• January 18, 2025

দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কন্ফারেন্সে উদ্বোধন হলো বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু

 দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কন্ফারেন্সে উদ্বোধন হলো বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু

রতন বৈষ্ণব ত্রিপুরা, রামগড়(খাগড়াছড়ি): খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা রামগড় উপজেলার প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত মহামনি এলাকায় ফেনী নদীতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে মৈত্রী সেতু-১ উদ্বোধন করা হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি’র ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যৌথভাবে ভিডিও কন্ফারেন্সে ৯ মার্চ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার পর সেতুটি শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। তবে সেতুটি উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সেতুস্থলে দুই দেশে আনুষ্ঠানিক কোন কর্মসূচি ছিলো না।

এদিকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রবিবার রাতে ঘোষণা করেন ফেনী নদীর ওপর নির্মিত এই সেতুটির নামকরণ করা হয়েছে ‘মৈত্রী সেতু’ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ত্রিপুরার একাধিক পরিকাঠামো প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন এবং তার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার দুইদেশের প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল মাধ্যমে সেতুটিও উদ্বোধন করেন।

খাগড়াছড়ি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সল জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার মৈত্রী সেতু উদ্বোধন করবেন এমন একটি চিঠি আমরা সোমবার রাতে পাই তবে সেতুস্থলে কোন আনুষ্ঠানিকতার তেমন কোন নির্দেশনা ছিলো না বলে জানান তিনি।

এদিকে মৈত্রী সেতু উদ্বোধন হচ্ছে খবর পেয়ে গতরাতে দক্ষিন ত্রিপুরার সাব্রুম মহকুমা শহর সীমান্ত পাড় থেকে সরেজমিনে দেখা গেছে আতশবাজিসহ আনন্দ উল্লাস শব্দ শুনা গেছে।

রামগড় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কার্বারী এ প্রতিনিধিকে জানান, বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ আজ উদ্বোধন হয়েছে। তবে সেতুটি উদ্বোধন হলেও পরবর্তিত্বে কার্যক্রমে আরো আনুষ্ঠানিকতা রয়েছে বলে জানান।

গণভবন থেকে ভিডিও কন্ফারেন্সের মাধ্যমে মৈত্রী সেতু উদ্বোধন কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ত্রিপুরার মূখ্যমন্ত্রী-ত্রিপুরাবাসীকে আন্তরিক ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন-মৈত্রী সেতুটি আমাদের দু’দেশের মাঝে শুধু সেতুবন্ধনই রচনা করবে না, বরং ব্যবসা, বানিজ্য এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে। তিনি আরো বলেন, ত্রিপুরাবাসী শুধু চট্টগ্রাম পোর্ট নয়, চট্টগ্রাম আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর ও ব্যবহার করতে পারবেন বলে উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধ চলা কালে ত্রিপুরা রাজ্যে আশ্রয় সমর্থন ও সহযোগিতা করার কারণে আজ মহান মুক্তিযোদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। তাই তিনি মূখ্যমন্ত্রী ও ত্রিপুরাবাসীসহ সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।

২৭অক্টোবর ২০১৭ সালে দেশটির ন্যাশনাল হাইওয়েস এন্ড ইনফ্রাষ্টাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) তানিশচন্দ্র আগারভাগ ইনপাকন প্রাইভেট লিমিটেড এর তত্ববধানে ৮২.৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৮৬ একর জমির উপর ৪১২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১৪.৮০ মিটার প্রস্তের মূল সেতুটির দৈঘ্য ১৫০ মিটার মুলে কাজ শুরু করে যা ৫ জানুয়ারী ২০২১ সালে সেতুটির কাজ শেষ হয়। সেতুটিতে মোট পিলার রয়েছে ১২টি এরমধ্যে বাংলাদেশ অংশে নির্মাণ করা হয়েছে ৮টি ও ভারতের অংশে ৪টি। স্প্যান রয়েছে ১১টি। তন্মধ্যে বাংলাদেশ অংশে ৩৩.৫ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি, ২৭.৫ মিটারের ৪টি ও ৫০ মিটারের একটি। নদীর ওপর ৮০ মিটারের একটি, ভারতের অংশে ৫০ মিটারের একটি ও ২৭.৫ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি স্প্যান রয়েছে। আর্ন্তজাতিক মানের সেতুটি যুক্ত হয়ে রামগড় বারৈইয়ার হাট-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাথে অপরদিকে ভারত অংশে নবীনপাড়া ঠাকুরপল্লী হয়ে সাব্রুম আগরতলা জাতীয় সড়কসহ রেলপথ যুক্ত হবে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরকালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সাথে বৈঠকে রামগড়-সাব্রুম স্থলবন্দর চালুর যৌথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৫ সালের ৬ জুন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ফেনী নদীর ওপর নির্মাণাধীন বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ নামে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post