পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবিতে খাগড়াছড়িতে সমাবেশ

ডেস্ক রিপোর্ট: ‘‘অর্থ,প্রতিরক্ষা,পরাষ্ট্রনীতি ও ভারী শিল্প ব্যতীত সকল ক্ষমতা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের নিকট হস্তান্তর কর” এই দাবিতেখাগড়াছড়ি সদরে সমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ খাগড়াছড়ি জেলা শাখা।
পূর্ণস্বায়ত্তশাসন দিবস উপলক্ষে আজ আজ ১০ মার্চ ২০১৮, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় স্বনির্ভরে ইউপিডিএফ-এর কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক রেশমি মারমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডএফ)-এর কেন্দ্রীয় সদস্য দেবদন্ত ত্রিপুরা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জিকো ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের জেলা সভাপতি দ্বিতীয়া চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের খাগড়াছড়ি জেলা সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা। গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা সাধারণ সম্পদাক পলাশ চাকমা সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।
সমাবেশ শুরুর আগে পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
সমাবেশে ইউপিডিএফ নেতা দেবদন্ত ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অধিকারের সনদ পূর্ণস্বায়ত্তশাসনেরকোন বিকল্প নেই। পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকারকে পাশ কাটিয়ে আওয়ামীলীগ সরকার ও জনসংহতি সমতির মধ্যে যখন আপোষনামা হতে যাচ্ছিল তখনই ১৯৯৭ সালের ১০ মার্চ পাহাড়ি গণপরিষদ, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ ও হিল উইমেন্স ফেডারেশন ঢাকায় এক সমাবেশে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের ডাক দিয়েছিল। যা আজ পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, তিন সংগঠনের উত্থাপিত দাবিকে তোয়াক্কা না করে ’৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে জনসংহতি সমিতি চুক্তি স্বাক্ষর করে। কিন্তু এই চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের দাবি-দাওয়া যে পূরণ হয়নি তা আজ দিবালোকের মতো পরিষ্কার। সরকার ২০ বছরেও এই চুক্তি পুরো বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেনি। কাজেই পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার প্রকৃত সমাধানের জন্য সরকারকে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবি অবশ্যই মেনে নিতে হবে।
অমল ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম এক সময় স্বাধীন রাজ্য ছিল। কিন্তু কালক্রমে এই স্বাধীন রাজ্যকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করা হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের উপর উপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা জারি রাখা হয়েছে। সামরিক শাসন জারি রেখে যুগযুগ ধরে এ অঞ্চলের জনগণের উপর অন্যায় দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে। সাংবিধানিকভাবে বাঙালি জাতীয়তা চাপিয়ে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বসবাসরত জাতিসত্তাগুলোকে দাবিয়ে রাখার অপচেষ্টা চলছে। তিনি পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের আন্দোলনে সামিল হওয়ার জন্য ছাত্র-যুব-নারী সমাজসহ সর্বস্তরের মুক্তিকামী জনগণকে আহ্বান জানান। তিনি নেতা-কর্মীদের নামে দায়েরকৃত ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারপূর্বক আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
সমাবেশ থেকে বক্তারা অর্থ, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও ভারী শিল্প ব্যাতীত সকল ক্ষমতা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের নিকট হস্তান্তরের মাধ্যমে পূর্ণস্বায়ত্তশাসন প্রদান করা এবংসেটলার বাঙালীদের সমতলে জীবিকার নিশ্চয়তাসহ সম্মানজনক পুনর্বাসন করার দাবি জানান।  সমাবেশে তিন শতাধিক ছাত্র-যুব-নরী অংশগ্রহণ করেন এবং সমাবেশ থেকে পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের দাবির পক্ষে শ্লোগান দেন।

Read Previous

লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যায়ের ৫০ বর্ষপূর্তির সুবর্ণ জয়ন্তী পালিত

Read Next

অপহৃত বিএনপির নেতা চাইথুই মারমাকে উদ্ধারের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন