ব্রিজ ভাঙ্গার ১ মাস পার হলেও নির্মাণের উদ্যেগ নেই, চরম ভোগান্তি
মহালছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ির মহালছড়ি থানা সংলগ্ন চেঙ্গী নদীর উপড়ে নির্মিত মুবাছড়ি ইউনিয়নের সাথে একমাত্র সংযোগ সড়কে ভেঙ্গে যাওয়া বেইলি ব্রীজটি ১ মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনো নির্মাণের কারোর কোন উদ্যেগ নেই। ফলে মহালছড়ি উপজেলার মুবাছড়ি ইউনিয়নসহ ৩০টি গ্রামের ২০ হাজারের মতো মানুষ যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। মুবাছড়ি ইউনিয়নের সাথে উপজেলা সদরের একমাত্র সংযোগ মাধ্যম হচ্ছে এই বেইলি ব্রীজটি। সেই বেইলি ব্রীজটি গত ২২ সেপ্টেম্বর পাথর বোঝাই ট্রাক পারাপারের সময় ভেঙ্গে গেলে তখন থেকে আজ অবধি এলাকার লোকজন যাতায়াত ও পণ্য পরিবহণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ ব্রিজটি দিয়ে সরকারী বেসরকারী চাকুরীজীবি, স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। হাটের দিন কৃষকেরা উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী বাজারে আনা নেওয়াতেও মারাত্বক সমস্যায় ভুগছে। কৃষক পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস নিজের উৎপাদিত দ্রব্য মহালছড়ি বাজারে বিক্রি করে পরিবারের জন্য যা কিছু প্রয়োজন তা সাপ্তাহিক বাজার খরচ যোগান দেয়। মহালছড়ি সদরের বাজারটি মহালছড়ি বাসীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরিকৃত সাঁকো দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় মোটর সাইকেল যাতায়াত করছে। এ সাঁকো দিয়ে পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও চলাচল করতে হচ্ছে এলাকাবাসীর। মহালছড়ি উপজেলা ছাড়াও পাশর্^বর্তী উপজেলা নানিয়ারচর উপজেলার প্রায় কয়েকটি গ্রামের মানুষ এ সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করে থাকে। সব মিলিয়ে এ সড়কের ব্রিজটি অত্যন্ত জনগুরুত্বর্পূণ।
এলাকাবাসীরা জানান, মহালছড়ি উপজেলা সদরের সাথে মুবাছড়ি ইউনিয়নের যাতায়াত ব্যবস্থা একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফলে এলাকার মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহ করা এক প্রকার কঠিন হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর জোর দাবী, ভেঙ্গে যাওয়া ব্রিজটি দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হোক। মহালছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কান্তি চাকমা জানান, ব্রীজটি এলাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভেঙ্গে গিয়ে মহালছড়ি উপজেলা সদরের সাথে মুবাছড়ি ইউনিয়নের যাতায়াতসহ সকল কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এ বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পরও ব্রীজটি মেরামতের কেন উদ্যেগ নেওয়া হচ্ছেনা তা তিনি অবগত নয় বলে জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার তামান্না নাসরিন উর্মি জানান, যতটুকু জানি, ব্রীজ নির্মাণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়নবোর্ড থেকে একটা বাজেট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ হয়তো কিছুদিনের মধ্যে মেরামতের কাজ শুরু করতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
মহালছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও মহালছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক রতন কুমার শীল বলেন, এ ব্রিজটি মুবাছড়ি ইউনিয়নের জনসাধারণ যাতায়াত ও বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী আনা নেওয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রীজটি দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন। তাছাড়া ব্রীজটি দ্রুত মেরামত না হলে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারণার কাজে যথেষ্ট সমস্যা হবে বলে মনে করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২২ সেপ্টেম্বর মুবাছড়িতে যাওয়ার পথে একটি পাথর বোঝাই ট্রাক পারাপারের সময় ব্রীজটি ভেঙ্গে যায়। এ দুর্ঘটনায় একজন শ্রমিক ও মারা যায়।