জাতীয় নিরাপত্তা ও জনকল্যাণ নিশ্চিত করতে তাসাউফের আদর্শ ধারণ করতে হবে
ডেস্ক রিপোর্ট: ইন্দোনেশিয়া সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ‘ওয়ার্ল্ড সূফি ফোরাম’ ও ‘জমিয়তে আহলে তরীকত আল মু’তাবারা আন নাহদিয়্যাহ’র যৌথ ব্যবস্থাপনায়’ ‘জাতীয় নিরাপত্তা ও মানবকল্যাণে তাসাউফের ভূমিকা’ শীর্ষক ৩ দিনব্যাপি আন্তর্জাতিক সেমিনার ৮ এপ্রিল-২০১৯, সোমবার আরম্ভ হয়। ৮ এপ্রিল ১ম দিবসে উক্ত বিষয়ের ওপর প্রধান আলোচক হিসেবে মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন ও ওয়ার্ল্ড সূফি ফোরাম বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হযরত শাহ্সূফী মাওলানা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (মা.জি.আ) বলেন, সমগ্র বিশ্বে আজ সংঘাত-সহিংসতা ও হানাহানি চলছে। মানুষের ওপর মানুষের প্রভুত্ব কোথাও থেমে নেই। এক দেশ আরেক দেশের ওপর হামলে পড়ে নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। সিরিয়া, ইরাক, ফিলিস্তিনসহ মুসলিম দেশগুলো যেন একেকটি জ্বলন্ত উত্তপ্ত কারবালার রূপ নিয়েছে। সম্প্রীতি, উদার্য সৌভ্রাতৃত্ব, সহমর্মিতা ও মানবিকতার চর্চার পরিবর্তে সারা বিশ্বে শক্তিধর শাসকরা জুলুমের রাজত্ব কায়েম করে বিশ্ববাসীর স্বস্তি কেড়ে নিচ্ছে। সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী বলেন, পৃথিবীতে শান্তি ও মানবিক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলেন সূফি সাধকরা। তাঁরাই মানুষে মানুষে ও জাতিতে জাতিতে সম্প্রীতিবোধ ও সাম্যের আবহ তৈরি করে আসছেন। তাই সূফিবাদ ও তাসাউফ বিশ্ব শান্তির পথে নিরন্তর প্রেরণা জোগায়। তিনি আরো বলেন, সব দেশের শাসকদেরকে ক্ষমাতালিপ্সা ও অমানবিক শক্তি প্রদর্শনের পথ ছেড়ে সূফি সাধকদের দেখানো সম্প্রীতি ও শান্তির আদর্শ অনুসরণ করতে হবে।
জাতীয় নিরাপত্তা ও মানবকল্যাণ নিশ্চিত করতে সূফি সাধকদের প্রদর্শিত সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্বের আদর্শ ধারণ করার তাগিদ দেন তিনি। বাংলাদেশের আধ্যাত্মিকতার পীঠস্থান মাইজভাণ্ডার দরবার শরিফের মহাত্মা সাধকগণ সম্প্রীতিপূর্ণ মানবিক বিশ্ব সমাজ গড়ার প্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। সেমিনারে প্রশ্নোত্তর পর্বে সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আল্-হাসানী (মা.জি.আ.)কে রোহিঙ্গা সমস্যা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে; উত্তরে তিনি বলেন বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ রোহিঙ্গাদের পাশে সার্বিক সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে এসেছেন। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের নানা পদক্ষেপের বিষয় তুলে ধরেন তিনি। তাঁর বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে তিনি ত্রাণ নিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ান। পাশাপাশি এ সংকট মোকাবেলায় বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে আহলে তরীকত আল মু’তাবারা আন নাহদিয়্যাহ’র চেয়ারম্যান শায়খ হাবীব মুহাম্মদ লুতফি বিন আলী বিন ইয়াহইয়া। সেমিনারে উদ্বোধনী বক্তব্য পেশ করেন ইন্দোনেশিয়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী রাইমিজার্ড রায়াচুডু। অতিথি ও আলোচক ছিলেন মুফতী শায়খ আবু বকর আহমদ (ইন্ডিয়া), শায়খ ছালেহ আল আব্বাসি (তুর্কি), শায়খ ড. আজিজ কুবাইতি আল ইদ্রিসী (মরক্কো), উস্তাদ ড. আহমদ রাফিক (ইন্দোনেশিয়া), শায়খ ড. জিহাদ বিন আল্হাজ্ব ছিদ্দিক (মালয়েশিয়া), শায়খ মাজিদ মুহাম্মদ আল কিন্দি (ওমান), শায়খ ইউছুফ ইদ্রিস (লেবানন), শায়খ আহমদ আল দাব্বাগ (বৃটেন), শায়খ মুহাম্মদ আল মাগরিবি (ব্রাজিল), শায়খ ড. মুহাম্মদ আব্দুল গাফ্ফার শরীফ (কুয়েত), শায়খ ড. মুহাম্মদ শুহুমী আল ইদ্রিসী (আলজেরিয়া), শায়খ আউদুল করীম আল আকলী (সুদান), শায়খ ইব্রাহিম আল ইয়াসিন (আলবেনিয়া), শায়খ ড. তাহের বারায়েক (আলজেরিয়া), শায়খ আউনুন মুইন আল কুদমী (জর্দান), শায়খ আনোয়ার কাশু আত তাহেরী (তিউনিসিয়া), শায়খ আব্দুল আজিজ আল খতিব (সিরিয়া), শায়খ ড. নাজি আল আরাবি (বাহরাইন), শায়খ আহমদ মনসুর কিরতাম (ফিলিস্তিন), শায়খ আব্দুল হাবিব আল আত্তারী (পাকিস্তান), শায়খ আল হাবিব জায়েদ বিন আব্দুর রহমান বিন ইয়াহইয়া (ইয়ামন), শায়খ ফয়সাল আল আমুদি (কেনিয়া)সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সূফী স্কলার, পীর মাশায়েখ ও খ্যাতি সম্পন্ন ওলামায়ে কেরামগণ।
বার্তা প্রেরক: (শাহ্ মুহাম্মদ ইব্রাহিম মিয়া)
কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক
আন্জুমানে রহমানিয়া মইনীয়া মাইজভাণ্ডারীয়া।