মানিকছড়ির ‘সততা’ পোল্ট্রি ফার্মে দুর্গন্ধে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ

আবদুল মান্নান,মানিকছড়ি: মানিকছড়ি সদর রাজ বাজারের আধা কিলোমিটার পশ্চিমে উত্তর মাস্টার পাড়া ও পাঞ্চারামপাড়ায় প্রায় ৬ একর ভূমিতে অপরিকল্পিতভাবে স্থাপিত হয়েছে ‘সততা পোল্ট্রি ফার্ম’।

আর ফার্মের চারপাশে রয়েছে শতাধিক পরিবারের বসবাস! ফার্মের দক্ষিণ,পূর্ব ও পশ্চিম পার্শ্বে যত্রতত্র খোলা জায়গায় বয়লারের বর্জ্য,মরা মুরগী অবাধে ফেলায় সেখানকার পরিবেশ বসবাস অযোগ্য হয়ে উঠেছে! সেখানে বসবাসরত শতাধিক পরিবার এবং ইউনিয়ন সড়কে চলাচলরত সকলেই মুখে মাক্স বা কাপড় ব্যবহার করে চলাচল করছে প্রতিনিয়ত। বর্জ্যের গন্ধে ছোট শিশু-কিশোর ও বয়োঃবৃদ্ধরা শ্বাস-প্রশ্বাসসহ নানা রোগে কষ্ট পাচ্ছে। স্থানীয়রা পরিবেশ দূষণের প্রতিবাদ করলেও ফার্ম কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলেই নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের শেষ আকুতি আমাদেরকে বাঁচতে দিন,অন্যথায় প্রাণ বাঁচাতে ভিটামাটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে হবে!

উপজেলা সদর ও প্রশাসনের নাকের ডগায় পোল্ট্রি ফার্মে পরিবেশ দূষণের গুরুতর অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সততা ফার্মের চারপাশে খোলা জায়গায় ফার্মের বর্জ্য, মরা মুরগী ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকাসহ অস্বাস্থ্যকর পবিবেশ বিরাজমান। এসব বর্জ্যে মাছি ভনভন করেছে। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে আশেপাশের অন্তত ১৫-২০ জন লোক ঘটনাস্থলে এসে পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এভাবে পরিবেশ দূষণ হতে থাকলে শিশু-কিশোর ও বয়োঃবৃদ্ধদের নিয়ে বসবাস করা কঠিন। হয়তো এখানে সততা ফার্ম থাক, না হয় আমরা জীবন রক্ষায় অন্যত্র চলে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় দেখছি না। এ সময় সজল কান্তি নাথ,বিষু কান্তি নাথ,আবু তাহের,নুর ইসলাম,রতন কান্তি নাথ,মো.মনির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, প্রতিনিয়ত ফার্মের দুষিত বর্জ্যে পরিবেশ বসবাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে ।

এছাড়াও ২/১ দিন পর পর রাতে ময়লার স্তুপ খুলে দিলে যে পরিমাণ গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে তাতে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বেড়িয়ে যেতে হয়। সুনীল কান্তি নাথ বলেন, ফার্মের দূষিত গন্ধে আমার ঘরে বর্তমানে দু’জন রোগি মৃত্যুশয্যায়! এ ব্যাপারে আমি অনেকবার ম্যানাজারকে অবহিত ব্যর্থ হয়েছি। মানিকছড়ি-বাটনাতলী ইউনিয়ন সড়কে চলাচলরত মোটরবাইক চালক সমিতির সভাপতি আবদুল মন্নান অভিযোগ করে বলেন, ফার্মের দূষিত গন্ধে ১ কিলোমিটার সড়কে মোটর সাইকেলের যাত্রীরা মূখে কাপড় চেপে চলাচল করতে হয়।

এ প্রসঙ্গে ফার্মের ম্যানেজার মো. মনির হোসেন স্থানীয়দের আনিত অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ফার্মের দুর্গন্ধ যাতে চারিদিকে ছড়িয়ে না পড়ে সে বিষয়ে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। প্রতিনিয়ত বর্জ্যে চুন ছিটানো, ফ্যান ব্যবহার করে বাতাস দেয়াসহ সকল প্রযুক্তি ব্যবহার করছি যাতে পরিবেশ দূষণ না হয়। তারপরও কিছুটা গন্ধ থাকছেই। সততা ফার্মের সত্বাধিকারী আলহাজ্ব মো. ইকবাল হোসেন মুঠোফোনে এ প্রসঙ্গে বলেন, বাংলাদেশের পরিবেশে (ঘনবসতি) বিদেশের ন্যায় শতভাগ পরিশুদ্ধ পরিবেশে পোল্ট্রি ফার্ম পরিচালনা করা কঠিন। তবে পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে যথাসাধ্য চেষ্টা করে ফার্র্ম পরিচালনা করছি। বর্জ্য ব্যবহার করে বায়ু গ্যাস তৈরির কাজ চলছে। পরিবেশ রক্ষায় এতকিছু করার পরও যদি কোন ত্রুটি থাকে তাহলে অচিরেই প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্মস্থলে না থাকায় তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Read Previous

লংগদুতে বৈসাবি ফুটবল টুর্ণামেন্টে হেডম্যানপাড়া একাদশ চ্যাম্পিয়ন

Read Next

খাগড়াছড়িতে মানববন্ধন নুসরাতের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে