Category: বান্দরবান সংবাদ

  • ইউপিডিএফ নিষিদ্ধে ৩ দফা দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের বিক্ষোভ

    ইউপিডিএফ নিষিদ্ধে ৩ দফা দাবিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের বিক্ষোভ

    পাহাড়ের আলো: পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্যমান শান্তি ও সম্প্রীতির ঐতিহ্য হুমকির মুখে। ১৯৯৭ সালের বিতর্কিত পার্বত্য শান্তি চুক্তির সুযোগ নিয়ে এবং বিগত আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক ২০০৯ সালে পার্বত্য অঞ্চলের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থান থেকে ২৪২টি সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহারের পর, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ এবং জেএসএস-এর মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো পাহাড়ের স্বাভাবিক সৌন্দর্যকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। পাহাড়ের সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন, লুটপাট ও টেন্ডারবাজির মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলকে ক্রমাগত অস্থিতিশীল করে তুলছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এসব চাঁদাবাজ চক্র প্রতি বছর ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে। এই চাঁদাবাজির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তারা নিজেদের মধ্যেও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে, যার ফলস্বরূপ পার্বত্য চট্টগ্রাম রক্তাক্ত জনপদে পরিণত হয়েছে।

    অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় এই যে, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রহস্যজনক ভূমিকার অংশ হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ-এর সাথে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের প্রতিবাদে  ১৩ মে বিকেল রবিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদ।

    সমাবেশে সংসদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ভারতের ‘র’-এর পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত এবং বাংলাদেশ, ভারত ও আরাকানে বিস্তৃত ইউপিডিএফের মতো একটি ত্রিদেশীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কীভাবে বৈঠক করার নৈতিক সাহস পেল, তা আমাদের বোধগম্য নয়।

    বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য, বাঙালি সাধারণ জনগণ, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ অন্যান্য জনগোষ্ঠীর বহু নিরীহ মানুষের রক্ত যাদের হাতে, সেই সন্ত্রাসীদের সাথে বৈঠক অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেন।

    তিনি আরও বলেন, “এই বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি ঐকমত্য কমিশনের ভূমিকা ও দায়বদ্ধতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অতএব, ঐকমত্য কমিশনের যেসব সদস্যের সহায়তায় ইউপিডিএফকে রাজনৈতিক সংগঠনের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে, তাদেরকে অতি দ্রুত অপসারণ ও আইনের আওতায় আনতে হবে।

    সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মারুফ বলেন, “রোহিঙ্গা গণহত্যায় জড়িত আরকান আর্মির সহযোগী সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফকে রাজনৈতিক স্বীকৃতি প্রদান মানে পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্তশাসনকে স্বীকৃতি দেওয়া একই কথা। এর পরবর্তী ধাপই হলো বিচ্ছিন্নতাবাদীদের স্বপ্নের জুম্মল্যান্ড গঠন।

    ইউপিডিএফ-এর সাথে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে বিচ্ছিন্নতাবাদকেই উস্কে দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দোসরদেরকে ঐকমত্য কমিশন থেকে অপসারণ করতে হবে।

    যাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে একটি চিহ্নিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠী, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো জঘন্য অপরাধ এবং গুম-খুনের সাথে সরাসরি জড়িত, তাদেরকে আইনের আওতায় না এনে রাষ্ট্রীয়ভাবে আপ্যায়ন করা রাষ্ট্রের সাথে প্রহসনের শামিল।”

    সমাবেশ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি নিম্নলিখিত ৩ দফা দাবি জানানো হয়: ১. সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফ-এর সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ২. ঐকমত্য কমিশনে যারা ইউপিডিএফ-এর মতো বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযোগিতা করছে, তাদের অপসারণ করতে হবে।

    ৩. বিগত আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক প্রত্যাহারকৃত ২৪২টি সেনা ক্যাম্প পুনঃস্থাপন করতে হবে এবং বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষা ও পার্বত্য অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনে বিশেষ বা আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।

  • চরম বৈষম্য পার্বত্য উপদেষ্টার বরাদ্দ: এমন বিভাজন কাম্য ছিলো না

    চরম বৈষম্য পার্বত্য উপদেষ্টার বরাদ্দ: এমন বিভাজন কাম্য ছিলো না

    মোবারক হোসেন: মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল ফিতর এবং পাহাড়ে আসন্ন বৈসুক, সাংগ্রাই ও বিজু (বৈসাবি) কে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক যতটা না সরগরম তার চেয়ে বেশি সরগরম পার্বত্য উপদেষ্টার আপদকালীন বরাদ্দ নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা। গত কয়েকদিন যাবত নিশ্চই সাধারণ মানুষ দেখেছে পাহাড়ের অনলাইন মিডিয়া ও জাতীয় অনলাইন ও পত্রিকায় স্থান পেয়েছে পার্বত্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত উপদেষ্টার প্রকল্প বরাদ্দ ও প্রকল্প বন্টনের চরম বৈষম্য বিষয় নিয়ে। প্রকল্প তালিকা বিশ্লেষণ করে দেখা যায় চলতি বছর ১৯ জানুয়ারি ১ম বরাদ্দ দেয়া হয় ৭শ ৫১ মে: টন চাল। এই বরাদ্দে চাকমা ৪৬০ মে: টন, মারমা ৯২ মে: টন, ত্রিপুরা ৬৬ মে: টন এবং বাঙ্গালি ১৩৩ মে: টন। ২৫ মার্চ ২য় বরাদ্দে ৩ কোটি ১২লাখ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে চাকমা ২ কোটি ৩২লাখ ৬০ হাজার টাকা, মারমা ২১লাখ ৭০ হাজার, ত্রিপুরা ৯লাখ ৮০ হাজার এবং বাঙ্গালি ৪৭লাখ ১০হাজার এর মধ্যে হিন্দুদের জন্য দেয়া হয় ১লাখ ৩০হাজার টাকা। ২৭ মার্চ ৩য় সবশেষ বরাদ্দে ১হাজার ৮১৩ মে: টন চাল এর মধ্যে ১হাজার ৮১৩ মে: টন পেয়েছেন চাকমারা, মারমা ২০ মে. টন, মুসলিম বাঙ্গালি ৮০ মে. টন বরাদ্দ দিলেও ত্রিপুরা, হিন্দু, সাঁওতাল ও বড়–য়াদের কোনো বরাদ্দ না দিয়ে বঞ্চিত করা হয়েছে। এছাড়াও এই তালিকায় নাম নেই ল²ীছড়ি উপজেলার বাঙ্গালি জনগোষ্টির একজনেরও। পার্বত্য উপদেষ্টার এমন বরাদ্দ নিয়ে চলছে বিতর্ক। প্রতিবাদ, বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ চলছে। পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার কুশপত্তলিকা দাহ করা হয়েছে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলা শহরে। এ অসম বন্টন তালিকা বাতিল করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুশিয়ারি দিয়েছে আন্দোলনরত বিক্ষুব্দ জনতা। সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তুমুল সমালোচনা এবং জাতিগত বিভাজনের ষড়যন্ত্র অংশ হিসেবেই মনে করছেন বৈষম্যের শিকার বঞ্চিত জনগোষ্টিরা।

    চাথোয়াই প্রæ চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এভাবেই বলেন, আমি লিখতে চাইনি যখন দেখলাম চাকমা বনাম মারমা ত্রিপুরা জাতিগত ঐক্য বিনষ্টের দিকে এগোচ্ছে আমার মনে হয় কিছু লেখা দরকার। খাগড়াছড়িতে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, বাঙালি বসবাস। বৈষম্যের বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার বিদায় নিতে হয়েছে। নতুন বাংলাদেশ শুরু হয়েছে প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশের জনগণ পাহাড়ের জনগন “বৈষম্যের” শব্দের আশায় নতুন দিগন্তের অপেক্ষায়-সে মুহূর্তে খাগড়াছড়িতে সরকারি সকল অনুদান ও প্রকল্প তালিকাতে চাকমা সম্প্রদায়ের নামে প্রকল্প বরাদ্দ দেখা যায় তখনই মারমা, ত্রিপুরা সম্প্রদায় প্রতিনিধিরা নিয়মিত প্রতিবাদ জানাতে থাকে। বৈষম্য একটা সীমা থাকে কিন্তু সে বৈষম্য যদি ভয়াবহ হয় তখন জনগণ অবশ্যই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাবেই। কিছুদিন আগে পার্বত্য মন্ত্রণালয় থেকে ৭৫১ মে: টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে খাগড়াছড়িতে যা বাজার মুল্য ৩কোটি টাকার বেশি সকল প্রকল্প তালিকাতে চাকমাদের নাম। গত কয়েকদিন আগে আপতকালিন অনুদান পাঠানো হয়েছে ৩ কোটি ১২ লক্ষ টাকা সেখানেও মাত্র ১২ লাখ টাকা মারমাদের বাকী ৩ কোটি চাকমাদের। এরপর ১হাজার ৯১৩ মে: টন চাল বরাদ্দ পাঠানো হয় যা বাজার মুল্য ৮কোটি টাকা বেশি। সেখানেও একজন মারমা পেয়েছে মাত্র ১০ টন। জনগন তো বর্তমানে অবুঝ নয়-বৈষম্য একটা লিমিট থাকতে হয় সে বৈষম্য যদি চরম ভয়াবহ হয় প্রতিবাদ হবেই। পার্বত্য মন্ত্রণালয় হলো উন্নয়নের প্রতিষ্ঠান সে প্রতিষ্ঠান যদি এক জাতিকে উন্নয়ন করেন জনগন তো কথা বলবেই। প্রতিবাদ করতে গেলে চাকমা বিরোধী হয় সেটা আর বলার ভাষা নেই।
    খুকু ত্রিপুরা নামে একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, ত্রিপুরা মারমা অনেক খেয়েছে আর না, এই উক্তিটির বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ তাহলে শুরু হলো’’ পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা দায়িত্ব পাওয়ার পর এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।

    বিনোদন ত্রিপুরা নামে এক উন্নয়ন কর্মী লিখেন, কোন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এই তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে জাতির নিকট উন্মুক্ত করুন পার্বত্য উপদেষ্টা মহোদয়। আরেকজন লিখেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে ২৪ এর জুলাই আন্দোলনের প্রতি চরম অসম্মান দেখিয়েছেন পার্বত্য উপদেষ্টা। নিজ জেলা খাগড়াছড়িতে ৩কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রাঙামাটিতে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা ও বান্দরবানে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। খাগড়াছড়িতে পার্বত্য উপদেষ্টার বাড়ি। আত্মীয় স্বজনে ভরা। তাই বিঝু উদযাপনে মনখোলে বরাদ্দ দিয়েছেন। এখানে কি অন্য দুই জেলার সাথে বৈষম্য করা হয়নি?

    আবুল কাশেম নামে এক ব্যক্তি লিখেন, খাদ্যশস্যের তালিকায় ৫৮জনের মধ্য মাত্র ৫জন বাঙালি, আর বাকী সবই একটি সম্প্রদায়ের। অপরদিকে, অর্থ বরাদ্দের তালিকায় রয়েছে স্বজনপ্রীতি, অনৈতিকভাবে প্রকল্প গ্রহণ এবং বৈষম্যমূলক। এভাবে চলতে থাকলে জনমনের আস্থা অর্জন করে নেবে পরিকল্পনাকারীরা। এ প্রসঙ্গে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অংগপ্রæ মারমা বলেন, বরাদ্দে চরম বৈষম্য করা হয়েছে। বাঙ্গালিদের পাশাপাশি মারমাদেরও বঞ্চিত করা হয়েছে। ল²ীছড়ি উপজেলা উল্লেখ্যযোগ্য বিশাল জনগোষ্টি রয়েছে মারমা। তাদের বাদ দিয়ে এমন একটি বরাদ্দ তালিকা মেনে য়ো যায় না। এই প্রকল্প বাতিলের দাবি জানান তিনি।

    গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মো. সামশুল ইসলাম বলেন, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ দেখে বাঙ্গালিরা হতাশ। আপদকালীন প্রকল্পে দেয়া বরাদ্দে নয়-ছয় করা হয়েছে। পার্বত্য উপদেষ্টার বরাদ্দে বঞ্চিত হয়েছে মারমা, ত্রিপুরা ও বাঙ্গালিরা। সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হয়েছে ল²ীছড়ি উপজেলার বাঙ্গালীরা। ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে ল²ীছড়িতে ২৯টি প্রকল্প দেয়া হলেও একটি প্রকল্পও বাঙ্গালীর নাম নেই। অধিকাংশ প্রকল্পই একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে। বঞ্চিত হয়েছে এখানকার মারমা জনগোষ্টিও। ল²ীছড়িতে জনসংখ্যার বড় একটি অংশ বাঙ্গালি কিন্তু কোনো বরাদ্দ রাখা হয় নি। যা অত্যন্ত দু:খজনক। এই তালিকায় শুধু বাঙ্গালি নয় এখানকার মারমা ও ত্রিপুরাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা এই বরাদ্দ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। এ বরাদ্দ তালিকা বাতিল করা না হলে সাধারণ মানুষকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি।

    পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলনের খাগড়াছড়ি শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদ উল্লাহ জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যায় পাহাড়ি-বাঙালি উভয় সম্প্রদায়কে সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয় সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সার্বিক উন্নয়ন, চিকিৎসা ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে যে বরাদ্দ দিয়েছে তাতে আমরা দেখলাম পাহাড়ীদের মধ্যে চাকমা সম্প্রদায় বেশী বরাদ্দ পেয়েছে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলে বাঙালী মাত্র ৩৮টি প্রকল্প পেয়েছে। পার্বত্য উপদেষ্টার অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম নিয়ে পাহাড়ে বহুবার আন্দোলন হয়েছে। এ বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমরা আবারও আন্দোলনে নামবো।

    উল্লেখ্য গত ২৫ মার্চ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়-১ শাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ নাহিদ ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে, খাগড়াছড়ির ১’শ ৮৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে ৩ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এছাড়াও ২৭ মার্চ ৫৮টি প্রকল্পের মাধ্যমে ১হাজার ৯১৩ মে: টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ করা হয়।

    খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুকূলে সহিসংতায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যদের সার্বিক উন্নয়ন, চিকিৎসা ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে এ বরাদ্দ উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। পৃথক ২টি তালিকা বিশ্লেষণে প্রকল্পের অধিকাংশ ভুয়া প্রতিষ্ঠান, একই ব্যক্তি ও পরিবারকে একাধিক বরাদ্দ, স্বজনপ্রীতি, জেলা পরিষদ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দের চিত্র উঠে এসেছে।

    পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি তিন পার্বত্য জেলায় খাদ্যশস্য ও প্রকল্প বরাদ্দে বৈষম্যের অভিযোগে প্রতিবাদ জানিয়ে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। একই সঙ্গে বৈষম্যমূলক এই বরাদ্দ বাতিল করা না হলে পার্বত্য চট্টগ্রামে এই উপদেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণাও দেওয়া হয়। বৈষম্যমূলক এই বরাদ্দ তালিকা বাতিলের দাবিতে ইতিমধ্যেই খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে।

  • পার্বত্য উপদেষ্টার বরাদ্দে বঞ্চিত হলো লক্ষ্মীছড়ির বাঙ্গালীরাও

    পার্বত্য উপদেষ্টার বরাদ্দে বঞ্চিত হলো লক্ষ্মীছড়ির বাঙ্গালীরাও

    পাহাড়ের আলো: ভুয়া প্রতিষ্ঠান ও স্বজনপ্রীতির মধ্য দিয়ে আপদকালীন প্রকল্পে দেয়া বরাদ্দে নয়-ছয় করা হয়েছে। পার্বত্য উপদেষ্টার বরাদ্দে বঞ্চিত হয়েছে মারমা, ত্রিপুরা ও বাঙ্গালিরা। সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হয়েছে খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার বাঙ্গালীরা। ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানের নামে-বেনামে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে লক্ষ্মীছড়িতে ২৯টি প্রকল্প দেয়া হলেও একটি প্রকল্পও বাঙ্গালীর নাম নেই। অধিকাংশ প্রকল্পই একটি বিশেষ সম্প্রদালের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে। বঞ্চিত হয়েছে এখানকার মারমা জনগোষ্টিও। নামে মাত্র কয়েকজনের নাম রয়েছে তাও যতসামন্য। এই নিয়ে ক্ষোভ বিরাজ করছে উপজেলার সর্বত্র। প্রতিবাদের ঝড় ওঠেছে, প্রকল্প বাতিলের দাবিতে সভা-সমাবেশ চলছে জেলাশহরসহ উপজেলাগুলোতে। বৈসম্যমূলক এ প্রকল্প বাতিল করা না হলে হরতাল অবরোাধসহ নানা কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বলেও সমাবেশে থেকে হুশিয়ার করা হয়।

    এদিকে যতটা না লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা অবহেলিত তার চেয়ে বেশি অবহেলিত এখানকার বসবাসরত বাঙ্গালিরা। বিগত ১৫ বছর ধরে সৈরাচারি আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে তেমন কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন চোখে পড়েনি। নামেমাত্র বরাদ্দ আসলেও লুটপাট হয়েছে বেশিরভাগ বরাদ্দ। এছাড়াও পুরো জেলায় আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ছিল লাগামহীন ঘোড়া। ভুয়া প্রকল্পে সরকারি শতশত কোটি টাকা লুপাট হয়েছে এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, পার্বত্য জেলা পরিষদ ও উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে। ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে এ অবস্থা পরিবর্তন হওয়ার আশা করা হলেও উল্টো যেন বেপরোয়া হয়েছে আরও বেশি। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে বর্তমান মেয়াদে দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টরা।
    গত ২৫ মার্চ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়-১ শাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ নাহিদ ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে, খাগড়াছড়ির ১’শ ৮৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে ৩ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের অনুকূলে সহিসংতায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যদের সার্বিক উন্নয়ন, চিকিৎসা ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে এ বরাদ্দ উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। ১’শ ৮৫টি প্রকল্পের অধিকাংশ ভুয়া প্রতিষ্ঠান, একই ব্যক্তি ও পরিবারকে একাধিক বরাদ্দ, স্বজনপ্রীতি, জেলা পরিষদ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিষ্ঠানে বরাদ্দের চিত্র উঠে এসেছে।

    তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা ত্রিনা চাকমা একাই ১২টি প্রকল্পে আবেদন করে সবগুলোতে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নের নামে প্রকল্প ভাগিয়েছেন তিনি। এ ত্রিনা চাকমা ছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের সংসদ সদস্য ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাসহ একাধিক আওয়ামীলীগ শীর্ষ নেতার সহচর। চাকরিকালীন সময়ে এবং অবসর সময়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় ছিলেন তিনি। এ ছাড়া জেলা শহরের সূর্য শিখা ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আলাদা আলাদা বরাদ্দে ৫ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। বস্তায় চাষাবাদ প্রকল্পে দেয়া হয়েছে ১০ লাখ টাকা, অন্যের পুকুর দেখিয়ে একাধিক প্রতিষ্ঠান মৎস্য খাতে বরাদ্দ পেয়েছে, এছাড়া একই পরিবারকে চিকিৎসা ও শিক্ষার জন্য আলাদা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের কর্মকর্তার মাধ্যমে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতার বাবার প্রতিষ্ঠানে লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

    এ বিষয়ে জানতে তালিকার ২৭ নম্বরে থাকা খেজুরবাগান বিত্তহীন সমবায় সমিতি লি. এর সভাপতি নুরুচ্ছাফার মুঠোফোনে একাধিক বার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। বরাদ্দ পাওয়াদের অনেকে কখন কি নামে প্রকল্পের জন্য আবেদন করেছেন তার উত্তর দিতে পারেনি। তালিকায় ৫৪ নম্বরে আছে খাগড়াছড়ি সদরের কলেজ গেট এলাকার পাহাড়ী বাঙালী সম্প্রীতি সমবায় সমিতির অনুকূলে আর্থ সামাজিক উন্নয়নে মৎস্য বাঁধ সংস্কারসহ মৎস্য চাষ। সভাপতি হিসেবে নাম আছে নিশি মনি চাকমা নামে একজনের। মুঠোফোনে উনার কাছে প্রকল্পের অবস্থান এবং সমিতির নাম জানতে চাইলে তিনি উত্তর দিতে পারেননি। বলেন স্থানীয় এক নেতা নুরুল আলম তাকে আবেদন দিতে বলেছেন। তিনি আর বেশি কিছু জানেন না।

    পরবর্তীতে নুরুল আলম প্রতিবেদককে ফোন করে জানান, নিশি মনি চাকমা পড়ালেখা জানেন না তাই কিছু বলতে পারেনি। তিনি সাধারণ সম্পাদক হয়ে সবকিছু দেখভাল করছেন। সমিতির নামে সমবায় শব্দ থাকলেও বাস্তবে সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধন নেই বলে স্বীকার করেন তিনি।

    এ ছাড়া অনেক প্রকল্পের বিষয়ে জানতে তালিকা দেয়া মুঠোফোন নাম্বারে কল দেয়া হলেও নাম্বার বন্ধ পাওয়া গেছে। অনেকে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সংযোগ কেটে দিয়েছেন।

    অপরদিকে তালিকার ৫৬ নাম্বারে দেখা যায়, ১নং লক্ষ্মীছড়ি ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বার মেরিনা চাকমার নামে ১০টি প্রকল্পে প্রতিটি সাড়ে ৭টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তালিকার ৫৭ নাম্বারে একই ইউনিয়রে সংরক্ষিত আসনের মহিলা মেম্বার কনিকা চৌধুরীর নামেও একই পরিমাণ বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রকল্পগুলোর নাম দেখলেই মনে হবে ভুয়া। পৃথক ২টি বরাদ্দ কপিতে ২৯টি প্রকল্প নেয়া হলেও একটি প্রকল্প এখানকার বসবাসরত বাঙ্গাালিদের নাম নেই। যদিও ৩ভাগের একভাগেরও বেশি বাঙ্গালি এখানে বসবাস করে। এছাড়াও মারমাদের বড় একটি অংশ এ বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ২৯টি প্রকল্পর মধ্যে মাত্র ১৩৫ নাম্বারে বিনাইজুরি এলাকার সানুবাই মারমা ৩০হাজার টাকা ও তালিকার ১৬৪ নাম্বারে জুর্গাছড়ির মিঞাপ্রæ মারমার নামে ৩০হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। তালিকায় আর কোথাও মারমার নাম পাওয়া যায় নি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অংগপ্রæ মারমা বলেন, বরাদ্দে চরম বৈষম্য করা হয়েছে। বাঙ্গালিদের পাশাপাশি মারমাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। ল²ীছড়ি উপজেলা উল্লেখ্যযোগ্য বিশাল জনগোষ্টি রয়েছে মারমা। তাদের বাদ দিয়ে এমন একটি বরাদ্দ তালিকা মেনে য়ো যায় না। এই প্রকল্প বাতিলের দাবি জানান তিনি।

    লক্ষ্মীছড়ি গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মো. সামশুল ইসলাম বলেন, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ দেখে বাঙ্গালিরা হতাশ। লক্ষ্মীছড়িতে জনসংখ্যার বড় একটি অংশ বাঙ্গালি কিন্তু কোনো বরাদ্দ রাখা হয় নি। যা অত্যন্ত দু:খজনক। এই তালিকায় শুধু বাঙ্গালি নয় এখানকার মারমা ও ত্রিপুরাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা এই বরাদ্দ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। এ বরাদ্দ তালিকা বাতিল করা না হলে সাধারণ মানুষকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি।

    পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে থেকে আপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবেলায় অর্থ বরাদ্দ শিরোনামে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর গত ২৬ শে মার্চ থেকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকে পোষ্ট করে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

    খুকু ত্রিপুরা নামে একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, ত্রিপুরা মারমা অনেক খেয়েছে আর না, এই উক্তিটির বাস্তবায়নের প্রথম ধাপ তাহলে শুরু হলো’’ পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা দায়িত্ব পাওয়ার পর এক অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।

    বিনোদন ত্রিপুরা নামে এক উন্নয়ন কর্মী লিখেন, কোন ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এই তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে জাতির নিকট উন্মুক্ত করুন পার্বত্য উপদেষ্টা মহোদয়।

    আরেকজন লিখেন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নে ২৪ এর জুলাই আন্দোলনের প্রতি চরম অসম্মান দেখিয়েছেন পার্বত্য উপদেষ্টা। নিজ জেলা খাগড়াছড়িতে ৩ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, রাঙামাটিতে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা ও বান্দরবানে ৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। খাগড়াছড়িতে পার্বত্য উপদেষ্টার বাড়ি। আত্মীয় স্বজনে ভরা। তাই বিঝু উদযাপনে মনখোলে বরাদ্দ দিয়েছেন। এখানে কি অন্য দুই জেলার সাথে বৈষম্য করা হয়নি?

    আবুল কাশেম নামে এক ব্যক্তি লিখেন, খাদ্যশস্যের তালিকায় ৫৮জনের মধ্য মাত্র ৫জন বাঙালি, আর বাকী সবই একটি সম্প্রদায়ের। অপরদিকে, অর্থ বরাদ্দের তালিকায় রয়েছে স্বজনপ্রীতি, অনৈতিকভাবে প্রকল্প গ্রহণ এবং বৈষম্যমূলক। এভাবে চলতে থাকলে জনমনের আস্থা অর্জন করে নেবে পরিকল্পনাকারীরা।

    পার্বত্য চট্টগ্রাম সম-অধিকার আন্দোলনের খাগড়াছড়ি শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আসাদ উল্লাহ জানান, পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যায় পাহাড়ি-বাঙালি উভয় সম্প্রদায়কে সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু মন্ত্রণালয় সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সার্বিক উন্নয়ন, চিকিৎসা ও আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে যে বরাদ্দ দিয়েছে তাতে আমরা দেখলাম পাহাড়ীদের মধ্যে চাকমা সম্প্রদায় বেশী বরাদ্দ পেয়েছে। ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলে বাঙালী মাত্র ৩৮টি প্রকল্প পেয়েছে। পার্বত্য উপদেষ্টার অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম নিয়ে পাহাড়ে বহুবার আন্দোলন হয়েছে। এ বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমরা আবারও আন্দোলনে নামবো।

    মনগড়া, বৈষম্যমূলক ও ভুয়া প্রকল্পের বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে একে একে কল করা হয় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার একান্ত সচিব, সচিব ও উপসচিবদের নাম্বারে। উপদেষ্টার একান্ত সচিব খন্দকার মুশফিকুর রহমানের মুঠোফোনে কল রিসিভি করে এ বিষয়ে সচিবের সঙ্গে কথা বলতে বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। সচিবের দপ্তরের ল্যান্ড ফোনে কল করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে জানানো হয়। পরবর্তীতে কল দেয়া হলে আর রিসিভ হয়নি। বরাদ্দ স্বাক্ষরকারী মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়-১ শাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ নাহিদ ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সংযোগ কেটে দেন।

    পার্বত্য মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ আসলেও মূলত আবেদন গ্রহণ ও বাছাই কাজে বড় ভূমিকা পালন করে পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো। এ ক্ষেত্রে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অনেকে মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ ব্যক্তিদের মন রক্ষায় নীরব ভূমিকা পালন করেছেন। অভিযোগ উঠেছে জেলা পরিষদ সদস্য ও উপদেষ্টার জেঠাত ভাই বঙ্গমিত্র চাকমা এ সব বরাদ্দে বড় প্রভাব বিস্তার করেছে। এ বিষয়ে জানতে বঙ্গমিত্রের মুঠোফোনে কল ও হোয়াটস অ্যাপে খুদে বার্তা দেয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।

  • নাইক্ষ‍্যংছড়ির পাহাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্র, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

    নাইক্ষ‍্যংছড়ির পাহাড়ি এলাকা থেকে অস্ত্র, অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার

    পাহাড়ের আলো: ডিএমপি কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিট কর্তৃক দেশীয় অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির বিপুল সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।

    ১৫ মে বুধবার বিকেল ডিএমপি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (ডিসিটিই) কর্তৃক গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবির অধীনস্থ ছাগলখাইয়ার পশ্চিমে ‌নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ৪ নং দোছড়ি ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের ছাগলখাইয়া মোঃ হাকিম আলীর বাড়ির পূর্ব পাশে মনিরুলের পাহাড় নামক স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মাটির নিচ থেকে দেশীয় অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরীর সরঞ্জাম উদ্ধার হওয়া খবর পাওয়া গেছে।উল্লেখ্য উক্ত অভিযান পরিচালনা করেন কাউন্টার টেরিরিজম ডিএমপির শেখ ইমরান হোসেন বিপিএম, পিপিএম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এর নেতৃত্ব অভিযান পরিচালনা করা হয়।

    উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ও সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে ৬× বন্দুক (দেশীয়)১×দেশী পিস্তল( LG )১× গাদা বন্দুক, ১×দেশীয় ধারালো অস্ত্র,১৩ রাউন্ড×কার্তুজ ৭.৬২, ১১ রাউন্ড×শট গানের গুলি, ১০× শর্ট গানের গুলির খোসা । ২ ×বাইনোকুলার ।১× গ্যাস মাস্ক,১×চার্জার লাইট,১× ব্যাটারি,২× ওয়াকি টকি,চার্জার২ টি,৪ লিটার×এসিড (আনুঃ)।

    ২০ গজ×ইলেক্ট্রিক তার,১×রাউটার,১× তার যুক্তএন্ট্রেনা,১ ×হাতুড়, ১×আরি,১× হেকস ব্লেন্ড,১×বাল্ব,৪×✓হোল্ডার,২প্লষ্টিকের ড্রাম,১×তাবু ১, ২ বস্তা×প্লাস্টিক।

    উদ্ধারকৃত মালামাল ডিএমপি কাউন্টার টেরিরিজম ইউনিটের হেফাজতে রয়েছে বলে জানা গেছে।ধারণা করা হচ্ছে পাহাড়ি কোন দুষ্কৃতিকারীরা বড় ধরনের কোন নাশকতা ঘটানোর জন্য উদ্ধার হওয়া মালামাল গুলো গোপনে মজুদ করছিল।

  • কেএনএফ দমনে যৌথ অভিযান চলমান থাকবে -বিজিবি মহাপরিচালক

    কেএনএফ দমনে যৌথ অভিযান চলমান থাকবে -বিজিবি মহাপরিচালক

    পাহাড়ের আলো: কেএনএফ সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম যতদিন থাকবে যৌথবাহিনীর অভিযান ততদিন চলমান থাকবে। বিজিবি মহাপরিচালকের রুমা-থানচি সীমান্ত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদেরকে সাথে এ কথা বলেছেন বিজিবি মহাপরিচালক।

    ১৩মে সোমবার বিকেল ৪টায় রুমা ব্যাটালিয়ন (৯বিজিবি) সদরে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের থানচি ও রুমা উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন বর্তমানে সেনাবাহিনীর আওতাধীন বিভিন্ন বাহিনী মিলে যৌথ বাহিনী হিসেবে সরকারের আদেশে কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনী অভিযান চলছে। যৌথ অভিযান চলছে তাই সরেজমিনে দেখতে এসেছি। থানচি বলিপাড়া ৩৮ বিজিবি ও রুমা ৯ ব্যাটালিয়ান বিজিবি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহন করছে। তাদেরকে উৎসাহ, পরামর্শ প্রদান করার জন্য তিনি এসেছেন বলে জানান। বলি পাড়ায় একটি নতুন বেইস ক্যাম্প করা হয়েছে এবং বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় অপারেশন এবং সীমান্তের ওপারে যাহাতে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য বিজিবির সকল সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানান।

    একটি স্বাধীন রাস্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যাংক ডাকাতির মতো দুঃসাহসিক সন্ত্রাসী কার্যকলাপ দেখিয়ে কেউ পার পাবেনা, অত্রএলাকার সাধারণ বম জনগোষ্ঠীরাও কেএনএফের সন্ত্রাসী ঘটনা সমর্থন করেনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিরীহ বম সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচারের অপপ্রচারের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানান তিনি। ।

    মতবিনিময়কালে বিজিবি মহাপরিচালক সকলকে অপারেশনাল, প্রশিক্ষণ ও প্রশাসনিক বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। অতঃপর বিজিবি মহাপরিচালক বলিপাড়া ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ স্পটহাইট টিওবি, থানচি বিওপি এবং থানচি বাজার পোস্ট পরিদর্শন করেন।

    পরবর্তীতে বিজিবির মহাপরিচালক রুমা ব্যাটালিয়ন (৯ বিজিবি) এর ব্যাটালিয়ন সদর এবং অধীনস্থ দোপানিছড়া বিওপি পরিদর্শন করেন এবং সকল পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেন।

    এসময় বান্দরবান বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল সোহেল আহমেদ, কক্সবাজার রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম এবং বান্দরবান ব্রিগেড কমান্ডার মেহেদি হাসান, রুমা ৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেনান্ট কর্ণেল হাসিবুল হকসহ বিজিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

    গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি, ব্যাংক ব্যবস্থাপক অপহরণ, টাকা লুট ও পুলিশ-আনসারের ১৪টি অস্ত্র ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ব্যাংক ব্যবস্থাপক উদ্ধার হলেও লুট হওয়া অস্ত্র ও টাকা উদ্ধার করা যায়নি। সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ এ সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটিয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার, অস্ত্র ও টাকা উদ্ধারের অভিযানে অংশ নিচ্ছেন সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। অভিযান সমন্বয় করছে সেনাবাহিনী।

  • পরিবহন ধর্মঘটে অচল বান্দরবান: যাত্রীরা বিপাকে

    পরিবহন ধর্মঘটে অচল বান্দরবান: যাত্রীরা বিপাকে

    ডেস্ক রিপোর্ট: পরিবহন ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে বান্দরবান জেলা শহর। ২৮ এপ্রিল সকাল থেকে বান্দরবান কেরানিরহাট চট্টগ্রাম, বান্দরবান – কক্সবাজার সহ বান্দরবান- রাঙ্গামাটি সড়কে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সাধারণ যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। হালকা যানবাহন চলাচল করায় দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে তারা গন্তব্য যাচ্ছেন। সড়কে যানবাহনের সংকট রয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী যানবাহন না থাকায় যাত্রীরা মোটরসাইকেল ট্যাক্সি সহ হালকা যানবাহন দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে পরিবহন শ্রমিকদের উপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে সকাল থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামে এই পরিবহন ধর্মঘট চলছে। এর অংশ হিসেবে বান্দরবানের সাথে সারাদেশের দূরপাল্লার সব ধরনের যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভোরে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কয়েকটি বাস আসলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বান্দরবান শহর থেকে কোন যাত্রীবাহী বাস ছেড়ে যায়নি। বাস স্টেশনে এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পরিবহন শ্রমিক নেতা ঝন্টু দাশ সাংবাদিকদের জানান, ঢাকায় পরিবহন শ্রমিকদের উপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে পরিবহন শ্রমিক সংগঠনগুলো এই ধর্মঘটে ডাক দিয়েছে।

  • বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সাথে সন্ত্রাসীদের বন্দুক যুদ্ধে নিহত ২, আটক ২,অস্ত্র উদ্ধার

    বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সাথে সন্ত্রাসীদের বন্দুক যুদ্ধে নিহত ২, আটক ২,অস্ত্র উদ্ধার

    ডেস্ক রিপোর্ট: বান্দরবানের থানচি সীমান্তবর্তী বাকলাই সেনা বাহিনীর সাথে স্থানীয় কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ব্যাপক গোলা গুলির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ২জন কেএনএফ সন্ত্রাসীর গুলিবৃদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় ২ সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার পর এলাকা তল্লাশী চালিয়ে অস্ত্র ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী।

    জানা যায়, শনিবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থানচি সীমান্তবর্তী বাকলাই এলাকায় সেনাবাহিনীর সাথে স্থানীয় কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ব্যাপক গোলা গুলির ঘটনা ঘটেছে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে ২ কেএনএফ সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়।

    ২৮ এপ্রিল রবিবার সকালে বাকলাই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা পাহাড়ে দুই কেএনএফ সদস্যের গুলিবৃদ্ধ লাশ দেখতে পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে খবর দেয়। সংবাদ পেয়ে থানছি থানা পুলিশ কেএনএফ এর পোষাক পরিহিত গুলিবৃদ্ধ দুই জনের লাশ উদ্ধার করে।

    ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে থানচি থানা অফিসার ইনচার্জ মো.জসিম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে দুটি লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়েছি। পোশাক পরনের বিবরণ শুনে কেএনএফ সদস্য বলে ধারনা করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করতে আমরা ঘটনাস্থে আছি। জায়গাটি দূর্গম হওয়ায় পায়ে হেটে আসা যাওয়া করতে কিছুটা সময় লাগছে।

    এর আগে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় রুমা ও থানচিতে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের ধরতে পরিচালিত হচ্ছে সাঁড়াশি যৌথ অভিযান। এ পর্যন্ত যৌথ অভিযানের কেএনএফ এর ৭৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও ২২ এপ্রিল রুমার উপজেলার মুনলাই পাড়া এলাকায় সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয় লালরেন রোয়াত বম নামে কেএনএফ সদস্য।

  • বান্দরবানে কেএনএফ’র সশস্ত্র সদস্য নিহত, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

    বান্দরবানে কেএনএফ’র সশস্ত্র সদস্য নিহত, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার

    পাহাড়ের আলো ডেস্ক: সন্ত্রাস বিরোধী চলমান অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফের সশস্ত্র শাখা ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির’ (কেএনএফ) এক সদস্য নিহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে রুমা উপজেলার মুনলাই পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর(আইএসপিআর)। অভিযানের সময় ওই এলাকা থেকে অস্ত্র গুলি ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। নিহত কেএনএফ সদস্যের নাম জানা যায়নি। তার লাশ উদ্ধার করে রুমা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়েছে।

    এ ঘটনার পর ওই এলাকায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিরাপত্তা বাহিনী সূত্র ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন আজ সকাল থেকে মুনলাই পাড়া সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি এলাকায় যৌথবাহিনী সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে। দুপুরে অভিযানের সময় সংঘর্ষে মুনলাই পাড়া এলাকায় কেএনএফ’র এক সশস্ত্র সদস্য নিহত হয়। এ সময় কেএনএফ’র বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পরে ওই এলাকা তল্লাশি চালিয়ে লাশ, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। ওই এলাকায় এখন অভিযান চলছে।

    এদিকে এ পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী চলা অভিযানে কেএনএফ ও তাদের সহযোগী ৭২ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। চলতি মাসের দুই ও তিন তারিখ কেএনএফ’র সশস্ত্র সদস্যরা রুমা ও থানচি উপজেলায় কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হানা দিয়ে অস্ত্র গুলি ও টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পর সন্ত্রাসী তৎপরতা দমন ও কেএনএফ সদস্যদের আটক করতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করেছে।

  • কোনো অস্ত্রধারীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে থাকতে দেব না-বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

    কোনো অস্ত্রধারীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে থাকতে দেব না-বান্দরবানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

    পাহাড়ের আলো: বান্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) হামলা, ব্যাংক লুট, নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার সদস্যের অস্ত্র লুট এবং ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় পুরো বান্দরবান জেলা জুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

    র‍্যাবের মধ্যস্থতায় অপহৃত সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় কেএনএফের বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরু হয়েছে। চলমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে শনিবার (৬ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে বান্দরবান এসেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংক, মসজিদ ও উপজেলা পরিষদ পরিদর্শন করেছেন।

    রুমা উপজেলার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, শান্তিপ্রিয় এলাকা, যেখানে শান্তির সুবাতাস সবসময় বইতো সেখানে আমরা এ ধরনের ঘটনা কামনা করি না। হামলায় কাদের সংশ্লিষ্টতা ছিল তাদের আমরা আইনের আওতায় আনব। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী তারা তাদের মতো করে কাজ করবে।

    তিনি বলেন, আমরা আর কোনো কিছুকে চ্যালেঞ্জ নিতে দেব না। এর উৎপত্তি, উৎস কোথায় খুঁজে বের করব। তাদের সকলকেই আইনের আওতায় আনব।

    রুমা উপজেলা পরিদর্শন শেষে দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বান্দরবান সার্কিট হাউসে পৌঁছান। সেখানে তিনি জেলা পুলিশের গার্ড অফ অনার গ্রহণ করেন। পরে বান্দরবান জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে জেলা প্রশাসনসহ সরকারি নিরাপত্তা সেক্টরের সকল বিভাগের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

    বৈঠকের পর সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটি সশস্ত্র সংগঠন তাদের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা মনে করি যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গিয়ে অপরাধ করেছে। কাজেই রাষ্ট্র চুপ থাকতে পারে না। আমরা এ জন্য যা যা করণীয় তা করব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আমরা পুলিশ, র‍্যাব, আনসার সদস্যের সংখ্যা বৃদ্ধি করব।আমরা সীমান্তে বিজিবি বৃদ্ধি করব।

    তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সামরিক বাহিনীর প্রধানকে নির্দেশনা দিয়েছেন সবাই মিলে যেন যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। তার আগে পুলিশ, র‍্যাব, আনসার ও বিজিবি দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যা যা প্রয়োজন আমরা তা করব।

    স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কোনো ধরনের অস্ত্রধারীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে থাকতে দেব না।

    আমরা অনেক ধৈর্যের সঙ্গে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তাদের সঙ্গে দুইবার আলোচনায় বসেছেন। তারা আলোচনায় না গিয়ে তাদের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য এ ধরনের কর্মকাণ্ড করেছে।

    তিনি আরও বলেন, যারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তারা যদি বিদেশেও আশ্রয় নেয়, আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাদেরকে দেশে ফেরত এনে বিচারের ব্যবস্থা করব।

    কেএনএফের সঙ্গে আর কোনো আলোচনা হবে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণের বাইরে না। এই এলাকার জনসাধারণ যদি মনে করে আলোচনা হওয়া উচিত, তাহলে আলোচনা হতেও পারে, এই সিদ্ধান্ত জনগণের। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কাজ চালিয়ে যাবে।

    এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, আনসার মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম আমিনুল হক, ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল হামিদুল হক, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, সুরক্ষা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মনিরুল ইসলাম, র‍্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বান্দরবান আসনের সংসদ সদস্য বীর বাহাদুর উশৈসিং, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, বান্দরবান রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মেহেদী হাসান, জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীনসহ সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

  • পাহাড়ি সশস্ত্র গ্রু‌পের গোলাগু‌লি‌: নিহত ৮

    পাহাড়ি সশস্ত্র গ্রু‌পের গোলাগু‌লি‌: নিহত ৮

    পাহাড়ের আলো : বান্দরবা‌নের রোয়াংছ‌ড়ির খামতাম পাড়ার কা‌ছে ২পাহাড়ী সশস্ত্র গ্রু‌পের গোলাগু‌লি‌তে ৮জন নিহত হ‌য়ে‌ছে। ৭এপ্রিল শুক্রবার সকা‌লের দি‌কে রোয়াংছ‌ড়ির খামতাম পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘ‌টে।

    এদের ম‌ধ্যে ৭জ‌নের নাম জানা গে‌ছে, তারা হল, ভান দু বম, সাং খুম, সান ফির থাং বম, বয় রেম বম, জাহিম বম, লাল লিয়ান ঙাক বম ও লাল ঠা জার বম।

    সূত্র জানায়, সকা‌লে গোলাগু‌লির শব্দ শোনা য‌ায়। প‌রে‌ সেখা‌নে গি‌য়ে ৮জ‌নের গু‌লি‌বিদ্ধ মৃত‌দেহ দেখ‌তে পে‌য়ে পু‌লিশ‌কে খবর দেয়। প‌রে পু‌লিশ ঘটনাস্থ‌লে গি‌য়ে লাশ উদ্ধার ক‌রে।

    বান্দরবান রোয়াংছ‌ড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: আবদুল মান্নান সাংবাদিকদের জানান, রে‌ায়াংছ‌ড়ি খামতাম পাড়া এলাকা থে‌কে সেনা পোশাক প‌রি‌হিত ৮জ‌নের গু‌লি‌বিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হ‌য়ে‌ছে। তা‌দের বান্দরবান সদর হাসপাতাল ম‌র্গে আনা হ‌চ্ছে। ত‌বে কে বা কারা তা‌দের মে‌রে‌ছে তা জানা যায়‌নি। মৃত‌দেহ কোন গ্রু‌পের তাও বলা যা‌চ্ছেনা।