পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: পাহাড়ের ভূমি সমস্যা নিরসনে পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক ভূমি কমিশনের বিধিমালা প্রণয়নপূর্বক দ্রুত বিচারিক কার্যক্রম শুরু করা, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির আলােকে ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি কার্যকর রাখা। আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, ভূমি ব্যবস্থাপনা, উপজাতীয় আইন ও সামাজিক বিচার কার্যাবলী ও ক্ষমতা নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে হস্তান্তর করাসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি।

পার্বত্য চুক্তির ২৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার(২ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলার মহালছড়ি উপজেলার করল্যাছড়ি এলাকার স্কুল মাঠে আয়োজিত সমাবেশে এসব দাবির কথা বলেন সংগঠনের নেতারা।

আয়োজিত সমাবেশে কেন্দ্রিয় তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা বলেন, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পঁচিশ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, এই সুদীর্ঘ সময়েও পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির দুই তৃতীয়াংশ ধারাগুলোই অবাস্তবায়িত অবস্থায় রয়ে গেছে।

উদ্বেগের বিষয় যে, ২০০৯ সাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরকারী আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার এক যুগের অধিক রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকলেও চুক্তির মৌলিক বিষয়গুলো আগের মতই অবাস্তবায়িতই রয়ে গেছে।

আইন বিষয়ক সম্পাদক সুদর্শন চাকমা জানান, আজকে পার্বত্য চুক্তির ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন করছি প্রতিবাদের সাথে। এতো বছর পরেও সরকার আমাদের ধারাগুলো অবাস্তবায়ন অবস্থায় পেলে রেখেছে। এটা অত্যান্ত দুঃখজনক। পার্বত্য চট্টগ্রামের স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে চুক্তি বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা সরকারের কাচে অনুরোধ জানাই যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে চুক্তি বাস্তবায়ন করে। তাহলে শান্তি পিরে আসবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মৌলিক বিষয় সমূহের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয় অধ্যুষিত অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিনপার্বত্য জেলা পরিষদের আওতাধীন বিষয় ও কার্যাবলী কার্যকরণ এবং উক্ত পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করণ, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরােধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন এর বিধিমালা চূড়ান্তকরণ, আভ্যন্তরীণ জুম্ম উদ্বাস্তু ও ভারতপ্রত্যাগত জুম্ম শরনার্থীদের জায়গা-জমি প্রত্যর্পণ ও তাদের নিজস্ব জায়গা-জমিতে পুনর্বাসন, অনুপ্রবেশকারী বাঙালিদেরকে পার্বত্য চট্টগ্রামের বাইরে সম্মানজনকভাবে পুনর্বাসন, চুক্তির সাথে সামঞ্জস্য বিধানের জন্য অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ সংশােধন, অস্থানীয়দের নিকট প্রদত্ত ভূমি ইজারা বাতিলকরণ, পার্বত্য চট্টগ্রামের সকলচাকুরীতে জুম্মদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তিন পার্বত্য জেলার স্থায়ী অধিবাসীদের নিয়ােগ ইত্যাদি বিষয়গুলাে বাস্তবায়নে সরকার অদ্যাবধি কোন ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

Read Previous

গুইমারাতে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে পার্বত্য শান্তি চুক্তির রজত জয়ন্তী  

Read Next

শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পূর্তিতে মহালছড়িতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা