স্টাফ রিপোর্টার: টানা চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি স্থগিতের মধ্যেই স্থায়ীভাবে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিলো জম্মু ছাত্র জনতা। ৪ অক্টোবর সকালে জুস্মু ছাত্র জনতা মিডিয়া সেল নামক একটি পেইজ থেকে এ ঘোষণাা দেয়া হয়।
এ ঘোষণায় বলা হয়,(শহীদদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পুন্যকর্ম সম্পাদন, আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি মানবিক সহায়তা প্রদান এবং প্রশাসনের আশ্বাসকে আংশিক বিবেচনায় রেখে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ঘোষিত “স্থগিত অবরোধ” কর্মসূচি আপাতত প্রত্যাহার করা হলো)
খাগড়াছড়ি ও গুইমারায় সংঘটিত সাম্প্রতিক নৃশংস গণহত্যার প্রেক্ষিতে গত ১ অক্টোবর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, এনএসআই জেলা প্রধান, ডিজিএফআই জেলা প্রধান, এনডিসি ও এএসপি (তদন্ত) প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে “জুম্ম ছাত্র-জনতা”-এর পক্ষ থেকে দ্বিতীয় দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আমরা স্পষ্টভাবে আমাদের ৮ দফা দাবি, ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার এবং সেনা ও সেটলার কর্তৃক সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি। আলোচনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবিসমূহ বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করা হয় এবং শহীদ পরিবারের প্রতি নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করার বিষয়টি জানানো হয়।
আমরা, জুম্ম ছাত্র-জনতা, জরুরি বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, শহীদদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী পুন্যকর্ম সম্পাদন, আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি মানবিক সহায়তা প্রদান এবং প্রশাসনের আশ্বাসকে আংশিক বিবেচনায় রেখে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত ঘোষিত “স্থগিত অবরোধ” কর্মসূচি আপাতত প্রত্যাহার করা হলো। তবে আমরা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করছি- অতি দ্রুত আমাদের ৮ দফা দাবি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন না হলে, জুম্ম ছাত্র-জনতা আরও কঠোর, ব্যাপক ও অনির্দিষ্টকালের কর্মসূচি ঘোষণা করতে দ্বিধা করবে না।
উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় ওই ছাত্রীকে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। পরদিন ভুক্তভোগীর বাবা অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন শয়ন শীল নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনার পর পাহাড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ইউপিডিএফ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন খাগড়াছড়ি সেনানিবাসে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান মাহমুদ। তিনি এটিকে একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে উল্লেখ করেন।
গুইমারা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল কালাম রানা বলেন, পাহাড়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে ইউপিডিএফ জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান রয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।
ঘটনার পর জুম্ম ছাত্র-জনতা অনির্দিষ্টকালের জন্য সড়ক অবরোধ ডাকলেও দুর্গাপূজা ও প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ ৫ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। তবে ইতোমধ্যেই সংঘাতে তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ বহু স্থানীয় মানুষ। সহিংসতায় সরকারি অফিস, দোকান-পাট, বসতঘর, গুদাম ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন খাগড়াছড়ি জেলাজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করে।
অবরোধ প্রত্যাহার হলে ১৪৪ ধারাও তুলে নেয়া হবে এমনটাও বলা হয় প্রশাসনের পক্ষ হতে।