পানছড়িতে বিদ্যুৎ এর আবাসিক প্রেকৌশলীর বিরুদ্ধে মিছিল
স্টাফ রিপোর্টার: পানছড়ি উপজেলায় কর্মরত বিদ্যুৎ এর আবাসিক প্রেকৌশলীর বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ এর খুটি বিক্রয় ও ভুতুরে বিল তৈয়ারীর অভিযোগে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিদ্যুৎ গ্রহক ও টমটম চালক সমিতি। আজ মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে বাজার এলাকা থেকে শুরু হয়ে উপজেলা পরিষদ প্রদক্ষিণ শেষে আবরো বাজার এলাকায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যে দিয়ে সম্পন্ন হয় বিক্ষোভ মিছিল। বিক্ষোভ মিছিলের পরে থানা ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান, ওসি তদন্ত উত্তম কুমার রায়, আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) হুমায়ুন কবির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ বাহার মিয়া, ইজি বাইক সমিতির সভাপতি (উত্তর) আবুল হোসেন, সভাপতি (দক্ষিণ) অমিত চাকমা ও বিদ্যুৎ গ্রাহকগন থানায় আলোচনায় বসেন।
জানাযায়, বিদ্যুৎ গ্রাহক ও টমটম চালক সমিতির অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, পানছড়ি সাব জোনের সামনে থেকে একটি বিদ্যুৎ এর খুটি তুলে মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা মোঃ হাবিবুর রহমানের ছেলে কাঠ মেস্ত্রী মোঃ নয়ন মিয়া‘র বাড়ির পাশে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে লাগানো হয়। অপর দিকে বিদ্যুৎ গ্রাহক অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পানছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ বাহার মিয়ার ছোট ভাই ও ৩নং পানছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ নাজির হোসেনের বাসা, মোল্লাপাড়া গুচ্ছ গ্রামের সাবেক প্রকল্প চেয়ারম্যান মোঃ ইউসুফ আলীসহ শতাধিক গ্রাহক ভুতুরে বিলের অভিযোগ করেন। টমটম মালিক ও চালক সমিতির লোকজন বলেন, আমাদের নামে প্রতি মাসে ৪-৬ হাজার টাকা বিল তৈয়ারী করা হয় অখচ আমাদের মিটারে ১৫০-১৬০ ইউনিট বিল হয়।
এ বিষয়ে পানছড়ি উপজেলা টমটম চালক ও মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ আবুল হোসেন বলেন, একটি টমটম এর বিপরীতে ৪-৬টাকা ্িবদ্যুৎ বিল হলে চালক বা মালিক কি ভাবে বাঁচবে। বিদ্যুৎ এর বিলের কারণে চালক ভাইয়েরা গাড়ী চালানো বন্ধ করে দিবে। এতে পানছড়িতে আইন শৃংখ্যলা অবনতি হতে পারে। ইজি বাইক সমিতির সভাপতি (দক্ষিণ) অমিত চাকমা বলেন, আমরা প্রতিমাসে ১০০-১৫০ ইউনিট ব্যবহার করি। সেখানে আমাদের গড়ে ৪৫০ ইউনিট দেখিয়ে বিল করা হয়। মিটার রিডিং অনুযায়ী বিল করার জন্য বারবার অনুরোধ করা সত্তেও আবাসিক প্রকৗশলী (বিদ্যুৎ) তা কর্ণপাত করছে না। আমরা এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ বাহার মিয়া বলেন, আমি ভুতুরে ভিল বন্ধের জন্য আরিকে বারবার অনুরুদ করলেও তিনি প্রয়োজনীয় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। যার কারনে আজ এই বিক্ষোভ মিছিল। মিটার পাঠক মিজানুর রহমান বলেন, আবাসিক প্রকৌশলীর নির্দেশনা অনুযায়ী ইজি বাইক আছে এমন গ্রাহকদের মিটারে রিডিং কম থাকলেও গড়ে ৪৫০ ইউনিট দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি মিটারই দেখা হয়। অফিসারের নির্দেশনায় সব কিছু করা হয়।
পানছড়ি থানা অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান বিক্ষোভ মিছিলের কথা স্বীকার করে বলেন, বিদ্যুৎ এর আবাসিক প্রৌকশলী ও টমটম সমিতির নেতাদের নিয়ে থানায় বসেছি সবার সাথে কথা বলেছি আশা করছি এই সমস্যার সমাধান হবে। বিদ্যুৎ এর খুটি ২০হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রির অভিযোগ সম্পর্কে প্রথমে তিনি বলেন, আমি কোন টাকা নেই নাই, লাইনে যারা কাজ করে তারা নিয়েছে, পরে আবার বলেন ঠিকাদার কাজ করেছে জানিয়ে আবাসিক প্রৌকশলী মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, রাঙ্গামাটি বিদ্যুৎ এর কার্যলয় থেকে প্রতিটি টমটমকে ৩৫০-৪০০ ইউনিট বাণিজ্যিক বিল করার নির্দশনা প্রদান করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সিস্টেম লস থাকে। তাই যে সকল গ্রাহক ব্যাটারী চার্জ দিবে তাদেরকে গড় বিল দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে সাধারণ গ্রাহকদের বেলায়, আমার করার কিছু নাই, যারা বিল তৈরী করেন তারাই আমাকে ফাঁসানোর জন্য এমনটি করছে। টমটম প্রতি ৩০০শত ইউনিট বিল করার সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়ে সমস্যার সমাধান হয়েছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের খাগড়াছড়ি‘র নির্বাহী প্রৌকশলী আবু জাফর‘র নাম্বারে ফোন করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
পানছড়ি বিদ্যুৎ বিতরনের আওতায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার (আবাসিক ও বানিজ্যিক) গ্রাহক তাদের জন্য ২৪ ঘন্টার মধ্যে গড়ে ৪ ঘন্টা লো-ভোল্টেজের বিদ্যুৎ পাওয়া যায়। এ দূর্ভোগের অবসান পেতে বিদ্যুৎ গ্রাহকগন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।