্ষনের অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবি শিক্ষক পরিবারের
রামগড়(খাগড়াছড়ি)প্রতিনিধি: রামগড়ে শিক্ষক কর্তৃক এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবি শিক্ষক পরিবারের। রামগড় লেকভিউ রেঁস্তোরায় এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিবার এ দাবি করেন।
রোববার (২২ মে) রামগড় লেকভিউ রেঁস্তোরায় এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিবার দাবি করে বলেন, তার স্বামী সম্পূর্ণ নির্দোষ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবী এবং তার সহযোগী রুপম ত্রিপুরা ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে এ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রী আয়েশা বেগম জানান, বর্তমানে থানা চন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবীর সঙ্গে তার স্বামীর ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব রয়েছে। ২০১৯ সালে ইন্দ্রানী দেবী ভূগুরাম কার্বারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকাকালীণ তার স্বামীর ভাগিনা মোহাম্মদ তারেককে হাত বেঁধে বেদম প্রহার করে। তখন তার স্বামী বিভিন্ন পর্যায়ে এ নির্যাতনের প্রতিবাদ কর্তৃপক্ষকে জানালে ইন্দ্রানী দেবীকে শাস্তিমূলকভাবে জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। এ ঘটনার জন্য ইন্দ্রানী দেবী সবসময় বেলায়েত হোসেনকে দায়ী করে আসতো।
ঘটনার কিছুদিন পর ইন্দ্রানী দেবী বদলি হয়ে বেলায়েত হোসেনের বর্তমান কর্মস্থল থানা চন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। বিদ্যালয়ের কাজকর্মে উদাসীনতা এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে প্রায় সময় তার স্বামী এবং প্রধান শিক্ষকের মাঝে বাগবিতণ্ডা হয়। বিষয়গুলো তার স্বামী রামগড় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের এ সমস্যা বিষয়ে অনেকজনকে অবহিত করেন ।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, প্রায় সময় ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবীর প্রভাব খাঁটিয়ে রুপম ত্রিপুরা নামে স্থানীয় দুষ্ট বখাটে ছেলেটি সব সময় বিনা অনুমতিতে ১০-১২ জন ছেলে গ্রুপ নিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতো এবং তাদের মোবাইল চার্জ দিতো। কিছুদিন আগে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে বেলায়েত হোসেন ও রুপম ত্রিপুরার মাঝে তুমূল বাগবিতণ্ডা হয়। রুপম ত্রিপুরা তখন বেলায়েত হোসেনকে দেখে নিবেন বলে হুমকি দেন এবং কিছুদিন পর রুপম ত্রিপুরাকে বিদ্যালয়ে দপ্তরি পদে নিয়োগ দিতে চাইলে বেলায়েত হোসেন এর প্রতিবাদ জানায়। এতে রুপম ত্রিপুরা তার স্বামীর উপর আরও ক্ষিপ্ত হয় বলে জানাগেছে।
সংবাদ সম্মেলনে বেলায়েত হোসেনের পিতা নুরুল হুদা দাবি করে বলেন, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে নিরীহ এক উপজাতি মেয়েকে দিয়ে তার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। এর জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবী এবং রুপম ত্রিপুরাকে দায়ী করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও দাবি করেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা মিথ্যা অভিযুগে স্বীকার শিক্ষক বেলায়েত হোসেনকে মোবাইল ফোনে জানান, তিনি পরিস্থিতির স্বীকার। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা না করলে রুপম ত্রিপুরা তাদের পরিবারকে সমাজচ্যুত করবেন। এ ভয়ে তিনি মামলা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বেলায়েত হোসেনের পিতা নুরুল হুদা, স্ত্রী আয়েশা বেগম, ভাই মামুন হোসাইন ও তার দুই কন্যা।
উল্লেখ্য, বৃহঃবার ১১ মে ঘটনায় পরের দিন শুক্রবার ১২ মে শিক্ষক বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে রামগড় থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে মামলা করেন পঞ্চম শ্রেণির পড়ুয়া শিক্ষার্থীর মা। এ ঘটনায় শিক্ষক বেলায়েত হোসেনকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয় জেলা শিক্ষা অফিস। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।