লক্ষ্মীছড়িতে সমন্বয় সভা স্থগিত: চেয়ারম্যান নেই ৩মাস, কার্যক্রম অচল

স্টাফ রিপোর্টার: পূর্ব নির্ধারিত লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভা স্থগিত করা হয়েছে। আকষ্মিকভাবে উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভা স্থগিত হওয়াকে কেন্দ্র করে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। অস্ত্র মামলা ও খুনের মামলা থাকার কারণে দীর্ঘ দিন ধরে উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা অনুপস্থিতির কারণে এরি মধ্যে ২টি সমন্বয় সভা সম্পন্ন হওয়ায় আজকের সভায় চেয়ারম্যানের উপস্থিত থাকা ছিল বাধ্যতামূলক। রহস্যজনক কারণেই নির্ধারিত সভা স্থগিত করে বলে অনেকের অভিমত। প্রকৃতপক্ষে কি কারণে আজকের সভা স্থগিত করা হয়েছে তা স্পপষ্ট করে কেউ মুখ খুলছে না। উপজেলা চেয়ারম্যান না থাকায় মূলত পরিষদের সকল কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে। ব্যহত হচ্ছে উন্নয়ন কার্যক্রম।

২০ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এই সমন্বয় সভা হওয়ার কথা ছিল। খবরে প্রকাশ, লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ ইকবাল স্বাক্ষরিত এক নোটিশে সেপ্টেম্বর ২০১৮ সনের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা জানিয়ে নোটিশ জারি করা হয়। উক্ত নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলার সকল দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানগণ যথারীতি উপস্থিত হন। আকস্মিকভাবে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লক্ষ্মীছড়ি ত্যাগ করার কারণে সমন্বয় সভা স্থগিত করা হয়। এমনটাই জানান, পরিষদের মিটিং সমন্বয়ক ও কম্পিউটার অপারেটর যুকেশ বিন্দু চাকমা। তিনি বলেন, ইউএনও স্যার খাগড়াছড়ি চলে যাওয়ার কারণে আপাতত সভা হচ্ছে না, পরে জানানো হবে। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বেবি রানী বসু বলেন, আজকে মিটিং হচ্ছে না এর বাইরে আর কিছুই বলেন নি তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ ইকবাল খাগড়াছড়ি জেলা সদর হতে মুঠোফোনে এ প্রতিনিধিকে জানান, অনিবার্য কারণে আজকে সভা স্থগিত করা হয়েছে। সভার তারিখ এই মুহুর্তে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না কবে হবে, পরবর্তীতে জানানো হবে বলে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন তিনি।

উল্লেখ্য ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি দিবাগত রাতে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমাকে নিজ বাসা থেকে অস্ত্র ও গুলিসহ সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়ে আটক করলে একমাস জেল খেটে জামিন নিয়ে বের হন। পরে চেয়ারম্যন পদ থেকে সাময়িক বহিস্কারের পর উচ্চ আদালতে রিট করে পূর্নবহাল হন। প্রায় ৩ মাস ধরে আত্মগোপনে আছেন উপজেলা চেয়াারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা।
এদিকে অস্ত্র মামলা ছাড়াও রঞ্জনা চাকমা ও জংগলী চাকমা হত্যার ঘটনায় লংগদু থানার আরো একটি মামলা করা হয় (নং- ০১, তাং ১৮.০৬. ২০১৮)। তবে আদালত পরবর্তি জামিন আদেশের দিন ধার্য করেছেন আগামী ৫ অক্টোবর।

এছাড়াও নানিয়ারচর তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মা হত্যার ঘটনায়ও মামলার অন্যতম আসামী লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমা। মামলা নং-০২/১০। মামলাটি করা হয় ৩ মে ২০১৮ তারিখে। অপর দিকে ইউপিডিএফ সমর্থীত এই উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী নানা অপপ্রচার সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আসা অনুসন্ধানী গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয় সশস্ত্র চাঁদাবাজি, অপহরণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ করে অর্থ উপার্জন করা, পাহাড়ের ত্রাস সৃষ্টি করে ইউপিডিএফ কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া নানা অপরাধের অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে উপজেলা চেয়ারম্যান সুপার জ্যোতি চাকমার বিরুদ্ধে। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা পরিষদের অচলাবস্থা ফিরিয়ে আনাসহ উন্নয়ন কার্যক্রম গতিশীলতা আনতে প্রশাসন তড়িৎ ব্যবস্থা নেবে এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।

Read Previous

সরকারের সাফল্য অর্জন ও উন্নয়ন ভাবনা বিষয়ে লামা তথ্য অফিসের প্রেস ব্রিফিং

Read Next

পানছড়িতে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে থাকার ঘোষণা দিলেন জেলা প্রশাসক