• December 9, 2024

রাঙ্গুনিয়ায় ধান ক্ষেতে বন্য হাতির হানা, ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে কৃষকরা

শান্তি রঞ্জন চাকমা, রাঙ্গুনিয়া: রাঙ্গুনিয়ায় গত এক সপ্তাহ যাবত পাকা আমন ক্ষেতে বন্য হাতির তান্ডবে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বন্য হাতি কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে সন্ধ্যার পর থেকে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার ৪টি ইউনিয়নে বিভিন্ন বিলে হানা দিয়ে ৩০ একর উপরে আমনের ব্যাপক ক্ষতি করছে। বন বিভাগ ও এলাকাবাসী দলবদ্ধ হয়ে রাত জেগে পাহাড়া, বৈদ্যুতিক বাতি জ্বেলে আলো ছড়ানো, ডাকঢোল, ফটকা ফাটিয়ে ও ফাঁকা গুলি চালিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

জানা যায়, রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের নারিশ্চা বিটের আওতায় পদুয়া, শিলক, কোদালা ও সরফভাটা ইউনিয়নে শতশত একর জমিতে আমন ধান পাকতে শুরু করেছে। পাকা ধানের ঘ্রানে ছুঁটে আসছে বনের হাতি। ১০/১৫ দিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে। সাপরেজা, পদুয়া হরিহর, সরফভাটার বরখোলা পাড়া, কোদালা চা বাগান, শিলকের তৈলাভাঙ্গা বিল, খুরুশিয়া বিল ও পদুয়া মাতব্বর বাড়ি এলাকায় শতশত একর আমন ক্ষেতে প্রায় ৭০/৮০টি বন্য হাতি ৪/৫টি দলে বিভক্ত হয়ে প্রতিরাতে হানা দিচ্ছে। হাতির তান্ডব থেকে ক্ষেতের পাকা ধান রক্ষা করতে রাতে কৃষকের ঘুম নাই।

সাপরেজা পাড়ার করিম মেম্বারের বাড়ি এলাকায় গত শুক্রবার রাতে বন্য হাতির দল হানা দেয়। নারিশ্চা বিট কর্মকর্তা মো. আব্দুল মন্নান ও পোমরা বিট কর্মকর্তা মো. ইউনুছের নেতৃত্বে বন কর্মচারীরা ফাঁকা গুলি চালিয়ে হাতি তাড়নো হয়। নারিশ্চা বিট কর্মকর্তা মো. আব্দুল মন্নান বলেন, কৃষকের মাঝে চলছে বন্য হাতির আতংক। রাঙ্গুনিয়ার দক্ষিনাঞ্চলে কয়েকটি বিলের কৃষকেরা ক্ষেতের ফসল নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে। হাতির তান্ডব থেকে ক্ষেতের ফসল রক্ষার জন্য কৃষকরা পালা বদল করে পাহাড়া দিচ্ছে। এলাকাবাসীর পাশাপাশি বন বিভাগের নারিশ্চা বিট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাতি তাড়ানোর জন্য চেষ্ঠা চালাচ্ছে।

পদুয়া হরিহর গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ করিম বলেন, প্রতি মৌসুমে ধান ক্ষেতে বন্য হাতির উৎপাত চলে আসছে। বনাঞ্চলে খাদ্য সংকট থাকায় বনের হাতি লোকালয় ও ধান ক্ষেতে ছুঁটে আসছে। বেপরোয়া বন্যহাতি ক্ষেতের পাকা ধান খেয়ে এবং পায়ে পিষিয়ে সাবাড় করে। চলতি আমন ক্ষেতে ২০ একরের বেশী ধান ক্ষেত সাবাড় করে। বন প্রহরী ইসমাইল হোসেন, বন মালী মো. হুমায়ন কবীর ও বাগান মালী মো. সেলিম জানান, হাতির পাল ১৫/২০টি করে বিভক্ত হয়ে ৪টি ইউনিয়নে বিভিন্ন বিলে পৃথক ভাবে হানা দেয়। যার কারনে বন বিভাগের লোকজন হাতি তাড়ানোর কাজে হিমশিম খাচ্ছে। ইতিমধ্যে পদুয়া হরিহর ও সাপরেজা পাড়ায় ১৫ একরের বেশী আমন ধান সাবাড় করেছে বন্য হাতির দল।

পদুয়া ও সরফভাটা বরখোলা পাড়ার কৃষকরা জানান, ক্ষেতের ফসল রক্ষার জন্য বন বিভাগের সার্বিক সহযোগীতায় গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে অনেকাংশে ক্ষতি কম হয়েছে। আরো দুই সপ্তাহ ধান ক্ষেত পাহাড়া দিতে পারলে কৃষকরা ফসল ঘরে তুলতে পারবে।

রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা প্রহলাদ চন্দ্র রায় বলেন, ধান ক্ষেত রক্ষায় বন বিভাগের লোকজন কৃষকদের সার্বিক সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসীর সহযোগীতা নিয়ে বন্য হাতির পালকে লোকালয় থেকে ধোপাছড়ি বনাঞ্চলের দিকে তাড়ানোর চেষ্ঠা করা হবে।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post