খাগড়াছড়িতে ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গার নাম, আটক এক

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলার ২ নং হাফছড়ি ইউপির ৬ নং বড়পিলাক ওয়ার্ডে  একই পরিবারের ৯ জন রোহিঙ্গার নামে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে অনুসন্ধানে ৬ জনের পরিচয় প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ২০১৪ সাল থেকে জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি করে আসছে গুইমারা কেন্দ্রিক চক্রটি। টাকার বিনিময়ে এসব জালিয়াতি করছে চক্রটি।
৯ মার্চ খাগড়াছড়িতে পাসপোর্ট করতে এসে এক রোহিঙ্গা যুবক আটক হয়েছে। এ ঘটনায় ১০ মার্চ খাগড়াছড়ি সদর থানায় একটি মামলা করে পুলিশ।  ১৩ মার্চ  আটক রোহিঙ্গা যুবককে আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট ফরিদ আলম। এছাড়াও বিষয়টি তদন্তে দুদককে অনুসন্ধানের আদেশ দেন। একই সাথে জন্মনিবন্ধন ও ভোটার আইডি সংশিষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারিকে মামলায় সম্পৃক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।  আটক যুবকের নাম মো: মাতালম, পিতার নাম মো: আবু সৈয়দ, মাতার নাম মৃত রহিমা বেগম। এন আইডি নং ৬০০৬১৫০০৯৫।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আটক রোহিঙ্গা যুবক মো: মাতালম বড়পিলাকে আসেন তার স্ত্রীর ভাইয়ের শশুর বাড়ির সুবাধে। তার নাম মো: শামসু মন্ডল, এনআইডি নং ৮৬৮৮৭৬২৫৩৬। সে তার প্রকৃত পরিচয় গোপন করে অন্যজনকে পিতা মাতা বানিয়ে ভোটার হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তার এনআইডিতে পিতার নাম মো: দুলাল মিয়া, মাতার নাম হাজেরা বেগম। মুলত মো: শামসু মন্ডলের আসল পিতা-মাতার  নাম মো: আব্দুল মালেক, এনআইডি নং ৪২০১৬৯৩৫৪৮, মাতার নাম মোছা: আম্বিয়া খাতুন, এনআইডি নং ৯১৫১৬৬৫৯৪১। আটককৃত যুবকের স্ত্রীর নাম দিলারা বেগম এনআইডি নং ২৮৫৬২৩৬৭৯৫।
এছাড়াও হালনাগাদ ভোটর তালিকায় নতুন করে  মো: জাফর আলম, এনআইডি নং ১৯৭৪১৫৪৮০৭, পিতার নাম মো: আব্দুল মালেক মাতার নাম মোছা: আম্বিয়া খাতুন নামের রোহিঙ্গা যুবকের ভোটার তালিকাভুক্ত ও খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পাসপোর্ট করেছে বলে জানা যায়। সে মো: শামসু মন্ডলের আপন ছোট ভাই। এছাড়াও মো: শামসু মন্ডলের আর এক বোন ও  তার মেয়ের ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
মো: শামসু মন্ডলের স্ত্রী সবুজ আক্তার স্বীকার করেন, মো: শামসু মন্ডল যখন প্রবাসে ছিল তখন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে জন্মনিব্ধন করা হয়েছে স্থানীয় একটি চক্রের  মাধ্যমে। তার পরিচয় বলতে অপরগতা প্রকাশ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে রোহিঙ্গা যুবক মো: শামসু মন্ডল নিজেকে ও তার পরিবারের সকলে রোহিঙ্গা বলে স্বীকার করেন। এবং হালনাগাদ ভোটার তালিকায় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তার ছোট ভাই জাফর আলমের ভোটার তালিকাভুক্তি ও পাসপোর্ট করার কথাও স্বীকার করেন।
ভোটার তালিকাভুক্তির ব্যাপারে গুইমারা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আশরাফুল বলেন, স্থানীয় মেম্বার ও সংশ্লিষ্ঠ ইউনিয়নের প্রত্যয়ন ও জন্মনিবন্ধন ছাড়া ভোটার হওয়া যায়না। চেয়ারম্যান-মেম্বার চুড়ান্ত করলেই আমরা ভোটার তালিকাভুক্তি করি। তারা সহযোগীতা না করলে রোহিঙ্গারা ভোটার হতে পারতনা

Read Previous

মানিকছড়িতে সরকারি ঘর পেতে যাচ্ছে  ২২৫ ভূমি ও গৃহহীন পরিবার

Read Next

সিন্দুকছড়ি জোন কর্তৃক অসহায় হতদরিদ্রের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদান