• February 19, 2025

মানিকছড়ি’র বাজার এলাকা ময়লা-আবর্জনা: দূর্গন্ধে চলাফেরা দায়

আবদুল মান্নান: খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলা সদরস্থ রাজবাজার ও তিনটহরী বাজার উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার। এ বাজার দু’টির আশে-পাশে প্রচুর ঘনবসতি, স্কুল-মাদরাসা, ব্যাংক-বীমা ও বেসরকারী অনেক অফিস থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতার পাশাপাশি জনসমাগম প্রতিনিয়ন লেগেই থাকে। কিন্তু এসব বাজার বা বাসাবাড়ির ময়লা-আর্বজনার ফেলার নিদিষ্ট কোন জায়গা বা ভাগার নেই। ফলে ড্রেন,খাল-বিল,নালা-নর্দমায় বা যত্র-তত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে র্দূগন্ধে পরিবেশ দূষিত হচ্ছেপ্রতিনিয়ত। এমন জনগুরুত্বপূর্ণ লোকালয়ে নিয়মিত চলাফেরা ও বসবাস করা লোকজনের জীবন এখন নাভিশ্বাস! এছাড়া দু’টি বাজারেই দেড়/দুই হাজার ব্যবসায়ীর জন্য মাত্র ছোট-বড় তিন’টি গণশৌচাগার! খালি জায়গা না থাকার অজুহাতে স্থায়ী ডাস্টবিন তৈরি ও পয়ঃনিস্কাশন সম্প্রসারণ করা যচ্ছেনা।

সরজমিন ঘুরে ভোক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি জেলার প্রসিদ্ধ জনপদ মানিকছড়ি। মংরাজার ইতিহাস-ঐতিহ্যে ঘেরা এ জনপদে রাজবাজার ও তিনটহরী রাণী বাজার উপজেলার প্রসিদ্ধ বেচা-কেনার স্থান। এছাড়া এ দু’টি বাজারের চারিপাশে শতশত আবাসিক স্থাপনার পাশাপাশি লোকালয়ে গড়ে উঠেছে বেসরকারী স্কুল-মাদরাসা, এনজিও, ব্যাংক-বীমা প্রতিষ্ঠান। উপজেলার সবচেয়ে ঘনবসতি বলতে বাজার এলাকাই ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় এ দু’টি বাজারে নিদিষ্ট ডাস্টবিন বা ময়লার ভাগার নেই। ফলে যে যার মতো করে যেখানে খুশি সেখানে ময়লা ফেলচ্ছে! যদিও সম্প্রতি মানিকছড়ি সদর ইউপি’র উদ্যোগে এলজিএসপি বরাদ্দ থেকে স্পটে স্পটে শুকনা ময়লা কাগজপত্র রাখার জন্য ডাস্টবিন বসানো হয়েছে। যেগুলো ২/৪ দিনেই ভরে যায়। এর পর এ ডাস্টবিনের ময়লাগুলো জনসম্মুখে র্দূগন্ধ ছড়ায়। কারণ এ ডাস্টবিন থেকে ময়লাযুক্ত কাগজপত্র গুলো সরিয়ে নেওয়া কোন ব্যবস্থা নেই। বাজার ঝাড়–দার বাজার অংশটুকুর ময়লা নিলেও বাজারের বাহিরে বসানো ডাস্টবিনের ময়লা থেকে যায়। অনেকে আবার ময়লা ডাস্টবিনে রেখেই তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় অনেক ডাস্টবিনগুলো ইতোমধ্যে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

রাজবাজারের রাজপাড়ার অনেক স্থানে এখনো খোলা পায়খানা রয়েছে। এসব পয়খানার ময়লা অনায়াসে ড্রেনে গড়িয়ে খালে পড়ছে! আর ব্যবসায়ী ওই খালেই অবাধে গোসল, ধোঁয়া-মোছার কাজ করছেন। উত্তর মুসলিমপাড়া(কবরস্থান সংলগ্ন) মাতৃছায়া স্কুল ঘেঁষে বড় ড্রেনটি ব্যবহার অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। পুরো ড্রেনে ময়লার স্তুপ, পানি নামার জায়গা নেই। যার কারণে ড্রেনের ময়লাগুলো পচে চারিদিকে র্দুগন্ধ ছড়াচ্ছে। আর বাজারের উত্তরপাশ্বে রাজার বিশাল দিঘী’র দু’পাশে অবাধে ময়লা ফেলার কারণে দিন দিন এটি ছোট হয়ে আসছে!

এছাড়া এ বাজারে দেড় হাজারের অধিক দোকান-পাট/ ব্যাংক-বীমাকে ঘিরে প্রতিদিন গড়ে বাজারে দুই/তিন হাজার লোকের সমাগম হওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এত বড় বাজারে পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা অপ্রতুল। মাত্র দু’কক্ষে একটি পুরাতন গণশৌাচাগার আর বাজার জামে মসজিদ চত্বরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অর্থায়নে একটি গণশৌচাগার নির্মাণ করা হলেও ওটি মূলত বাজারের পশ্চিমাংশে হওয়ায় গণব্যবহার হচ্ছেনা। ফলে দূর্ভোগ থেকেই গেছে!

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাজার সেক্রেটারী মো. নুর ইসলাম বলেন, বাজারে মূলত খাস জায়গা নেই। যার কারণে প্রয়োজন থাকলেও পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা বাড়ানো ও স্থায়ী ডাস্টবিন বানানো যাচ্ছেনা। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইনশৃংখলা সভায় ও একাধিকবার আলোচনা। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বাজার কমিটিকে খাস জায়গার সন্ধান দিতে বলা হয়েছে। খাস জায়গার খোঁজা হচ্ছে।

অপরদিকে তিনটহরী রাণী বাজারে সমস্যার কমতি নেই। পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা, ডাস্টবিন নেই। বাজারের উত্তর অংশে একটি ছোট শৌচারগার রয়েছে। যা অপ্রতুল। দুইশতাধিক ব্যবসায়ীসহ প্রতিদিন সকালে এ বাজারে হাজারো লোকসমাগম ঘটে। কিন্তু পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা অপ্রতুল হওয়ায় দুর্ভোগ লাঘব হচ্ছে না। নির্দিষ্ট ডাস্টবিন না থাকায় বাজারের পশ্চিম পাশে চা ও ওষধের দোকান ঘেঁষে খোলা জায়গায় তৈরি হয়েছে ময়লার ভাগার। ফলে অনায়াসে র্দূগন্ধে বাজার, আবাসিক এলাকা ও শিক্ষাপ্রতিষ্টানের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাজার সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, জায়গা সংকটের কারণেই ব্যবসায়ী ও লোকজনের সুবিধায় পয়ঃনিস্কাশন ও ময়লা-আর্বজনার নিদিষ্ট জায়গা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে সকল ব্যবসায়ীদেরকে ঐক্যমত করার চেষ্টা করছি।

পাহাড়ের আলো

https://pahareralo.com

সর্বাধিক জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল। সর্বশেষ সংবাদ সবার আগে জানতে চোখ রাখুন পাহাড়ের আলোতে।

Related post