• October 8, 2024

খাগড়াছড়ি মাছ বাজারে পঁচা মাছ বিক্রি; ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের উপর হামলা চেষ্টা

 খাগড়াছড়ি মাছ বাজারে পঁচা মাছ বিক্রি; ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের উপর হামলা চেষ্টা

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: অস্বাভাবিকভাবে মূল্য বৃদ্ধি, মূল্য তালিকা না থাকা এবং পঁচা মাছ বিক্রির অভিযোগে খাগড়াছড়ি মাছ বাজারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় খাগড়াছড়ি মাছ বাজারে অভিযান চালিয়ে একটি মুরগীর দোকান ও ৪টি মাছের দোকানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এর ৩৮, ৪০ ও ৫৩ ধারায় এ অভিযান চালানো হয়। এসময় ১ হাজার টাকা করে ৫টি দোকানে মোট ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঞ্জুরুল আলম এ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস (সিআরবি)র সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুর রউফ, মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি, পুলিশ সদস্যসহ সঙ্গীয় ফোর্স উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান চলাকালীন পঁচা মাছ বিক্রির অভিযোগ করেন এক ভোক্তা। তাৎক্ষণিক এর সত্যতা পেলে মাছ ব্যবসায়ীকে ১ হাজার টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মাছের আড়ৎদার গিয়াস উদ্দিন নামে এক ব্যাক্তি। এসময় তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের দিকে তেড়ে আসেন এবং উশৃংখল আচরণ করেন। গিয়াস উদ্দিন বলেন “কি সমস্যা? মন চাইলেই জরিমানা করে দিবেন? ধর ধর, জরিমানার টাকা নো দিবি” ইত্যাদি বলে মাছ ব্যবসায়ীদের উস্কে দেন। এসময় মাছ ব্যবসায়ীরা ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশের বিরুদ্ধে উশৃংখল কথা বলে গালাগাল শুরু করেন। এক সময় মাছ কাটছে এমন এক লোক মাছ ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে দা উঁচিয়ে বলেন “তোদের খবর আছে, পুলিশ রোহিঙ্গা, ধর ধর, কুপা, কুপা।’ পরে অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ বাঁশি মারলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। পুরো অভিযানে মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে অভিযানে ছিলেন।

মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রাসেল বলেন, ‘এটা একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। গিয়াস উদ্দিন কাজটা ঠিক করে নাই। তার পক্ষ থেকে এবং যারা অন্যায় করেছে তাদের পক্ষ থেকে আমি ক্ষমা চাচ্ছি। আগামীতে তারা আর বেয়াদবি করবেনা।’

ভোক্তা অধিকার সংগঠন সিআরবি’র সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুর রউফ বলেন, ‘খাগড়াছড়ি মাছ বাজারে অস্বাভাবিকভাবে মাছের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ১৮০ টাকার মাছ ২৩০-২৫০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। মাছের স্তুপগুলোর ভাজে ভাজে পুরনো পঁচা মাছও ছিল। তাদের কোন ক্রয় রশিদও নেই। এক কথায় তাদের ইচ্ছেমতোই মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। এতে ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করলে মাছ ব্যবসায়ীরা ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।’

অভিযান পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘মাছ বাজারে অস্বাভাবিকভাবে মূল্য বৃদ্ধি, মূল্য বিক্রি তালিকা না থাকা এবং পঁচা মাছ বিক্রির অভিযোগে ৫টি দোকানে ভোক্তা অধিকার আইনে জরিমানা করা হয়েছে। পঁচা অভিযোগটি সেখানে একজন ভোক্তার কাছ থেকে পাই এবং তাৎক্ষণিক পঁচা বিক্রির প্রমাণ পাই। তখন জরিমানা করলে গিয়াস উদ্দিন নামে একজন মাছের আড়ৎদার উশৃংখল কথা বলেন। তাদের এমন আচরণে আমরা বিচলিত নই। এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম বাড়িয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে চায়। আমরা তাদের এ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাব। ভেজাল প্রতিরোধে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post