স্টাফ রিপোর্টার: খাগড়াছড়িতে এক পাহাড়ি নারীকে নির্যাতনের প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকে প্রথম দফায় গত বৃহস্পতিবার আধাবেল সড়ক অবরোধের পর ফের ২৭ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ ডাকা হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া এ অবরোধের ফলে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। হঠাৎ অবরোধের ডাক দেওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সাজেক ভ্যালিতে প্রায় দুই হাজার পর্যটক আটকা পড়েছে। খাগড়াছড়ি শহরেও আটকা পড়েছেন অকে পর্যটক। খাগড়াছি-সাজেক পরিবহন কাউন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. আরিফ জানান, শুক্রবার অন্তত ২০০টির বেশি গাড়ি সাজেকে গেছে, যাতে প্রায় দুই হাজার পর্যটক রয়েছেন। শনিবারও খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকগামী বেশ কয়েকটি গাড়ি প্রস্তুত থাকলেও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া সেগুলো ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে না।
অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ি শহরের বলপাইয়ে আদাম এলাকায় অন্তত ছয়-সাতটি পযঠকের গাড়ি আটকে রেখেছেন পিকেটাররা। কাছাকাছি অবস্থানে থাকা যাত্রীরা হেঁটে শহরে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছেড়ে আসা অনেক নৈশ কোচও জেলার বিভিন্ন জায়গায় আটকে আছে।
অবরোধকারীরা খাগড়াছড়ি-ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক ছাড়াও পানছড়ি, দীঘিনালা, মহালছড়িসহ জেলার বিভিন্ন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুড়ি ফেলে ব্যারিকেড তৈরি করেছেন। কিছু জায়গায় গাছ কেটে সরাসরি সড়ক অবরোধ করা হয়েছে।
নোয়াখালী থেকে আসা পর্যটক ফারুক হোসেন ও কামাল হোসেন বলেন, বন্ধুদের নিয়ে সাজেক যাওয়ার জন্য খাগড়াছড়ি এসেছি। এখানে এসে অবরোধের খবর পাই। এখন আমরা আটকে আছি, যেতে পারব কি না কিছুই জানি না। গাজীপুর থেকে পরিবার নিয়ে আসা মো. সোলাইমান বলেন, ছোট ছেলে-মেয়ে নিয়ে পথে আছি। সাজেকের গাড়ি না ছাড়লে হোটেলে উঠব কি না সে চিন্তায় আছি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা জানিয়েছেন, অবরোধের কারণে কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, জনজীবন স্বাভাবিক আছে এবং সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। শনিবার স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষকে তুলনামূলকভাবে কম বিপাকে পড়তে হয়েছে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানিয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ ব্যারিকেড সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় প্রাইভেট পড়ে বাসায় ফেরার পথে এক মারমা কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। সেনাবাহিনীর সহায়তায় সন্দেহভাজন শয়ন শীল (১৯)কে আটক করে ৫দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।