লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গত এক মাস কোথায় ছিলেন ?

স্টাফ রিপোর্টার: সারওয়ার ইউসুফ জামাল। পরিচয় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। দিনাজপুর শহরে নিজ বাড়ি হলেও সরকারি চাকুরী জনীত কারণে পোষ্টিং খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায়। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর ১২ তারিখে কর্মস্থল লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে যোগদান করে বর্তমানে চলতি দায়িত্ব পালন করছেন। প্রশ্ন ওঠেছে গত এক মাস ধরে কোথায় ছিলেন এই কর্মকর্তা। অফিস চলেছেই বা কেমনে। একটানা এত বড় গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এতদিন কী ছুটি ভোগ করা যায়। এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজতেই পাহাড়ের আলো’র অনুসন্ধান।

উপজেলা পরিষদ থেকে একটু দুরে আবাসিক কোয়ার্টারে অবস্থান মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়। অনেকটা নির্জন এলাকা। বেশ কয়েকজনকে জিগ্যাসা ছাড়া অপরিচিত কারো পক্ষে সহজে এ অফিস খুঁজে পাওয়া অনেকেটাই কঠিন। এ প্রতিবেদক সম্প্রতি তাঁর অফিসে গেলে কর্মকর্তাকে পাওয়া যায় নি। অফিস থেকে জানানো হয় স্যার ছুটিতে আছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেপ্টেম্বর মাসের ২২ তারিখে লক্ষ্মীছড়ি ত্যাগ করেন। এর পর তাঁর দেখা মিললো লক্ষ্মীছড়িতে অক্টোবর মাসের ২৩ তারিখ সকালে।

সূত্রে জানা যায়, স্বাভাবিক প্রসব নিশ্চিত করা বিষয়ক এক কর্মশালায় অংশ নিতে মাধ্যমিক এই শিক্ষা কর্মকর্তা ২২ অক্টোবর মাটিরাঙ্গায় আসেন। তাঁর আগমনের খবর পেয়ে এ প্রতিবেদক ২৩ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে গেলে এমন প্রশ্নই ছিল এক মাস আপনি কোথায় ছিলেন? উত্তর দেন ছুটিতে। একজন সরকারি দায়িত্বশীল অফিস প্রধান হয়ে এক মাস ছুটিতে থাকলে অফিস চলে কিভাবে। সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কাজ কী সম্পাদন করা সম্ভব?। এসব কথোপকথনের মাঝেই তিনি বলার চেষ্টা করলেন কর্তৃপক্ষের অনুমোতি আছে। বি.এড পরীক্ষা দিচ্ছি তাই কর্মস্থলে থাকতে পারি নাই। যািদও তাৎক্ষনিকভাবে এর স্বপক্ষে কোনো কাগজ পত্র দেখাতে পােেরন নি। তবে পরে বি.এড পরীক্ষার রুটিন দেখান। প্রবেশ পত্র এবং অন্যান্য কাগজ আর কী আছে জানতে চাইলে সবই জেলা অফিসে জমা দিয়েছেন বলে জানান। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সারওয়ার ইউসুফ জামাল আবারো বলেন, ৬টি পরীক্ষা ছিল। মাঝে বন্ধ থাকলেও পরীক্ষা কেন্দ্র দুরে হওয়ার কারণে আসতে পারি নি। এছাড়াও এসাইন্ডমেন্ট থাকার কারণেও আসা সম্ভব হয় নি।

অভিযোগ রয়েছে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নানা সমস্যা ও অজুহাতে প্রায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন। এ নিয়ে উপজেলা সমন্বয় সভায় একাধীকার তাগিদ দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ৪৭তম মৌসুমী ক্রীড়া প্রতিযোগীতা শুরুতেই ছটিতে তাকার কারণে যথা সময়ে উপস্থিত থাকতে না পারায় কার্যক্রম ব্যহত হয়। দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও সরকারে জাতীয় উন্নয়ন মেলা ২০১৮ মাধ্যমিক এই শিক্ষা কর্মকর্তা উপস্থিত না থাকার ঘটনা সকলের মুখে মুখে। এ নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে নানা সমালোচনা করতে দেখা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ ইকবাল বলেন, অনেকবার সতর্ক করেছি। আমি এখেন তার প্রতি বিরক্ত। আমি এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখবো। এভাবে কি অফিস প্রধান ছাড়া কোন অফিস চলে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উপজেলার জরুরী কোনো কাজে কাউকে না পেলে জবাবদিহীতা তো আমাকেই করতে হয়।

খাগড়াছড়ি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সাধন কুমার চাকমার কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, সিএল ছুটিতে ছিলেন। তার পরও এতদিন কোন কর্মস্থলে ছিলেন না বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে বলে এ প্রতিনিধিকে বলেন।

Read Previous

গুইমারা’র কুকিছড়াতে বৌদ্ধ বিহার ও মূর্তি ভাংচুর’র প্রতিবাদে মিছিল, আল্টিমেটাম

Read Next

মূর্তি ভাংচুরকে ইস্যু করে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আবারো ষড়যন্ত্রের উস্কানী