৯ বছরেও চালু হয়নি খাগড়াছড়ি’র বিভিন্ন উপজেলায় নির্মিত মডেল ছাত্রাবাসগুলো

আবদুল মান্নান: খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা সদরস্থ‘রাজবাড়ী মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়’র পার্শ্বে দূর্গম জনপদের শিক্ষার্থীদের জন্য কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ছাত্রাবাসটি নির্মাণের প্রায় ৯বছর হলেও এখনো তা চালু না করায় ইতোমধ্যে আসবাবপত্র, সোলার সিস্টেম নষ্টসহ দৃষ্টিনন্দিত ভবনে চেহারা পাল্টে গিয়ে বিবর্ণ হয়ে পড়েছে। সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পদ ব্যবহার অনুপযোগি হলেও কারো মাথা ব্যাথা নেই এটি চালু করণে। ফলে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য ‘দূর্গম জনপদের শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিতসহ সুশিক্ষায় শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৌমলমতি শিশুরা!

প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের নির্দেশক্রমে ২০১১ সালে ‘প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচীর অধীনে’ খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি ও পানছড়ি উপজেলা সদরে মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়–য়া দূর্গম এলাকার শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়া রোধসহ শিক্ষারমান উন্নয়নে দৃষ্টিনন্দিত তিন তলা বিশিষ্ঠ ছাত্রাবাস নির্মাণ করেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি)। প্রতিটি ছাত্রাবাস নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা। ছাত্রাবাসে মোট ১২ কক্ষ। এর মধ্যে ৪০জন ছাত্র ও ৪০জন ছাত্রীর পৃথক আবাসন, কিচেন, ডাইনিং, ওয়াশ রুমের পাশাপাশি ভবনগুলো সোলার সিস্টেম এবং জেনারেটরসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় নির্মিত ও দৃষ্টিনন্দিত। আজও চালু না হওয়ায় ‘প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি’ দারুনভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ দীর্ঘ সময় ভবনগুলো ব্যবহার না হওয়ায় ইতোমধ্যে সকল ফার্নিচার, সোলার, জেনারেটর নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে সেগুলো ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে গেছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি) ভবনগুলো নির্মাণ শেষে নিয়মানুযায়ী জেলা পরিষদ’কে হস্তান্তর করলেও আজ পর্যন্ত সেটি আলোরমুখ দেখেনি। যদিও প্রতিটি উপজেলা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, উপজেলা নির্বাহী অফিস ভবনগুলোর চালু’র বিষয়ে উপজেলার সমন্বয় সভার রেজুলেশনসহ জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসক একাধিকবার অবহিত করেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। যদিও জেলা পরিষদ ভবন চালু,জনবল নিয়োগসহ সেটি পরিচালনার নির্দেশনা চেয়ে সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রনালয়ে চিঠি দিয়েছে বলে দাবী করলেও এর কোন সিদ্ধান্ত ৯ বছরেও আসেনি।

মানিকছড়ি উপজেলার‘ রাজবাড়ী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ক্যজ মারমা এ প্রসঙ্গে বলেন, স্কুলের সামনে দৃষ্টিনন্দিত ছাত্রাবাস খালি পড়ে থাকায় প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থী, অভিভাবকরা শিক্ষকদেরকে নানা প্রশ্নে জর্জরিত করছে, কেন চালু হচ্ছে না,কবে হবে, আমাদের ছেলে-মেয়েরা থাকতে পারবে কি না,এসব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বর্তমান জেলা পরিষদ সদস্য এম.এ. জব্বার ভবন চালু না হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ছাত্রাবাসগুলোর চালু’র বিষয়ে উপজেলা পর্যায় থেকে চিঠিপত্রর আলোকে জেলা পরিষদ মিটিং এ আলোচনাপূর্বক ছাত্রাবাসের জনবল নিয়োগ ও সেটি পরিচালনা নিয়ম-কানুন সর্ম্পকে মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনা চেয়ে একাধিকবার চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post